পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একের পর এক গ্রেফতার ঘটনায় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সাথে সাধারণ মানুষও এখন চরম আতংকে রয়েছেন। অনেকেই বলছেন, পুলিশের অতি উৎসাহি কিছু সদস্য সাধারণ মানুষের সাথে যে আচরণ করছে তাতে তারা শঙ্কিত। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সারাদেশেই সক্রিয় রয়েছে পুলিশ। অপরাধীদের গ্রেফতার, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সাধারন মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশ কাজ করছে। পুলিশের অভিযান ও গ্রেফতারে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই।
ঢাকার আজিমপুরে সপরিবারে বসবাস করেন কামাল আহমেদ। ব্যবসার পাশাপাশি মাঝে মধ্যে সুযোগ পেলেই গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার মদন থানাধীন গোবিন্দশ্রী গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যান তিনি। কয়েকদিন আগে গ্রামের বাড়ি গিয়ে গ্রেফতার হয়ে জেল খেটে ছাড়া পান কামাল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি সরকারবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত। অথচ দীর্ঘ দিন ধরেই রাজনীতির বাইরে রয়েছেন কামাল আহমেদ।
গত ১ নভেম্বর ঢাকা থেকে বন্ধুর জানাজায় গিয়ে নাশকতার একটি মামলায় গ্রেফতার হন কুমিল্লার মুরাদনগরের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ্ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের ছোট ভাই আবু কাউছার। আবু কাউছার সরাসরি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত নন। তার বিরুদ্ধে এর আগে কোনো মামলাও ছিল না। শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থও নন তিনি। তার পায়ে জন্ম সূত্রেই সমস্যা রয়েছে।
গত শনিবার রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেফতার করা হয় গাজীপুর মহানগর যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রভাষক বসির উদ্দিনকে। মহানগর যুবদল সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন ভাট জানান, প্রভাষক বসির উদ্দিন বর্তমান সরকারের সব রাজনৈতিক মামলায় জামিনে আছেন। তারপরেও তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুধু রাজধানীতেই নয়, রাজধানীর বাইরে প্রত্যন্ত গ্রামেও পুলিশের এই গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে। আর পুলিশের এই গ্রেফতার অভিযানে আতংকের মধ্যে রয়েছেন সরকারবিরোধী রাজনীতির সাথে জড়িতদের পাশাপাশি সাধারন মানুষও। গত কয়েক দিনের তথ্যানুযায়ী প্রতিদিন গড়ে বিএনপি, জামায়াত এবং ঐক্যফ্রন্টের দেড় শ’ থেকে দু’ শ’ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে শুক্রবার পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা, যশোরের বেনাপোল ও শার্শা, মেহেরপুর, নাটোর, চুয়াডাঙ্গা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, রাজবাড়ী, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট ও সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এর বাইরে অনেক সাধারণ মানুষও গ্রেফতার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গতকাল সিলেট শহরের বাসিন্দা টিপু দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, তার গ্রামের বাড়িতে প্রতিদিনই পুলিশ যাচ্ছে তার ভাইদের গ্রেফতার করতে। অথচ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। এক সময় একটি রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও গত ৭ বছরে কোন রাজনৈতিক কর্মসূচীতে অংশ গ্রহন করেননি তিনি। এর পরেও পুলিশি হয়রানীতে বাড়ি থাকতে পারছেন না তার ভাই। অনেকেই এখন সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতেও ভয় পাচ্ছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মো. সোহেল রানা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, নির্বাচন অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্ন অনুষ্ঠানে ইতোমধ্যে পুলিশের সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়ছে। যে কোনো ধরনের নাশকতামূলক কর্মকান্ড ঠেকাতেও আমরা প্রস্তুত রয়েছি। পুলিশের অভিযান এবং গ্রেফতার নিয়মিত কাজের অংশ। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং অপরাধীদের গ্রেফতারে পুলিশকে অভিযান চালাতে হয়। এ সময় অন্যায়ভাবে কাউকে হয়রানী বা গ্রেফতারের তথ্য পাওয়া গেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পুলিশের অভিযানে আতংকিত না হয়ে পুলিশের ওপর আস্থা রাখা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স¤প্রতি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় বেশ কিছু মামলা রেকর্ড হয়েছে যার কোনো ভিত্তি নেই। মামলাগুলোতে রাজনৈতিক নেতাকর্মীর পাশাপাশি অনেক সাধারণ মানুষকেও আসামি করা হয়েছে। পুলিশ এখন ওইসব মামলার আসামিদের তালিকা ধরে গ্রেফতার অভিযান শুরু করেছে। ভুক্তভোগীরা বলেন, ইতঃপূর্বে যেসব মামলা ছিল রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তার বেশির ভাগ মামলায় তারা জামিনে রয়েছেন। নতুন নতুন মামলায় তারা এখন গ্রেফতার হচ্ছেন।
আইন-শৃংখলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন সামনে রেখে নাশকতার আশঙ্কা করছে সরকার। বিশেষ করে নাশকতা মামলার আসামিরা ফের জ্বালাও পোড়াওসহ বড় ধরনের হামলা করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ে এ ধরনের তথ্যও রয়েছে। এ অবস্থায় কঠোর অবস্থান নেয়ার জন্য দেশের সকল মেট্টোপলিটন ও জেলা পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে পুলিশ সদর দফতর থেকে। সার্বিক পরিস্থিতি, বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ, মাঠের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং নাশকতার আশঙ্কা উড়িয়ে না দিয়ে তা বিবেচনায় রেখেই পুলিশ কাজ করছে।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার পর পরই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার আভাস রয়েছে। বিষয়টি মাথায় রেখেই সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কোনো ধরনের নাশকতামূলক কর্মকান্ডের উদ্ভব হলে তা কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে, তার প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। আর এসব বিষয় মাথায় রেখেই সারাদেশে সক্রিয় রয়েছে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ প্রশাসন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।