Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সরকার খালেদা জিয়াকে জেলে মেরে ফেলতে চায়

মহাসমাবেশে মাহমুদুর রহমান মান্না

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান বলেছেন, সংসদ রেখে শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন নয়। অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। এ সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তিনি বলেন, এই সরকার ভোট চোর, মিথ্যাবাদী, ভন্ড, প্রতারক। তারা ওয়াদা খেলাপকারী। এ সরকারের অধীনে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না, হবে না। এ সরকার খালেদা জিয়াকে জেলের ভিতর মেরে ফেলতে চায়। গতকাল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশে মান্না এ কথা বলেন। মাহমুদুর রহমানের বক্তব্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসমুদ্র বার বার উদ্বেলিত হয়ে উঠে। লাখ জনতার স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয় গোটা উদ্যান এলাকা। এ সময় মাহমুদুর রহমান মান্না টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সন এবং প্রিণ্ট মিডিয়ার ফটো সাংবাদিকদের বলেন, এই যে লক্ষ জনতার স্লোগানের দৃশ্য আপনারা ধারণ করছেন তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিন। প্রধানমন্ত্রী দেখুন যে তাকে এদেশের মানুষ আর চায় না। তিনি দেখুন যে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য লাখ জনতা জীবন দিতে প্রস্তুত।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মান্না বলেন, এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়া। তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। তাকে মিথ্যা বানোয়াট মামলায় আটকে সাজা দিয়েছেন। একটি মামলায় ৭ বছর আর অন্য মামলায় প্রথম ৫ বছর সাজা দিয়ে পরে তা বাড়িয়ে ১০ বছর সাজা দিয়েছেন। যা নজিরবিহীন। বয়স্ক এই মহিলাকে রেখেছিলেন একটা পরিত্যক্ত অন্ধকার ঘরে। তার সঠিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। তার হাতে ব্যথ্যা, পায়ে ব্যথা, তিনি হাঁটতে পারেনা। তার সাথে কেউ দেখা করতে পারে না। এমন একজন মহিলা ১৭ বছর সাজা খেটে কি জীবিত বের হতে পারবেন? আসলে এই সরকার জেলের ভেতর খালেদা জিয়াকে মেরে ফেলতে চায়। আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে জেলের ভিতর পঁচে মরতে দেবনা। লড়াই করবো, জীবন দেবো, খালেদা জিয়াকে জেল থেকে মুক্ত করে আনবো।
ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, আমরা ১নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে বসেছিলাম। সেখানে আমরা বলেছি, বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, অর্থাৎ শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন নয়। এরপর সংসদ ভেঙে দিতে হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এ নির্বাচন কমিশন পুন:র্গঠন করতে হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে হবে। গায়েবি মামলা বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক কর্মীদের গ্রেফতার করা বন্ধ করতে হবে। এখন পর্যন্ত যাদের গ্রেফতার করেছেন তাদের মুক্তি দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সে সংলাপে আশ্বাস দিয়েছিলেন গ্রেফতার করা হবে। তার সে আশ্বাসের কোন প্রতিফলন হয়নি। গতকাল বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের কারণ ছাড়াই নির্বিচারে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাই এ সরকারের কথায় কোন বিশ্বাস নেই। আগামীকাল (বুধবার) সরকারের সাথে দ্বিতীয় দফা সংলাপ হবে। সে সংলাপে মুখের কথা নয়, প্রধানমন্ত্রী লিখিত অঙ্গিকার করতে হবে।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই পাঁচ বছর ধরে দেশ চালাচ্ছে বিনা ভোটের অবৈধ সরকার। এ পাঁচ বছরে সরকার ব্যাংক লুট করেছে, সোনা চুরি করেছে, পাথর, কয়লা মাটি সব চুরি করেছে। এদেশটাকে তারা তামা বানিয়ে ফেলেছে। এরা লুটেরা ভোট চোর, ভন্ড, প্রতারক মিথ্যাবাদী। ২০১৪ সালে পাঁচ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের পর বলেছিল এটা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। খুব শিগগিরই সকলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন দেয়া হবে। এরপর পাঁচ বছরে আর কোন খবর নেই। ওয়াদা করে এ সরকার ওয়াদা রাখেনি। তাই এদের অধীনে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, পুলিশ ভাইদের বলছি আপনাদেরকে উপরের নির্দেশ মানতে হয়। এখন থেকে সরকারের অন্যায় নির্দেশ আর মানবেন না। তাদের নির্দেশ মানার আর দরকার নেই। জনগণ জেগে গেছে, জনগণের দাবির বিরুদ্ধে, জনগণের মতামতের বিরুদ্ধে গেলে এর পরিণতি ভাল হয়না।



 

Show all comments
  • khan mashrequl ৭ নভেম্বর, ২০১৮, ৫:৫৬ এএম says : 0
    সর্বনাশ , মান্নার কথায় ........... , প্রধান নির্বাচন কমিশনার ভয়ে দেশ ছেঁড়ে পালাতে পথ পাবেন না । ভাগ্যিস এত দিন উনি ...... ....... ছিলেন , তা না হলে দেশ ও জাতির কি হত ভাবা যায়??
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ১১ নভেম্বর, ২০১৮, ৭:৪৬ এএম says : 0
    মান্না বড় বড় কথা বলে কিন্তু সেসব কথা বাস্তবে কোন দিন রূপ নেয়নি এটাই আমরা দেখে আসছি। সরকারের বিপক্ষের লোকজন ও সন্ত্রাসীরা ওনার কথা শুনতে আশে তিনি কি বলেন; কিন্তু ওনার কথা মনে প্রানে মেনে নিতে পারেন না। তাই দেখাযাবে সভার পর অংশ গ্রহণ কারীদের কোন আলামত নজরে আসেনা। মানে বড় বড় সভা করার পর ফলাফল শূন্য। আমরা দেখেছি আওয়ামী লীগ যখন বিরুধী দল তাদের নেতার কথা সভা থেকে পুজি করে নিয়ে সারা দেশে সেই কথার প্রতিফলন ঘটিয়ে বিপক্ষের শক্তিকে তচনচ করে দিয়েছে। এটা আমরা লক্ষ্য করেছি জামাতের মধ্যে তাদের নেতাদের কথা তাদের কর্মীরা অক্ষরে অক্ষরে প্রতিপালন করে থাকে। বিএনপি যেদিন জামাতের বন্ধু হয়েছে তখন আবশ্য তাদের যুক্ত সভা থেকে যা বের হয়েছে সেটাই বাস্তবায়িত করার প্রচেষ্টা কর্মীরা নিতো। কিন্তু এখন আমরা কি দেখছি মান্না সাহেব দেশে অশান্তি আনার জন্যে দর্শকদেরকে উত্তেজিত করে নাশকতা মূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে পরার জন্যে সভা সমাবেশে এবং টকশোতে সরকারের বিরুদ্ধে বিষদ্গার করার পরও ওনাদের পক্ষের সাধারন জনতা নিশ্চুপ হয়ে ঘরে বসে আছে। নেতাদের কথায় তারা সক্রিয় হয়ে মাঠে নামছে না এটাই সত্যে পরিণত হতে দেখা যাচ্ছে। তা নাহলে ওনি (মান্না) এতদিন যাবত সরকারের বিরুদ্ধে যেভাবে বিষদ্গার করে আসছে তাতে করে দেশে এতদিন বিশৃঙ্খলা লেগে যেত এটাই সত্য। এই যে বিএনপি সিলেট থেকে সভা সমাবেশ করে আসছে এসব সভায় মানুষ বুঝতে আসে বিএনপি ছাড়া এনারা কারা এনারা কি বলতে চায় সেটা শুনার লোকই বেশী। আমরা দেখেছি এধরনের সভায় যখন বক্তারা সরকার বিরুধী বক্তব্য দেয় তাতে করে জনগণ উৎসাহিত হয়ে এবং নেতার বক্তব্য কাজে লাগাতে শুরু করে দেয়ার কথা। কিন্তু আমরা কি দেখছি, সিলেটের জনসভা থেকে শুরু করে এযাবত প্রচুর জনসভা ক্ষুদ্র আকারে আবার বিশাল আকারে করেছে এবং সরকারকে উৎখাত করার প্রচুর উসকানি মূলক বক্তব্য রাখার পরও দর্শকরা শ্লোগানের জবাব দেয়া ছাড়া আর কিছুই করছে না। তাই সরকারও এসব আতিপাতে নেতার কথা কানে নিচ্ছে না। ফলে যেখান কার পানি সেখানেই রয়ে গেছে কিছুই ভাষিয়ে নিয়ে যায় নি এটাই সত্য। আমরা জানি আমাদের দেশে পাকিদের দোসরেরা এখন সংখ্যায় প্রচুর কিন্তু তারা যেহেতু পাকিদের দালাল সেহেতু তাদের প্রকশ্যে কিছু করার কলিজায় সাহস নেই। উপস্থিত হয়ে নেতাদের সাথে হয় হয় করবে কিন্তু ঘরে ফিরে জয় বাংলা জবতে থাকবে। তাদের ভয় প্রকাশ্যে যেন কেহ না দেখে ফেলে এরা স্বাধীনতাবিরুধী ও দেশদ্রোহী। তবে এনারা অন্ধকার ঘরে ঠিকই পাল্লায় বা ধানের শীষে মারে সীল এটাও সত্য। মান্না সাহেব কুপথ ধরে আলোকিত হতে চায় যেটা মহান সৃষ্টি কর্তা চান না, একমাত্র শয়তান কুপখে চলে এবং তার সারগেদদেরকে কুপথে চলার মন্ত্র দেয়। ঐক্যের ব্যাপারেও সেই একই বিষয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে সেটা হচ্ছে, তারা বড় বড় মানে বিশাল সভা করছে সভা থেকে বক্ততৃতার মাধ্যমে সভায় আগতদেকে সরকার বিরোধী উত্তেজনা মুলক কথা বলে উত্তেজিত করতে চাচ্ছে কিন্তু যারা উপস্থিত হয়েছেন তাদের কাছ থেকে শুধু শিখিয়ে দেয়া শ্লোগান ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যাচ্ছেনা এটাই সত্য। সভা থেকে তথাকথিত ঐক্যের নেতারা দেশকে বিশৃঙ্খলতা ও সন্ত্রাসীর দিকে ঠেলে দেয়ার মন্ত্র দিচ্ছে কিন্তু…… তাদের কথা কেহই শুনছে না ফলে সভা পর্যন্তই এদের (নেতাদের) লম্ফ জম্ফ দেখা গেছে এরপর যেখান কার জল সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে কিছুই ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে না। তাই আমি মান্না সাহেবকে বলতে চাই এই দেশ আল্লাহ্‌ ’৭১ সালে বঙ্গালীদের জন্যেই সৃষ্টি করেছিলেন, অন্য কোন জাতী বা দেশের জন্যে নয় এটাই এতবছর ধরে প্রমাণিত হয়ে আসছে। দেখছেন না জিয়া মিয়া পাকিদেরকে বাঙ্গালী যাতে বলতে না হয় তাই ইতিহাস থেকে বাঙ্গালী শব্দটা মুছে বাংলাদেশী জাতীয়তা বাদ প্রতিষ্ঠিত করতে উঠে পরে লেগেছিল, কিন্তু এখনও বাঙ্গালীর ইতি হয়নি বরং বিএনপি জামাতের বাংলাদেশী জাতীয়তা বাদের খেলা অচিরেই শেষ হবে এটাই সত্য। মান্না সাহেব আপনি যদি এই বাংলায় রাজনীতি করতে চান তাহলে প্রথমেই আপনি মোসলমান হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করুন তারপর নিজেকে বাঙ্গালী হিসাবে ফুটিয়ে তুলুন তারপর মিথ্যা বলা ছেড়ে দিয়ে সত্যকে ফুটানোর চেষ্টা করুন আল্লাহ্‌ আপনাকে সাহায্য করবে নয়ত আল্লাহ্‌র শত্রু শয়তান আপানকে বিপথে নিবে এবং একদিন এসব অকথা কুকথা বলার দায়ে আবার আপনাকে হাজতবাসী হতে হবে এটাই কঠিন বাস্তব মনে রখবেন। মান্না সাহেব রাজনৈতিক ইতিহাস পড়েন কিন্তু আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি তিনি সময় ব্যয় করে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেন না বরং সহজ পথে কিভাবে রাজা হওয়া যায় মানে যোগ্যদেরকে হত্যা করে বিশৃঙ্খার সৃষ্টি করে অন্ধকার ঘর বানিয়ে অপর পক্ষকে কুবকাত করে ক্ষমতা দখল এসব কুযুক্তি মান্না সাহেব নিচ্ছেন তাই তার এদশা। এককালের ছাত্র নেতা এখন রাস্তাঘাটের নেতায় রূপায়িত হয়েছেন এটাই জাতীর জন্যে দুঃখ জনক ঘটনা। এখন দেশ ও জাতীর উচিৎ হবে মান্না নামক এই বিষ ফোড়া অপারেশন করে শরীর থকে কেটে বাদ দেয়া। আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দান করুন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ