পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্বঘোষিত ও চিহ্নিত কিছু নাস্তিক মুরতাদ ছাড়া (যাদের অনেকেই আবার হৃদয়ে ঈমান লালন করে বাইরে নাস্তিক ভাব দেখায়, দুনিয়ার কিছু হালুয়া রুটির আশায়) মোটাদাগে আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ইত্যাদি কেউই ইসলামবিরোধী শক্তি নয়। এসব দলেই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইসলামের নীতি আদর্শ ও সৌন্দর্যে বিশ্বাসী। এসব দলের লক্ষ্য ইসলাম কায়েম নয়। তবে এদেরকে ইসলামের পথে আনার দায়িত্ব অবশ্যই যোগ্য আলেম ও দাঈদের। যারা নিঃস্বার্থ দাওয়াতের কাজ করেন, তারা সকল নবী রাসুলের সুরে সুর মিলিয়ে বলে থাকেন, ‘মা আসআলু মিনকুম আজরান; ইন আজরিয়া ইল্লা আলাল্লাহ’, ‘ইন্নি লাকুম না-সিহুন আমীন’। অর্থাৎ হে আমাদের জাতি, তোমরা আল্লাহর ওপর ঈমান আনো। এ আহ্বানের বিনিময়ে আমরা কোনো কিছুই চাই না। আমরা হলাম তোমাদের বিশ্বস্ত শুভার্থী। -আল কোরআন। এদেশের পীর-আউলিয়া, উলামা-মাশায়েখ ও পরহেজগার দাঈগণ হাজার বছর ধরে জনগণকে ঈমানের ওপর রাখার মেহনত করেছেন। তারা সাধ্যমত রাষ্ট্র ও সরকারকেও নসীহত করেছেন। প্রতিটি নাগরিককে দীনের ওপর উঠানোর জন্য বলতে গেলে জীবন যৌবন সম্পদ ও খ্যাতি সবকিছু তিলে তিলে ক্ষয় করে গেছেন। মানুষের কাছে ক্ষমতা, অর্থ, সম্মান, সম্পদ ইত্যাদি কিছুই চাননি। বলেছেন, আমাদের যা দেওয়ার আল্লাহই দিবেন। হে জনগণ, আমরা নবী রাসুলের ওয়ারিস হিসাবে তোমাদের আস্থাভাজন বিশ্বস্ত হিতাকাঙ্খীর দল। এদেশের কোটি কোটি মানুষ এসব মনীষীর প্রীতিডোরে আবদ্ধ। মাঝেমধ্যে খাঁটি জিনিষেও ভেজাল ঢুকে যায়। জন্ম নেয় লোভী স্বার্থপর দালাল উলামায়ে ছু। সহজে কারও নিয়তের ওপর হামলা করা আল্লাহওয়ালাদের নিয়ম নয়। কারও সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে কুধারণা করাও গোনাহের কাজ। তাছাড়া ইসলাম গুটিকয়েক খারাপ ও নামধারী উলামা মাশায়েখ আর ভণ্ড পীরের জন্য চিরস্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থও হয় না। এসব মেঘের মত অন্ধকার হয়ে আসে, আবার সূর্যের তেজে হাওয়া হয়ে যায়।
বাংলাদেশের শতকরা ৯২% জনগণ মুসলিম। তারা দেশের রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে স্বাধীনতা সম্মান শান্তি ও উন্নয়ন যেমন দেখতে চায়, এর চেয়ে বেশি খেয়াল রাখে নিজেদের দীন ঈমান ও ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি। যারা ইসলামী রাজনীতি করেন, তাদের মধ্যে অনেক মত। এমনও আছে যে, একদল আরেক দলকে ‘ইসলামী’ বলতেও রাজী নয়। বহু দল এমন আছে, যারা নিজেকে ছাড়া অন্যদের আদর্শচ্যূত ও নীতিহীন বলে বিশ্বাস করে। পরস্পরে ব্যাপক গীবত শেকায়েত ও বিরূপ প্রোপাগাণ্ডা চালায়। ইসলামের ইতিহাসে দেখা গেছে, প্রকৃত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ছাড়া অন্য যে দলই নিজেকে হক দাবি করে বাকী সবাইকে কুফুরী, শিরকী ও নীতিহীন-আদর্শচ্যূত বলে তোহমত দিয়েছে। সময়ে দেখা গেছে, এরা নিজেরাই গোমরাহ মুলহিদ ও জিন্দিক হয়ে গেছে। অনেক শক্তি ও সামর্থ থাকা সত্তে¡ও তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এটি দুঃখজনক হলেও সাময়িক ও হালকা চালের একটি দৃশ্য। মূলত প্রকৃত ইসলামী দলগুলো একই উৎস থেকে আগত। বাংলা প্রবাদে আছে, ‘নানান বরণ গাভী রে ভাই, একই বরণ দুধ/জগত ভ্রমিয়া দেখি, একই মায়ের পুত’। ইসলামপন্থিদের গুটিকয় লোক নানা কারণে কনভেনশন ভেঙে এদিক সেদিক গেলেও তাদের মনের গভীরে থাকে দীনের জন্য কাজ করার জযবা। তাই বড়দের দেখেছি, ছোটখাট বা সাময়িক কিছু নিয়ে আপনদের গালমন্দ করেননি, দূরে সরিয়ে দেননি। ডেকেছেন, কথা বলেছেন, ইতিবাচক ফলাফল পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। কারণ, যত মত ও পথই হোক না কেন ইসলামী শক্তি দিনের শেষে একই ছাদের নীচে এসে আশ্রয় নেয়। যে ছাদটি প্রিয় নবী সা. তার উম্মতদের মাথার ওপর নির্মাণ করে দিয়ে গেছেন। তবে, রাজনীতির ঊর্দ্ধে এদেশের তাওহীদি জনতা বিশাল এক অদৃশ্য মহাঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ। ১৫ কোটি কালেমা পড়া মুসলমান, যে যে সাইনবোর্ড নিয়েই ইহজীবনে চলুক, ঈমান ইসলাম ও আল্লাহ রাসুলের সরল আহ্বানে তারা সবাই একই আবেগে বিনে সুতোয় বাঁধা একটি মালার মত। যদি কেউ কোনো কারণে দলছুট হয়, আসলে তারা মন থেকে হয় না। ভেতরগত চিরস্থায়ী সম্পর্কের ফলে প্রয়োজনে সীসা ঢালা প্রাচীরের মতো হয়ে যায়। পবিত্র কোরআনে যে কথাটি মহান আল্লাহ বলেছেন, তার মতো।
এখন নির্বাচনী মৌসুম চলছে। এবারই প্রথম বড় দুই জোট আর প্রধান দলগুলো তাদের পরিচয় নানা কারণে অস্পষ্ট বানিয়ে ফেলেছে। যা এদেশের মুসলমানের জন্য অনেক বড় অর্জন। হিমালয়ান উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইসলামিক স্কলার শাহ্ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী রহ. এর দর্শন ছিল ‘ফাক্কু কুল্লি নিজাম’ অর্থাৎ প্রচলিত সব রীতি ভেঙে নতুন করে গড়ে তোলা। আওয়ামীলীগ তার ইমেজ বদলাবার বহু চেষ্টা করেছে। বারবার বলেছে, ‘ইসলামবিরোধী কোনো আইন করা হবে না। ইসলামী শিক্ষা সর্বস্তরে বাধ্যতামূলক করা হবে। টঙ্গি ইজতেমার জায়গা বঙ্গবন্ধু দিয়ে গিয়েছিলেন, সামনে রেজিষ্ট্রি করে দেওয়া হবে। কাকরাইল মসজিদের জায়গা বরাদ্দ দিয়েছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন স্থাপন ও বায়তুল মোকাররম মসজিদের কাজ সম্পন্ন করেছেন। শেখ হাসিনা ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয় করেছেন। সারা দেশে নানাভাবে হাজার হাজার আলেমের কর্মসংস্থান করেছেন। কওমী সনদের স্বীকৃতি দিয়েছেন। হেফাজতে ইসলামের সাথে বৈরিতা কমিয়ে তাদের আস্থায় আনার চেষ্টা করেছেন। দেশব্যাপী নানা ইসলামী দল ও সংগঠনকে রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী বলয়ে জায়গা করে দেওয়ার বিশাল পরিকল্পনা নিয়েছেন।’ এভাবে বললে আরও বহু কথা পাওয়া যাবে। যা তার দল ও জোটকে একটি স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, ইসলামপন্থীদের সাথে লড়াই করার চেয়ে তাদের সাথে নমনীয় আচরণ ও বন্ধুত্ব রাজনীতির জন্য ভালো। এক্ষেত্রে আল্লাহকে খুশি করার বিষয়টি প্রাধান্য পাওয়ার যোগ্য। কেননা, ক্ষমতা ও জীবন চিরস্থায়ী নয়।
সবাইকেই একদিন চলে যেতে হবে। আল্লাহর দরবারে সকল কাজের হিসাব দিতে হবে। তাই, রাজনীতির বাইরেও নিজেদের পরকাল নিয়ে সবারই চিন্তা করা অবশ্য কর্তব্য। কেননা, আল্লাহর ক্ষমা, দয়া ও মাগফেরাত ছাড়া ছোট বড় কেউই আখেরাতে মুক্তি পাবে না। জান্নাতে যেতে পারবে না। একই কথা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ক্ষেত্রেও সমান সত্য। যেমনটি সত্য বড় ছোট সব দল ও জোটের ক্ষেত্রে।
উল্লেখ্য যে, দেশের নানা কর্ণার থেকে ইসলামী ব্যক্তিত্ব বাছাই করে আওয়ামীলীগ নেত্রী আসন দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তিনি শাইখুল হাদীস রহ. এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনী হিসাব নিকাশ বদলে যাওয়ায় তিনি কথা রাখতে পারেননি। ইসলামী দলের সাথে অনেকগুলো আসন দেওয়ার কথা নিজেই বলেছিলেন। এর মন্দ প্রভাব গত একযুগ ধরে আওয়ামীলীগের ওপর ছায়া বিস্তার করে আছে। এবারকার বহু আশা অঙ্গীকার তাকে আরও বেশি দায়বদ্ধ করে ফেলেছে। পট পরিবর্তনে এসবের ভুমিকা খুবই গভীর। পরিস্থিতি পাল্টে গেলে মানুষ যখন আশাহত হয়, তখন তারা তাদের ত্যাগ ও হারানো সম্মান ভুলতে পারে না। এসব বঞ্চিত মানুষ তখন লাভের চেয়ে ক্ষতির কারণ হয় বেশি। এখানে একটি কথা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, শত্রুরা যতই চেষ্টা করুক, বাংলাদেশে ইসলামকে পরাজিত করতে পারবে না। মুসলমানদের দীন থেকে বিচ্যূত করতে পারবে না। তাদের হাজারো চেষ্টা ব্যর্থ হবে, এদেশের সাধক নির্লোভ আল্লাহওয়ালা দুনিয়াবিমুখ তাকওয়াবান লাখো উলামা মাশায়েখের আদর্শিক জীবন সংগ্রামের ফলে। তাদের সহস্র ষড়যন্ত্র মাকড়সার জালের মতো ছিন্ন হয়ে যাবে, খোদাভীরু সরল সহজ ঈমানদার কোটি তাওহীদি জনতার ধর্মপ্রাণ জীবনবোধের কারণে। এদেশের সাড়ে ৪ লাখ মসজিদ ও নামাজঘর, লাখো মকতব মাদরাসা, হাজারো খানাকাহ দরবার যতদিন মানুষকে ইসলামী রঙে রঞ্জিত করতে থাকবে, ততদিন আরোপিত আর কিছু এদেশের মানুষের জীবনে স্থান করে নিতে পারবে না। ফেতনা আসবে, যাবে, কিন্তু খুঁটি গাড়তে পারবে না। ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী দল বিএনপি তার জন্মলগ্ন থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিশেষত অধিকাংশ আলেম উলামাকে আকৃষ্ট করতে পেরেছিল। যার অনেকটাতেই আওয়ামীলীগ এখন ভাগ বসাতে চাইছে। এমনকি বাম প্রগতিশীল নাস্তিক্যবাদী পারসেপশনওয়ালা নেতারাও বিএনপির সাথে ফ্রন্ট করে এখন নামাজ টুপি বিসমিল্লাহ জিয়ারত ইনশাআল্লাহ ইত্যাদি ইসলামী ঐতিহ্য ধারণ করছেন। সবই আমি পজিটিভ দৃষ্টিতে দেখতে চাই।
কিন্তু বিএনপি তার বিগত সময়ে আলেম উলামা ও ধর্মপ্রাণ মানুষের সমর্থন যে পরিমাণ পেয়েছে তার সামান্যও ফেরত দেয়নি। যেমন, বিএনপির মধ্যে গত ৩০/৪০ বছরে ধার্মিকদের ভোটের আনুপাতিক হারে ইসলামী ব্যক্তিত্ব, আলেম, পীর মাশায়েখ, এমপি মন্ত্রী উপদেষ্টা নেতা বা কর্মকর্তা আতসী কাঁচ দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। অপরদিকে জাতীয় পার্টিতে এ ধরনের লোক কিছু তুলনামূলক বেশি পাওয়া যাবে। সবচেয়ে বিষ্ময়ের ব্যাপার এই যে, অভাবনীয়ভাবে এ ধরনের কিছু লোক আওয়ামীলীগে পাওয়া যাবে। আওয়ামীলীগে বিগত শাসনামলে এমপি মন্ত্রী নেতা উপদেষ্টা ইফা ডিজি ইত্যাদি স্থানে আলেম উলামা বসানোর কিছু নজির এমন আছে যা বিএনপি দেখাতে পারেনি। ২০ দলীয় জোটেও ইসলামপন্থীরা বেশ বৈরিতা মোকাবেলা করে ছিলেন ও আছেন। কিছু লোক তো বেরিয়েই গিয়েছেন। এতে যতনা বাইরের প্ররোচনা ছিল, ভেতরের অবহেলাও তারচেয়ে কম ছিল না। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে অনেক আলেম ও মুফতি এমপি হয়েছিলেন। শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক ও মুফতি আমিনী জেল খাটায় দেশব্যাপী বিএনপিকে জেতানোর আবেগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু পরের ৫ বছর ৬০/৭০ জন লোক মন্ত্রী হলেও দেশবরেণ্য এসব আলেমের কেউই কিছু হতে পারেননি। শেখ হাসিনা ৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে রাজনীতির স্বার্থে মন্ত্রী মর্যাদায় উপদেষ্টা বানিয়ে রেখেছেন। কিন্তু বেগম জিয়া সারা দেশের ইসলামপন্থীদের খুশি করার জন্য শাইখুল হাদীসকে উপদেষ্টা বানাতে পারেননি। মুফতি আমিনী, মুফতি ওয়াক্কাস, মুফতি শহীদুল ইসলাম প্রভৃতি ব্যক্তিত্বের কাউকে মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী বানাননি। জোটের বৈঠকেও তাদের ‘সম্পদ নয় বোঝা’ বলে খোঁটা দেওয়া হয়েছে বলে শোনা গেছে। যার ফলে আলেম উলামারা আওয়ামীলীগের দিকে ঝুঁকে পড়ার বিষয়ে ভাবার প্রেরণা পেয়েছেন।
অথচ, আচরণগত অবহেলা বাদ দিলে বিএনপির অবদান এদেশের ইসলামী মূল্যবোধের ক্ষেত্রে অতুলনীয়। বিশেষ করে সংবিধানের মূলনীতিতে ৯২ ভাগ মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ স্থাপন বিএনপিরই অবদান। যা এক পাল্লায় রাখলে অন্যান্য সব দলের ইসলামী কাজ কর্মের চেয়েও বিএনপির এ পাল্লাটিই ভারী হয়ে যাবে। এমন আরও কিছু কাজ বিএনপির আছে। আলোচনা দীর্ঘায়িত হবে বলে সব বলা গেল না। তবে মূল বক্তব্য এখানে এটিই যে, যদি নির্বাচন সঠিক সময়ে হয়, তাহলে সব বড় দল ও উভয় জোটের কাছে আমাদের আবেদন থাকবে, ইসলামের জন্য বিচ্ছিন্ন কাজ কর্ম বা আন্তরিকতাপূর্ণ কিংবা আন্তরিকতাবিহীন অবদান তেমন কোনো কাজে আসবে না। জনগণ সবকিছু বোঝে, তারা বেশ সচেতন হয়ে গেছে। কান্না আর মায়া কান্নার পার্থক্য তাদের চেয়ে বেশি আর কেউই বোঝে না। অতএব, দেশের ভাব দেখানো ধনিক বণিক এলিটদের আসন তো দিতেই হবে, দলীয় নেতাকর্মীদেরও জায়গা করে দিতে হবে, তবে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের আপনজনদের ভুলে যাওয়া যাবে না। তাদের জন্য সব দল ও জোটের কমপক্ষে ১০% আসন বরাদ্দ রাখার চেষ্টা করতে হবে। যারা চলতি শীত মৌসুমেই গড়ে ৭/৮ কোটি মানুষকে তাদের ওয়াজ নসীহত শোনাবেন। যাদের জুমার খোতবা, মাদরাসার বয়ান, দরবারের মাহফিল দেশের কোটি কোটি ভোটারকে মোটিভেট করবে। বিশেষ করে রবিউল আউয়াল মাস ব্যাপী ও আগে পরে চলবে মহানবী (স.) এর মিলাদ, সিরাত, দাওয়াত ও জীবনভিত্তিক হাজারো ঘরোয়া ও লাখো অনুষ্ঠান, মাহফিল ও নানা আয়োজন। উৎসব মুখর এর নবী জীবনী অনুষ্ঠানগুলোতে আলোচনায় আসবে নানা ব্যক্তি ও দলের ধর্মীয়ভাব ধারা নিয়ে বহু চর্চা ও অনুশীলন। ভোটের মৌসুমে এসব থেকে মানুষ আশাতীত প্রভাবিত হবে।
আমার কথা কেউ অন্য অর্থে নেবেন না। আমি সংবাদ, সমাজ গবেষণা ও ধর্মপ্রচার বিষয়ে জীবনের বড় একটি অংশ ব্যয় করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, আগামী দিনের বাংলাদেশ পরিণত হচ্ছে একটি আধুনিক ইসলামী রাষ্ট্র ও সমাজের মডেলে। একথাটি দেশের অন্যতম মনীষী সমাজবিজ্ঞানী বেশ আগে থেকেই বলে এসেছেন। হচ্ছেও তাই। অতএব, উভয় জোটসহ বড় সব দলকে বলছি নমিনেশন, দলগঠন, মন্ত্রিসভা বা উপদেষ্টা পরিষদ তৈরির সময় তাওহীদি গণমানুষের আপনজনদের কথা বিস্মৃত হবেন না। যাদের গণসংযোগ ও অনুসারীর নেটওয়ার্ক রাজনীতিবিদদের চেয়েও বহুগুণ বেশি ও বড়। তারা যখন কাছে আসতে চান, তখন অবহেলায় দূরে ঠেলে দেওয়া কারো জন্যেই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। কারণ, দেশীয় রাজনীতি তার গতিপথ দ্রুত বদলে চলেছে। সময়ে সবাই দেখতে ও বুঝতে পারবেন। আমরা একটু আগেই বলে রাখলাম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।