Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হূমায়ূন আহমেদের জন্মদিন পালিত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন পালিত। গতকাল মঙ্গলবার ছিল তার ৭০তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে ঢাকা, গাজীপুর ও তার জন্মস্থান নেত্রকোনাসহ সারা দেশে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, দোয়া মাহফিল, কোরআনখানি ও মেলাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী এলাকায় নুহাশ পল্লীতে গত সোমবার রাত ১২টা ১ মিনিটে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও গতকাল সকালে কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, পায়রা উড়িয়ে ও কেক কেটে পালন করা হয়েছে কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন। প্রথমে রাত ১২টা ১ মিনিটে পুরো নুহাশ পল্লীতে ২ হাজার ৫০০ মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। সকালে মরহুম হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, তাদের দুই ছেলে নিশাদ, নিনিত, স্বজন এবং ভক্তদের নিয়ে নুহাশ পল্লীতে কেক কাটেন। এর আগে হুমায়ূন আহমেদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, কবর জিয়ারত ও রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন।
কবর জিয়ারত শেষে হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন সাংবাদিকদের বলেন, হুমায়ূন আহমেদ আছেন এ গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে। তার আলোয় গাজীপুর আলোকিত হয়ে আছে। এক অর্থে বাংলাদেশ আলোকিত হয়ে আছে।
এদিকে বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তী কথাসাহিত্যিক, বাংলা সিনেমা ও টেলিভিশন নাটকের নন্দিত নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ৭০তম জন্মদিন উপলক্ষে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সপ্তমবারের মতো হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে ‘হুমায়ূন মেলা’। সকাল ১১টা ০৫ মিনিটে হিমুপ্রেমিরা হলুদ পাঞ্জাবী গায়ে দিয়ে মেলায় উপস্থিত হয়ে হলুদ বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চ্যানেল আই’র পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, পরিচালক জহির উদ্দিন মাহমুদ মামুন ও মুকিত মজুমদার বাবু, দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব রামেন্দ্র মজুমদার, সৈয়দ হাসান ইমামসহ বিভিন্ন অঙ্গনের হুমায়ূন ভক্ত ও বিশিষ্টজনেরা।
উন্মুক্ত মঞ্চ থেকে পরিবেশিত হয় হুমায়ুন আহমেদের লেখা গান। গান পরিবেশন করেন ফকীর আলমগীর, রফিকুল আলম, আকরামুল হক, চন্দনা মজুমদার, কিরণ চন্দ্র রায়, আগুন, সেলিম চৌধুরী, সেরাকণ্ঠ, ক্ষুদে গানরাজ ও বাংলার গানের শিল্পীরা।
গান ছাড়াও অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় নৃত্য, ছিল হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের স্টলসহ অন্যান্য সামগ্রীর স্টল এবং শিশুদের ছবি আঁকার পর্ব। সাফি ও অপু মাহফুজের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছেন আমীরুল ইসলাম ও শহিদুল আলম সাচ্চু।
হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে স্মৃতিকথা বলেন স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, চলচ্চিত্র প্রযোজক একেএম জাহাঙ্গীর খান, প্রফেসর নূরজাহান সরকারসহ অনেকে। অনুষ্ঠানে ‘হিমু’ ও ‘রূপা’রা কেক কেটে হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উদযাপন করেন।
এছাড়াও হুমায়ূন আহমেদের নিজ জেলা নেত্রকোনায় শোভাযাত্রা, আলোচনা, কেক কাটা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে গতকাল তাঁর জন্মদিন পালিত হয়েছে।
হিমু পাঠক আড্ডা’র উদ্যোগে সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা শহরের সাতপাই চক্ষু হাসপাতালের সামনে থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। হলুদ পাঞ্জাবী আর গেঞ্জি পরে শতাধিক হিমু ভক্ত শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক যতীন সরকার। পরে শোভাযাত্রাটি জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন নেত্রকোনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফখরুজ্জামান জুয়েল, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামলেন্দু পাল, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাহেজা বেগম, শিকড় উন্নয়ন কর্মসূচির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান খোকন, হিমু পাঠক আড্ডা’র সভাপতি আলপনা বেগম ও সাইফুল্লাহ এমরান প্রমুখ। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে হুমায়ূন আহমেদের প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠে প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কোরানখানিসহ নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন হুমায়ূন আহমেদের চাচা আলতাবুর রহমান, নজরুল ইসলাম, আব্দুল কাইয়ুম আকন্দ ও আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ। প্রসঙ্গত, হুমায়ূন আহমেদের পৈত্রিক বাড়ি কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। তার ডাক নাম ছিলো কাজল। বাবার রাখা তার প্রথম নাম শামসুর রহমান। পরে তিনি আর ছেলে নাম বদলে রাখেন হুমায়ূন আহমেদ। দূরারোগ্য ক্যান্সারে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই ইন্তেকাল করেন তিনি। এরপর গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে তাকে দাফন করা হয়। #



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ