পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার চলা নিয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানি শেষ। এ বিষয়ে আপিল বিভাগ আদেশ দিবেন আজ সোমবার। গতকাল রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ খালেদার অনুপস্থিতিতে মামলা চলতে বাধা নেই বলে আদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেছেন, জিয়ার অনুপস্থিতিতে নিন্ম আদালতে বিচার পাই নাই, হাইকোর্টে বিচার পাই নাই। আপিলে বিচারের জন্য গিয়েছি। আমরা আশা করি সর্বোচ্চ আদালতে ন্যায় বিচার পাব। দুদকের আইনজীবী বলেন, হাইকোর্টের মতো আপিল বিভাগেও এটি খারিজ হবে বলে তিনি আশা করছেন।
এদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াসহ চার আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে। গত ১৬ অক্টোবর মামলার সকল কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করে রায়ের জন্য এই দিন ঠিক করেন। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, খালেদা জিয়ার আবেদন যদি খারিজ হয় তাহলে বিচারিক আদালতে রায় দেয়া সম্ভব হবে। অন্যথায় রায় দেয়া অনিশ্চিত হয়ে যাবে। তবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদী বলেছেন, বিচারিক আদালতের রায় হবে কিনা তা নির্ভর করছে আপিল বিভাগের আদেশের ওপর।
আপিলের রায় আজ: নিন্ম আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। পরবর্তীতে রিভিশন আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। পরে আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। ওই আবেদনের ওপর শুনানি হয়। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। উভয় পক্ষ শুননানি শেষে আদেশের জন্য এই দিন ধার্য করা হয়। গত ২৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন। জজ আদালতের ওই আদেশ কেন বাতিল করা হবে না- তা জানতে রুল চাওয়ার পাশাপাশি রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত চওয়া হয় আবেদনে। হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ গত ১৪ অক্টোবর খালেদার রিভিশন আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দিলে জজ আদালতের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। এরপর গত ১৮ অক্টোবর আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের বক্তব্য: খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে কি না বিষয়টি নিয়ে আপিল বিভাগে আদেশের জন্য দিন ঠিক করেছেন আদালত। এমন অবস্থায় বিচারিক আদালত রায় ঘোষণা করতে পারে কি না জানতে চাইলে অপর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, এটা আদালতের আদেশের উপর নির্ভর করবে। আশা করছি সর্বোচ্চ আদালতে সুবিচার পাবেন। খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে রেখে রায় ঘোষণা করা হলে তা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন হবে বলে মনে করছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনি আর্ োবলেন, আসামি জেল কাস্টডিতে অথবা জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আছে, হাসপাতালে আছে, তারপরও তার অনুপস্থিতিতে বিচার করা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। এমন কোনো নজির নেই। এটি হবে উদাহরন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কারাগারে নতুন নজির সৃষ্টি করতে চাচ্ছে সরকার। আমরা খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে নিন্ম আদালতে বিচার পাই নাই, হাইকোর্টে বিচার পাই নাই। আপিলে বিচারের জন্য গিয়েছি। আমরা আশা করি সর্বোচ্চ আদালতে ন্যায় বিচার পাব। খালেদা জিয়ার মামলায় অনুপস্থিতিতে বিচারের বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে। খালেদা জিয়া চিকিৎসারত, বিচারিক আদালত এই অবস্থা বিবেচনা না করে, মানুষের জীবনের কথা চিন্তা না করে, ২৯ অক্টোবর রায়ের দিন ঠিক করেছেন। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য: অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, খালেদা জিয়ার পক্ষে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয় এবং শুনানির পরে আদেশের জন্য রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচারিক আদালত মামলার চলার যে আদেশ দিয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেছিলেন। কিন্তু হাইকোর্টেও রায় ওনার বিপক্ষে গেছে। তার বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে এ মামলার শুনানি হলো। যদি এ মামলায় নিয়মিত আপিল করার অনুমতি দেয়া হয় তাহলে বিচারিক আদালত কর্তৃক মামলার রায় দেয়া অনিশ্চিত হয়ে যাবে। আর যদি খালেদা জিয়ার আবেদনটি আপিল বিভাগে খারিজ হয়ে যায় তবে আগামীকাল রায় দেয়া সম্ভব হবে। তবে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের মতো আপিল বিভাগেও এটি খারিজ হবে বলে তিনি আশা করছেন।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় এ মামলা করেছিলেন দুদকের সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশীদ। ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মোট চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করে । মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় চার্জ গঠন করেন। খালেদা জিয়া ছাড়াও এ মামলার অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং মনিরুল ইসলাম খান। এ মামলার কয়েকটি ধার্য তারিখে আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেননি। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্যের আবেদন করেন। রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করার আদেশকে বেআইনি বলে মন্তব্য করেছিলেন খালেদা জিয়ারা। বকশীবাজার কারা অধিদপ্তরের মাঠে নির্মিত অস্থায়ী আদালত ভবনে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারকাজ চলছিল। নিরাপত্তার কারণ উল্লেখ করে ৪ সেপ্টেম্বর ওই মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষকে অস্থায়ী আদালত হিসেবে ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। গত ২০ সেপ্টেম্বর তার অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে বলে আদেশ দেন আদালত।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিন্ম আদালত পাঁচ বছরের সাজা দেন খালেদা জিয়া। সেদিনই তাকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরান কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সম্প্রতি তাকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়া হয়েছে। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।