Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুরগীর বাচ্চার লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি আন্দোলনে খুলনার খামারীরা

প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এ.টি.এম. রফিক, খুলনা থেকে ঃ পোল্ট্রি মুরগীর একদিনের লেয়ার, ব্রয়লার, ককরেল ও সোনালী জাতের বাচ্চার অস্বাভাবিকভাবে ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধিতে প্রান্তিক খামারী ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা চরম হতাশ। সম্ভাবনাময় ও বিকশিত পোল্ট্রি শিল্প মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে। বাজারে সর্বসাধারণকে মানবদেহের আমিষের চাহিদা পূরণে অতিরিক্ত মূল্য দিতে হচ্ছে। এ সংকট থেকে উত্তোরণের লক্ষ্যে বিপিআইএ’র খুলনা বিভাগীয় কমিটি খুলনা পোল্ট্রি ফিস ফিড শিল্প মালিক সমিতি সরকারি হস্তক্ষেপের দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মধ্যে শুধু খুলনায় ৪ হাজার ৯৫২টি পোল্ট্রি খামারসহ মোট ৪৭ হাজার ৮৯১টি খামারে লেয়ার মুরগী ৩ কোটি ৪২ লাখ ৪ হাজার ৮০০, ব্রয়লার মুরগী এক কোটি ২ হাজার, ককরেল, সোনালী ও দেশী মুরগী এক কোটি ২২ লাখ ৭২ হাজার, হাঁস ৫৬ লাখ ৪১ হাজারসহ গরু-ছাগল ও প্রাণীর সংখ্যা এক কোটি। খুলনা বিভাগে বর্তমানে সর্বমোট বিনিয়োগ ৪ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা, কর্মসংস্থান ৩ লাখ ২৭ হাজার ৫৮৫ জন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আরও চার লাখ মানুষ এর সাথে সংশ্লিষ্ট।
খুলনা বিভাগের জেলা-উপজেলা কমিটির রিপোর্টের আলোকে বাচ্চা, খাদ্য ও ওষুধের মূল্য মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণ, উৎপাদিত পণ্যের বিক্রয় মূল্য, বাচ্চা পাচার, আগামী ২০১৬-২০১৭ সালের জাতীয় বাজেটে পোল্ট্রি, ডেয়ারী ও মৎস্য শিল্পের উন্নয়নে প্রস্তাব জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যেখানে এক মাস পূর্বে একদিনের লেয়ার বাচ্চা ৫৫ টাকায় বিক্রি হতো, সেই বাচ্চা এখন ১০৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে ব্রয়লার বাচ্চা ২০ টাকার স্থলে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, ককরেল বাচ্চা ৮ টাকার স্থলে ২০ টাকা, সোনালী জাতের বাচ্চা ১০ টাকার স্থলে ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এতে উপাদনকারী খামারীদের মুরগীর মাংস ও ডিমের উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ।
সংগঠনের সভাপতি আলহাজ মাওলানা ইব্রাহিম ফয়জুল্লাহ বলেন, হ্যাচারী মালিকরা চাহিদার বিপরীতে কম বাচ্চা উৎপাদন ও সরবরাহ করে কৃত্রিম সংকটের মাধ্যমে একক আধিপত্য বজায় রেখেছে। বেসরকারি এই হ্যাচারী মালিকদের বেপরোয়া ও মুনাফালোভী নীতির বিরুদ্ধে সরকারের নিরবতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে এই অরাজকতা বন্ধে সরকারের হস্তক্ষেপ গ্রহণের দাবি করেছেন তিনি।
স্বল্পমূল্যে আমিষের যোগানদাতা পোল্ট্রি শিল্পকে বাঁচাতে এবং এর বিনিয়োগকে শক্ত-মজবুত করার লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচী ঘোষণা করেছে খুলনা বিভাগীয় পোল্ট্রি ফিস ফিড শিল্প মালিক সমিতি।
সমিতির মহাসচিব এসএম সোহরাব হোসেন বলেন, আজ ২৯ ও কাল ৩০ এপ্রিল খামারী, ব্যবসায়ী ও হ্যাচারী মালিকদের সাথে মতবিনিময় সভা। পরে পোল্ট্রি সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রান্তিকপর্যায়ে শাখা সংগঠন, কেন্দ্রীয় কমিটি, জেলা, বিভাগ ও উপজেলা শাখা কমিটি, প্রতিষ্ঠান সরকারি-বেসরকারি অফিসে পত্র প্রদান। আগামী ২ মে খুলনা বিভাগের সকল জেলা ও খুলনা জেলার সকল উপজেলার ডিএলও এবং টিএলওদের সাথে মতবিনিময় ও স্মারকলিপি প্রদান। ৩ মে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি প্রদান; আগামী ৪ মে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
১০টি প্রস্তাবনা সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন আন্দোলনকারীরা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সভাপতি আলহাজ মাওলানা ইব্রাহিম ফয়জুল্লাহ, সৈয়দ বেলাল হোসেন, শাহ জাফর মাহমুদ মেহেতা, শেখ রেজানুল ইসলাম, মোঃ সালাহ উদ্দিন, আলহাজ মোঃ মামুনুর রহমান, তপন পাল, গোলাম সবুর মিয়া, মোঃ আব্দুল আহাদ, তালুকদার মোঃ হেলালুজ্জামান, মোঃ তরিকুল ইসলাম, শেখ আইনুল হক, শেখ আব্দুল হালিম ও সৈয়দ শওকাত আলী প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুরগীর বাচ্চার লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি আন্দোলনে খুলনার খামারীরা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ