পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তুরস্কসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের পাটজাত সুতা রফতানিতে। প্রধান বাজারগুলোয় চলমান অস্থিরতার কারণে পণ্যটির রফতানিতে ভাটা পড়া এমনকি দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব হিসেবে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বর্তমানে বৈশ্বিক চাহিদার সিংহভাগ পাটসুতা সরবরাহ করছে বাংলাদেশ। বিশ্বের ৭৮টি দেশে রফতানি হচ্ছে বাংলাদেশে উৎপাদিত পাটজাত সুতা। এ পণ্যটির মোট রফতানির এক-তৃতীয়াংশেরও বেশির গন্তব্য হচ্ছে তুরস্ক। দেশটি ছাড়াও পাটসুতার প্রধান বাজারগুলোর মধ্যে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের ইরান ও মিসর। দেশগুলোয় চলমান ভূরাজনৈতিক সংকট বিপাকে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশের পাটসুতা রফতানিকারকদের। রফতানি কমে যাওয়া ও ব্যবসার নগদ অর্থে টান পড়াসহ দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব হিসেবে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ) সূত্রে জানা গেছে, পাটসুতা উৎপাদনকারীদের ব্যবসার পরিস্থিতি বর্তমানে খুবই খারাপ। বাংলাদেশে পাটজাত পণ্য উৎপাদনের ৯৫ শতাংশই রফতানি বাজারনির্ভর। বাংলাদেশ থেকে সাড়ে ৮ লাখ টন পাটপণ্য রফতানি হয়। এর মধ্যে ছয় থেকে সাড়ে ছয় লাখ টনই পাটের সুতা। বাকিগুলো হচ্ছে বস্তা ও চট। বস্তা ও চটের আন্তর্জাতিক বাজার সংকুচিত হয়ে পড়ায় পণ্যগুলোর বাজার উন্নয়নের তেমন কোনো সুযোগ আর নেই। ফলে মূলত পাটজাত সুতা রফতানির মাধ্যমেই এতদিন পাটপণ্যের বাজার ধরে রেখেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু প্রধান বাজারগুলোর সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি বর্তমানে দেশের পাটসুতা উৎপাদনকারীদের জন্য বয়ে নিয়ে এসেছে অশনিসংকেত।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া পাটজাত সুতার ৩৬ দশমিক ৬৫ শতাংশের গন্তব্য ছিল তুরস্ক। এ সময় চীনে পণ্যটি রফতানি হয়েছিল ১৮ শতাংশ। এছাড়া রফতানি হওয়া পাটসুতার ১১ শতাংশ গেছে ভারতে, ৬ শতাংশ ইরানে, ৫ মিসরে, সাড়ে ৪ ইন্দোনেশিয়ায়, ২ দশমিক ১৫ বেলজিয়ামে, ২ রাশিয়ায়, ১ দশমিক ৮ যুক্তরাষ্ট্রে ও ১ দশমিক ৬ শতাংশ গেছে উজবেকিস্তানে।
সূত্র জানায়, আর্থরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের দিক থেকে প্রধান বাজার তুরস্ক বর্তমানে নাস্তানাবুদ অবস্থায় আছে। দেশটির মুদ্রার অবমূল্যায়ন হয়েছে এক বছরে ৪০ শতাংশ। দেশটিতে মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে গত বছর। তাই বিলাসী পণ্য হিসেবে কার্পেটের ব্যবহারও অনেক কমেছে। এরই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের পাটসুতা রফতানিতে। তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে চীনের অবস্থাও এখন খুব একটা ভালো না বলে দাবি করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। ফলে ১০ টাকার পণ্য এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ছয় টাকায়।
একাধিক জুট স্পিনিং মিল মালিক জানান, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের চাপে ব্যাংকগুলোও এখন জুট স্পিনারদের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। পণ্য তৈরি করে মজুদ করে রেখে দিতে হচ্ছে, বিক্রি করা যাচ্ছে না। নগদ টাকার প্রবাহে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বর্তমানে পাটজাত সুতা উৎপাদনকারী কারখানার সংখ্যা ৯৪টি। এর মধ্যে ২৬টিই বন্ধ হয়ে গেছে। এসব মিলে কর্মসংস্থান হতো ৮০ হাজার মানুষের। বাকি কারখানাগুলোও এখন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আগের অর্থবছরের তুলনায় পাটজাত সুতা রফতানি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের শুরু থেকেই প্রধান রফতানি বাজারগুলোয় অস্থিরতার প্রভাব পড়তে থাকে দেশের পাটজাত সুতা রফতানিতে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পাঁচ লাখ ৬৬ হাজার টন পাটজাত সুতা রফতানি করেছে বাংলাদেশ। এ থেকে আয় হয়েছে ৪ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পাটজাত সুতা রফতানি বাবদ আয় কমেছে প্রায় ১৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।