Inqilab Logo

রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সেনাপ্রধানকে নিয়ে বক্তব্যে আইএসপিআরের প্রতিবাদ, ডা. জাফরুল্লাহর ক্ষমাপ্রার্থনা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০১৮, ২:০৮ পিএম | আপডেট : ৩:৫৮ পিএম, ১৩ অক্টোবর, ২০১৮

সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদকে নিয়ে ভুল বক্তব্য দেয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, জেনারেল আজিজের সম্মানহানি করার কোনো চিন্তা বা উদ্দেশ্য আমার ছিল না। ভুল বক্তব্য ও শব্দ বিভ্রাটের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

শনিবার সকালে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি বেসরকারি সময় টেলিভিশনের এক টকশোতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার বক্তব্যে বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। ডা. জাফরুল্লাহর সেই মন্তব্যকে দায়িত্বজ্ঞানহীন, অসত্য ও সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে অভিহিত করে প্রতিবাদপত্র পাঠায় সেনাসদর দফতর।

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও ‘অসত্য’ বলে আখ্যায়িত করে শনিবার আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে বলা হয়, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সম্পর্কে ডা. জাফরুল্লাহর বক্তব্য নিয়ে আইএসপিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সম্পর্কে জনাব ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্য ছিল একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন অসত্য বক্তব্য। কারণ, বর্তমান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ চাকরিজীবনে কখনোই চট্টগ্রামের জিওসি বা কমান্ড্যান্ট হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন না। তিনি ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত কুমিল্লায় ৩৩ আর্টিলারি ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার, ২০১১ সালের জুন থেকে ২০১২ সালের মে পর্যন্ত ঢাকার মিরপুরে ৬ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার এবং ২০১২ সালের মে থেকে ২০১২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কুমিল্লায় ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিএসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্ণিত সময়ে চট্টগ্রাম বা কুমিল্লা সেনানিবাসে কোনো সমরাস্ত্র বা গোলাবারুদ চুরি বা হারানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, বর্তমান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ তাঁর দীর্ঘ, বর্ণাঢ্য সামরিক চাকরিজীবনে কখনোই কোর্ট মার্শালের সম্মুখীন হননি।’

আইএসপিআরের পরিচালক লেফট্যানেন্ট কর্নেল আলমগীর কবিরের স্বাক্ষরিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘চাকরিরত একজন সেনাবাহিনীপ্রধান সম্পর্কে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মতো একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির এরূপ দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা সেনাবাহিনীপ্রধানসহ সেনাবাহিনীর মতো রাষ্ট্রীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে জনসমক্ষে হেয় করার হীন অপচেষ্ট মর্মে স্পষ্টত প্রতীয়মান।’

আইএসপিআরের বক্তব্যে বলা হয়, ‘ডা. জাফরুল্লাহর দায়িত্বজ্ঞানহীন অসত্য বক্তব্য কেবল সেনাবাহিনীপ্রধান হিসেবে জেনারেল আজিজ আহমেদের সুনাম ও সামাজিক অবস্থানকে ক্ষুন্ন করেনি, বরং তা সেনাবাহিনীপ্রধানের পদকে চরমভাবে হেয়প্রতিপন্ন করেছে, যা প্রকারান্তরে সেনাবাহিনীর চাকরিরত সব সদস্যকে বিভ্রান্ত করেছে এবং তাঁদের মনোবলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ ছাড়া এরূপ অপপ্রচার সেনাবাহিনীর মতো সুশৃঙ্খল বাহিনীর সংহতি ও একতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত।’

এর প্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলন করেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সময় টেলিভিশনের টকশোতে আলোচনাকালে আমি দেশের বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সম্পর্কে অসাবধানতাবশত একটি ভুল তথ্য উল্লেখ করেছিলাম। জেনারেল আজিজ একজন দক্ষ আর্টিলারি সেনা কর্মকর্তা। তিনি চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ‘জিওসি’ ছিলেন না, ‘কমান্ডেন্ট’ও ছিলেন না। তিনি তার কর্মজীবনের একসময় চট্টগ্রাম সেনাছাউনিতে আর্টিলারি প্রশিক্ষক ছিলেন।’

দুঃখপ্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘জেনারেল আজিজের সম্মানহানি করার কোনো চিন্তা বা উদ্দেশ্য আমার ছিল না। জেনারেল আজিজকে আমি অসাবধানতাবশত কোনো মনোকষ্ট দিয়ে থাকলে সে জন্য আমি পুনরায় আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি।'



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ