পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রোহিঙ্গাদের জন্য মাল্টি সেক্টর সহায়তাসহ রেকর্ড ২৪ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২৪ হাজার ৭৪০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১৯ হাজার ৩৬১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারি সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৩০৬ কোটি ৪ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৫ হাজার ৭২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
একনেক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সাধারন অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম এবং শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিসসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী জানান, গত ৫ বছরে আওয়ামীলীগ সরকার আমলে মোট ১৪৮টি একনেক বৈঠক অনুষ্টিত হয়েছে। এসব একনেকে ১ হাজার ২৯৭টি প্রকল্প অনুমোদন পায়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ১৪ লাখ ৮৬ হাজার ১২৭ কোটি টাকা।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, রোহিঙ্গারা যতদিন কক্সবাজারে থাকবেন ততদিন তাদের ভালমন্দ দেখার দায়িত্ব আমাদের। আমরা তাদের ভাল থাকার ব্যবস্থা করছি। যখন তারা মিয়ানমারে ফেরত যাবেন তখন সেখানকার স্থানীয় বাংলাদেশীরা এসব অবকাঠামোর সুযোগ সুবিধা ভোগ করবেন। কেননা রোহিঙ্গাদের কারনে তারা অনেক কষ্ট ভোগ করছেন। জরুরী ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় মাল্টি-সেক্টর প্রকল্পটি ১ হাজার ৫৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা এবং বিশ^ব্যাংকের অনুদান থেকে ১ হাজার ৪৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। চলতি বছর থেকে ২০২১ সালে বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্প এলাকা হচ্ছে, চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলা। প্রকল্পের আওতায় রোহিঙ্গাদের জন্য সুপেয় পানি, স্বাস্থ্য ও পয়:নিস্কাশন, আশ্রয় শিবিরের অভ্যন্তরে সড়ক, ফুটপাথ, বাতি, হাটবাজার উন্নয়ন, যোগাযোগকারী সড়ক, সেতু, সাইক্লোন সেল্টার, মাল্টিপারপাস কমিউনিটি কেন্দ্র, অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র ইত্যাদি কাজ অতি জরুরি ভিত্তিতে নির্মাণ করা হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার, মিথ্যা তথ্য ছড়ানোসহ সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে ডিজিএফআই’র সক্ষমতা বাড়াতে ১২৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে প্রকল্প অনুমোদন করেছে একনেক।
প্রকল্পের বিষয়ে আহম মুস্তফা কামাল বলেন, ডিজিএফআই চলছে এনালগ পদ্ধতিতে। তাদের ডিজিটাল করতেই ডিজিএফআই শক্তিশালিকরণ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ফেসবুকে অনেক খারাপ অ্যাপসও আছে। কিভাবে আগামী প্রজন্ম এসব হযম করবে জানিনা। ফেসবুকে অনেক গুজব ছড়ানো হয়। এজন্য আইন করা হয়েছে। সেই আইন বাস্তবায়নে ডিজিএফআইকে শক্তিশালি করা হচ্ছে। সাইবার অপরাধ ও জঙ্গিবাদসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম কমে আসবে বলে আশা করছি।
তিনি জানান, একনেকে ডাকঘর গুলোতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ই-কর্মাসসহ বিভিন্ন নতুন কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া শহীদ মুক্তি যোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণের পাশাপাশি যেখানে গণহত্যা হয়েছে, সেখানকার গণকবরে যারা সায়িত আছেন তাদের নাম খুঁজে বের করে তালিকা লিখতে হবে। যাদের নাম পাওয়া যাবেনা, সেখানে লিখতে হবে অজানা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সব পুলিশের জন্য পর্যায়ক্রমে আবাসন ব্যবস্থা করতে হবে। প্রত্যেক জেলায় একটি করে ১০ তলা ভবন তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
একেনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলো হচ্ছে, বগুড়া হতে শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন-সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত নতুন ডুয়েলগেজ রেল লাইন নির্মণ, এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৫ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা। এছাড়া, ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত), ব্যয় ১ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ১ থেকে ৫ নং জোনের অভ্যন্তরীণ রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ, ব্যয় ১ হাজার ৫১০ কোটি টাকা, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, নর্দমা,ও ফুটপাত নির্মাণ ও উন্নয়সহ সড়কের নিরাপত্তা উন্নয়ন, ব্যয় ৬৯৪ কোটি টাকা। ডিজিএফআই এর টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি অবকাঠামো, মানবসম্পদ এবং কারিগরি সক্ষমতা উন্নয়ন, ব্যয় ১ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। মাদানী এভিনিউ থেকে বালু নদী পর্যন্ত মেজর রোড প্রশস্তকরণ এবং বালু নদী থেকে শীতলক্ষ্যা নদী পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ (প্রথম পর্ব), ব্যয় ১ হাজার ২৫৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, বাংলাদেশ সচিবালয়ে ২০তলা বিশিষ্ট নতুন অফিস ভবন নির্মাণ, ব্যয় ৪২০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, কর্ণফুলী সেতু নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত), ব্যয় ৭৯৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। রাজউক পূর্বাচল ৩০০ ফুট মহাসড়ক হতে মাদানী এভিনিউ- সিলেট মহাসড়ক পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ, ব্যয় ৪৫৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা। ডাক অধিদফতরের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণ, ব্যয় ৪৭৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। শহীদ মুক্তি যোদ্ধা ও অন্যান্য বীর যোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, ব্যয় ৪৬০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ পুলিশের জন্য ৯টি আবাসিক টাওয়ার নির্মাণ, ব্যয় ৯২৭ কোটি টাকা। ন্যাশনাল একাডেমী ফর অটিজম এন্ড নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজএ্যাবিলিটিজ (দ্বিতীয় সংশোধিত), ৪২২ কোটি টাকা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা, ব্যয় ১ হাজার ১৮৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর নির্মাণ (সংশোধিত), ব্যয় ৬৫৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, ২৩টি জেলায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন, ব্যয় ৩ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা। ৯টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন, ব্যয় ৪৩৫ কোটি টাকা, পতেঙ্গায় বিএনএ বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ, ব্যয় ৩৫৮ কোটি টাকা, স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচার কম্পিটিটিভনেস প্রকল্প, ব্যয় ৭৮০ কোটি টাকা, কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটসমুহের কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ, ব্যয় ১১৭ কোটি টাকা, ঢাকায় বিসিক ক্যামিক্যাল পল্লী স্থাপন, ব্যয় ২০১ কোটি ৮১ লাখ টাকা, গাজী ওয়্যারস লিমিটেড শক্তিশালীকরণ, ব্যয় ৬৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা এবং ৫০০-৬০০ মেগাওয়াট এলএনজি বেইজড কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টের জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পাদন এবং গ্যাস সঞ্চালন লাইন নির্মাণ, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৬৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।