Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিচারক অপসারণ আইন সংসদ-বিচার বিভাগ মুখোমুখি দাঁড়াবে না -খায়রুল হক

প্রকাশের সময় : ২৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক বলেছেন, বিচারপতিদের অপসারণ আইন মন্ত্রিসভায় অনুমোদনে জাতীয় সংসদ ও বিচার বিভাগকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর কোনো কারণ নেই। বরং বিচারকদের জবাবদিহিতার জন্যই এ আইন তৈরি করা হচ্ছে। দুই একটি দেশ ছাড়া পৃথিবীর সব দেশে বিচারকদের জবাবদিহিতার বিষয়টি রয়েছে। আমাদের দেশের বিচারকরা আইনের ঊর্ধ্বে নন। সংসদ সদস্যদের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। এ আইনের মাধ্যমে বিচারকদের স্বাধীনতা ক্ষুণœ হবে না। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় আইন কমিশনের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক বলেন, জাতীয় সংসদ সদস্যদের প্রতি আমাদের আস্থা রাখতে হবে।
কেননা একজন বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পর সংসদ সদস্যরা প্রথমে শুধু অভিযোগের বিষয়ে মতামত দেবেন। এ ক্ষেত্রে অধিকাংশের মতামত লাগবে। আর তদন্ত করবেন সাবেক একজন বিচারপতির নেতৃত্বে তিনজন। যার একজন হবেন অ্যাটর্নি জেনারেল অপরজন দেশের বিশিষ্ট নাগরিক। সংসদ সদস্যরা বিচারকদের ওপর ক্ষুব্ধ থাকলে বিচারকরা বিব্রত অবস্থায় পড়তে পারেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব সংসদ সদস্য তো পাগল না। সবাই যদি পাগল হয়ে সিদ্ধান্ত নেন। তাহলে আমরাও পাগল হয়ে যাব। সংসদ সদস্যদের প্রতি আমাদের আস্থা রাখতে হবে। এ ছাড়া বিকল্প কী করার আছে? তিনি বলেন, জনগণের কাছে সকলের দায়বদ্ধতা আছে। এ চিন্তা ১৯৭২ সালের সংবিধানের ৯৬-এর পক্ষে মতামত দিয়েছি। এখন এটা যদি জনগণ, বিচারক ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয় তাহলে আমার সাকসেস। আর যদি না হয় তাহলে দোষটা আমাদেরই। একমাত্র প্রেসিডেন্ট ছাড়া কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, সবারই জবাবদিহিতা থাকা উচিত। বিচারকদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ এলে স্বচ্ছতার মাধ্যমে তদন্ত করা উচিত। এজন্য একজন প্রধান বিচারপতিকে প্রধান করে রাজনৈতিক চিন্তার বাইরের লোক দিয়ে তদন্ত করা হবে। তিনি বলেন, তবে এখনো পর্যন্ত আমাদের বিচারকদের দুদকে যেতে হয়নি। এটা আমাদের বিশাল অর্জন। আমি আশা করি, ভবিষ্যতেও যেতে হবে না। তবে একটা আইন থাকা দরকার, তাই এই আইন করা। তিনি বলেন, একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান বিচারপতি বলতে পারেন না যে, এভাবে রায় দেন। কেননা সব বিচারক স্বাধীন। এ খসড়ায় প্রধান বিচারপতি মতামত দেননি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,সংবাদপত্র মারফত জেনেছি।
খসড়াটি সুপ্রিম কোর্টের জজদের কাছে দেয়া হয়েছে। তারা মতামত দিয়েছেন কি দেননি সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবো না। তবে তিনি বলেন, সবাইর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করলে তো ক্ষতি নেই। আর আলাপ করতেই হবে এটাও ঠিক নয়। তবে আলাপ করলে ক্ষতি কী। যত বেশি আলাপ হবে ততো নতুন কিছু বেরিয়ে আসবে। বিচারপতি খায়রুল হক বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও শাস্তি পাবেন না এটা কিভাবে সম্ভব এ বিষয়ে তিনি বলেন, দুই-তৃতীয়াংশ ভোট না হলে অপসারণ হবেন না। তবে অভিযোগকারী চাইলে পুনরায় সাধারণ আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। জজ অপসারণ উদ্দেশ্য নয়, উদ্দেশ্য তদন্ত। আশা করি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠবে না। এটা আমার বিশ্বাস। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক এম শাহ আলম। এর আগে গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণ খসড়া আইন পাস করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিচারক অপসারণ আইন সংসদ-বিচার বিভাগ মুখোমুখি দাঁড়াবে না -খায়রুল হক
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ