Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লোকসানেই সেই গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০১৮, ৩:২২ পিএম

বাড়তি মুনাফার আশায় বাংলাদেশে ফার্মাসিউটিক্যাল (ওষুধ) ইউনিটের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন। কিন্তু কয়েক মাস যেতে না যেতেই মুনাফা তো দূরের কথা উল্টো মোটা অঙ্কের লোকসানে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

গত ২৭ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশে ওষুধ ইউনিট বন্ধের ঘোষণা দেয় গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন। রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওই দিন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এম আজিজুল হক বলেন, বাংলাদেশে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের ব্যবসার ৭০ শতাংশই কনজুমার হেলথ কেয়ারের। বাকি ৩০ শতাংশ ফার্মাসিউটিক্যালের। ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিটের বাণিজ্যিক কর্যক্রম বন্ধ করা হলেও গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের কনজুমার হেলথ কেয়ারের কার্যক্রম আগের মতোই চলবে।

তিনি বলেন, আমাদের ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিট লোকসানজনক। সব ইউনিট মিলে আমাদের যে মুনাফা হয়, কনজুমার হেলথ কেয়ারে মুনাফার পরিমাণ তার থেকেও বেশি। কনজুমার হেলথ কেয়ারের মুনাফা থেকে ফার্মাসিউটিক্যালের লোকসান বাদ দিয়ে মোট মুনাফা দেখানো হয়। সে হিসাবে ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিট বন্ধ করে দেয়া হলে সামনে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের মুনাফা বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।

গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের চেয়ারম্যানের ওই ঘোষণার পর চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনই প্রথম প্রকাশ করা হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) এ আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

এ আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মুনাফা তো দূরের কথা উল্টো লোকসানেরর কবলে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে কোম্পানিটি প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে লোকসান করেছে ৪৮ টাকা ৬৪ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয় ২০ টাকা ৫০ পয়সা।

জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের মোটা অঙ্কের লোকসানের প্রভাব কোম্পানিটির চলতি বছরের প্রথম নয় মাসের (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) হিসাবেও পড়েছে। জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর এই নয় মাসে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে লোকসান করেছে ৩৩ টাকা ৫০ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে মুনাফা করে ৩৯ টাকা ৭৮ পয়সা।

মুনাফারর পাশাপাশি কোম্পানিটির সম্পদ মূল্যেও বড় ধরণের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ১২৯ টাকা ৮৫ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২০৪ টাকা ৪৩ পয়সা।

এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি পরিচালন নগদ প্রবাহ বা ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ৫২ টাকা ৪১ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৯৪ টাকা ৭৪ পয়সা।

উল্লেখ্য, লোকসানের কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের ওষুধ ইউনিট বন্ধের বিষয়ে কোম্পানিটির পরিষদ সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় গত ২৬ জুলাই। তবে পরিষদের ওই সিদ্ধান্তের দুই দিন আগে ২৪ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিয়মিত মুনাফা করার পর গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশ এর চট্টগ্রামের কারখানা বন্ধ করতে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসাবে উৎপাদিত অনেক ওষুধ গুদামজাত থাকার পরও এবং বাজারে ওই ওষুধের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও তা বাজারজাত করা হচ্ছে না। একই সঙ্গে ওষুধ উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত প্রায় দেড় শতাধিক শ্রমিককে বিনা কাজে বসিয়ে রাখা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ