Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আয়কর বিভাগের দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদকের ২৩ দফা সুপারিশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম | আপডেট : ৮:৫১ এএম, ১০ নভেম্বর, ২০১৮

আয়কর বিভাগে দুর্নীতির ১৩টি উৎস চিহ্নিত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইসঙ্গে সেইসব প্রতিরোধে ২৩ দফা সুপারিশ করেছে দুদুক । সম্প্রতি দুদকের ভারপ্রাপ্ত সচিব সারোয়ার মাহমুদের স্বাক্ষরিত সুপারিশমালা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর সুপারিশমালা পাঠানো হয়েছে বলে ইনকিলাবকে জানিয়েছেন দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য। এর আগে দুদকের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের প্রাতিষ্ঠানিক দলের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিলে তা অনুমোদন করে দুদক। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব বরাবরে পাঠানো সুপারিশমালায় আয়কর বিভাগের দুর্নীতির উৎস এবং তা প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করা হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক দল বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা, আয়কর বিভাগ এবং কাস্টম এক্সাইজ ও ভ্যাট সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি পর্যালোচনা, সরেজমিনে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন, গণমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্যাদি এবং কমিশনের গোয়েন্দা উৎস থেকে পাওয়া তথ্যাদি পর্যালোচনা করে।
আয়কর বিভাগের দুর্নীতির উৎসসমূহ: ম্যানুয়াল প্রক্রিয়ায় আয়কর নথি গ্রহণ। রেজিস্টার টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি সংঘটিত হওয়ার সুযোগ থাকছে। নথি নিষ্পত্তি সংক্রান্ত কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারিত নেই। যার ফলে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায় না। নতুন করদাতা চিহ্নিতকরণে সংশ্লিষ্ট কর কর্তৃপক্ষের প্রদত্ত অতিরিক্ত স্বেচ্ছামাফিক ক্ষমতাকে অনেকেই দুর্নীতি অনিয়মের অন্যতম উৎস বলে মনে করেন। সরেজমিনে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা যায় নতুন করদাতা চিহ্নিতকরণের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর কর্মকর্তাদের মর্জির ওপর নির্ভরশীল। এছাড়াও সিএ ফার্মসমূহের জবাবদিহিতা না থাকায় এ ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়মের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও আয়কর মেলার প্রাতিষ্ঠানিকতার প্রয়োজন রয়েছে। তবে আয়কর মেলার নামে বিলাসবহুল প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে অর্থ ব্যয়ে অস্বচ্ছতা রয়েছে।
দুদকের ২৩ দফা সুপারিশ:দেশের আর্থিকভাবে সামর্থবান সব নাগরিক, যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে, তাদের প্রত্যেকের জন্য করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর গ্রহণপূর্বক আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা। ই-ট্যাক্স সিস্টেম পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করে তা কার্যকর করা। একই সঙ্গে এর সাথে সম্পৃক্ত কর সেন্টার ও সার্ভিস সেন্টার প্রস্তুত করা। উৎসে কর ব্যবস্থাপনাকে জরুরি ভিত্তিতে অটোমেশনের আওতায় আনা এবং এর জন্য একটি পৃথক প্রশাসনিক কাঠামো সৃজন করা। কাজের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কর প্রশাসন ক্যাপাসিটি ও ট্যাক্স সার্ভিস প্রকল্পের আওতায় টিআইআরএস পদ্ধতিতে বিআরটিএ, সিটি করপোরেশন, ভূমি প্রশাসন ইত্যাদি সংস্থার সাথে অনলাইনে সংযুক্তির মাধ্যমে তাদের ডাটাবেস ব্যবহার করে নতুন করদাতা শনাক্ত করার প্রক্রিয়া প্রবর্তন করা হয়। অথচ এই পদ্ধতিটি প্রবর্তনের পর ব্যবহার না করার জন্য এর সুফলপ্রাপ্তি থেকে আয়কর বিভাগ বঞ্চিত হয়। কেন্দ্রীয় জরিপ অঞ্চলকে একটি কর নির্ধারণী অঞ্চল হিসেবে ব্যবহার না করে এর উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সুস্পষ্ট নিদের্শনা এবং পরিপালনের নীতিমালা প্রবর্তনের মাধ্যমে যুগোপযোগী করে ব্যবহারযোগ্য নতুন করদাতা শনাক্তকরণের কাজে লাগানো। আয়কর বিভাগের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলসহ প্রতিটি দপ্তরের নথি নিষ্পত্তির জন্য সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট আরো উন্নত এবং করদাতাবান্ধব করার লক্ষ্যে রাজস্ব বোর্ড ডিজিটাল পদ্ধতিতে কেন্দ্রীয় অ্যাকাউন্টস, কেন্দ্রীয়ভাবে রিটার্ন গ্রহণ ও প্রসেসিং, কেন্দ্রীয়ভাবে রেজিস্ট্রেশন প্রদান ইত্যাদির উন্নয়ন ও ডাটা ম্যানেজমেন্টকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে করদাতাগণকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কর প্রদানের বিষয়ে আরো বেশি সুযোগ সৃষ্টি করাসহ ২৩টি সুপারিশ করা হয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আয়কর বিভাগ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ