পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে গভীর সঙ্কটের সৃষ্টি করবে। স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষার লক্ষ্যে এ আইনের ৯টি ধারার সংশোধন দাবি করেছেন সম্পাদক পরিষদ। তারা বলছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। সম্পাদক পরিষদ কয়েক দিনের মধ্যে শুরু হতে যাওয়া বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে এই ধারাগুলো সংশোধনের দাবি জানিয়েছে। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান। সম্পাদক পরিষদ এ দাবিতে আগামী ১৫ অক্টোবর সোমবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে। মানববন্ধনে শুধু সম্পাদক পরিষদের সদস্যরাই অংশ নেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, এ আইন স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে গভীর সঙ্কটের সৃষ্টি করবে। তাই এ আইনকে সহজভাবে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমরা আইনটি বাতিল চাইনি। কতগুলো বিশেষ ধারার আমূল পরিবর্তন চেয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, এ আইনের পরিবর্তন সম্ভব। আশা করি, ওই ধারাগুলো সংশোধন করে আইনটি সংশোধন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সম্পাদক পরিষদের সদস্য শ্যামল দত্ত। বক্তব্যে বলা হয়, আমাদের মৌলিক আপত্তি, বারবার প্রতিবাদ সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সঙ্গে দুবার বৈঠক সত্তে¡ও মুক্ত সংবাদমাধ্যম, বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী কালাকানুন ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টকে (ডিএসএ) আইনে পরিণত করায় আমরা হতাশ, ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। তিন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর গণমাধ্যমবিষয়ক উপদেষ্টা প্রকাশ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, আমাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হবে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রহণযোগ্য পরিবর্তন-পরিমার্জনের লক্ষ্যে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করা হবে। কিন্তু বিষ্ময়ের সঙ্গে দেখলাম এসবের কিছুই করা হলো না। সম্পাদক পরিষদকে তিন মন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আমরা মনে করি এটি সেই প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ।
মানববন্ধন কর্মসূচি হওয়ার কথা ছিল গত ২৯ সেপ্টেম্বর। সে সময় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এই কর্মসূচি স্থগিত করে সম্পাদক পরিষদকে আলোচনায় অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানান। এরপর তথ্যমন্ত্রীসহ সরকারের তিন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করেন। ওই আলোচনায় তিন মন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগ মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হবে এবং মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলে এ নিয়ে আরও আলোচনা করা হবে। কিন্তু গত দুটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। এটি প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের যে দাবি সম্পাদক পরিষদ লিখিতভাবে তুলে ধরেছেন সেগুলো হচ্ছে, ১. সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতা সুরক্ষার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা অবশ্যই যথাযথভাবে সংশোধন করতে হবে। ২. এসব সংশোধনী বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে আনতে হবে। ৩. পুলিশ বা অন্য কোনো সংস্থার মাধ্যমে কোনো সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালানোর ক্ষেত্রে তাদের শুধু নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু আটকে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবে; কিন্তু কোনো কম্পিউটারব্যবস্থা বন্ধ করার অনুমতি দেওয়া যাবে না। তারা শুধু তখনই প্রকাশের বিষয়বস্তু আটকাতে পারবে, যখন সংশ্লিষ্ট সংবাদপ্রতিষ্ঠানের সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে কেন ওই বিষয়বস্তু আটকে দেওয়া উচিত, সে বিষয়ে যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারবে। ৪. কোনো সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের কোনো কম্পিউটারব্যবস্থা আটকে দেওয়া বা জব্দ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই উচ্চ আদালতের আগাম নির্দেশ নিতে হবে। ৫. সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীদের সাংবাদিকতার দায়িত্বের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথমেই আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে সমন জারি করতে হবে (যেমনটা বর্তমান আইনে আছে) এবং সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীদের কোনো অবস্থাতেই পরোয়ানা ছাড়া ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ ছাড়া আটক বা গ্রেফতার করা যাবে না। ৬. সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীর দ্বারা সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের গ্রহণযোগ্যতা আছে কি না, তার প্রাথমিক তদন্ত প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে করা উচিত। এই লক্ষ্যে প্রেস কাউন্সিলকে যথাযথভাবে শক্তিশালী করা যেতে পারে। ৭. এই সরকারের পাস করা তথ্য অধিকার আইনকে দ্ব্যর্থহীনভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওপর প্রাধান্য দেওয়া উচিত। ওই আইনে নাগরিক ও সংবাদমাধ্যমের জন্য যেসব স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, সেগুলোর সুরক্ষা অত্যাবশ্যক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, নয়াদিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দীন, করতোয়া সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনিরুজ্জামান, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, ইনডিপেনডেন্ট সম্পাদক এম শামসুর রহমান, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শহীদুজ্জামান খান প্রমুখ। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।