পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী জাতীয় নেতা শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের ৫৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
জাতীয় এ নেতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা আগামী প্রজন্মের জন্য অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।
আবদুল হামিদ বলেন, অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শেরে বাংলা এ অঞ্চলের মানুষের শিক্ষা, রাজনীতি, সমাজ সংস্কারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন।
তিনি বলেন, বাংলার শোষিত ও নির্যাতিত কৃষক সমাজকে ঋণের বেড়াজাল থেকে মুক্তির লক্ষ্যে তাঁর উদ্যোগে গঠিত ‘ঋণ সালিশি বোর্ড’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বঙ্গীয় চাকরি নিয়োগবিধি, প্রজাস্বত্ব আইন, মহাজনি আইন, দোকান কর্মচারী আইন প্রণয়নের ফলে এ অঞ্চলের অবহেলিত কৃষক-শ্রমিক উপকৃত হন। এ দেশের কৃষক শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে এ কে ফজলুল হক-এর অবদান জাতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।
বাণীতে আবদুল হামিদ বলেন, তিনি ছিলেন উপমহাদেশের এক অসাধারণ প্রজ্ঞাবান রাজনীতিবিদ। ফজলুল হক কলকাতার মেয়র, অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, পূর্ব বাংলার গভর্নরের পদসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
প্রেসিডেন্ট বলেন, শেরে বাংলা ছিলেন অসাধারণ মেধাবী ও বাগ্মী। তিনি একাধারে বাংলা, ইংরেজি ও উর্দু ভাষায় অনর্গল বক্তৃতা করতে পারতেন। প্রায় অর্ধ-শতাব্দীর অধিককাল তিনি গণমানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন।
বাণীতে আব্দুল হামিদ শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের বিদেহী রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
জাতীয় এ নেতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলার গরীব-দুঃখী মানুষের জন্য শেরেবাংলার অসীম মমত্ববোধ এ দেশের মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হককে বাংলার কৃষক ও মেহনতি জনতার অকৃত্রিম বন্ধু আখ্যায়িত করে মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বাণীতে তিনি বলেন, শেরেবাংলা এদেশের কৃষকদের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলনের ফলেই দেশে প্রজাস্বত্ব আইন প্রতিষ্ঠিত হয়। বাঙালি কৃষক সমাজ সামন্তদের শোষণ থেকে মুক্ত হয়।
শেখ হাসিনা মহান আল্লাহর দরবারে তাঁর রুহের মাগফিরাত করেন।
এদিকে, শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে দেয়া এক বাণীতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, আমাদের জাতীয় ইতিহাসে শেরে বাংলা ফজলুল হক ছিলেন এক অনন্য প্রতিভার অধিকারী। স্বাধীনতার চেতনা ও গণতান্ত্রিকবোধ সৃষ্টিতে তার অসামান্য অবদানের কথা এ দেশের মানুষের মন থেকে কোনোদিনই বিস্মৃত হবে না। দেশ এবং জাতির কল্যাণে অবদানের জন্য ইতিহাসের পাতায় তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
খালেদা জিয়া বলেন, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এ দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সোচ্চার ছিলেন। ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার জন্য তিনি ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। ঋণ সালিশি বোর্ড গঠনের মাধ্যমে এ দেশের কৃষকদের ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে উদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছিলেন। প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়নের মাধ্যমে তিনি ভূমির ওপর এ দেশের কৃষক সমাজের অধিকার আদায়ে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেন।
মৃত্যুবার্ষিকীতে মহান এ নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন খালেদা জিয়া।
অপর এক বার্তায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ দেশের মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অবদানের কথা কোনোদিনই ভুলবার নয়। ব্রিটিশদের অমানবিক, অন্যায় ও চাপিয়ে দেয়া কঠোর নিয়ম-কানুনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে ইতিহাসে অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। এ দেশের কৃষক সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন তার একটি যুগান্তকারী ও ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
তিনি বলেন, ফজলুল হক ছিলেন বহুগুণে গুণান্বিত অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী একজন মহান ব্যক্তিত্ব। স্বাধিকার ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে তিনি এ দেশের মানুষকে যে দীক্ষা দিয়েছিলেন সেটির পথ ধরে চলতে গিয়েই আমরা বিশ্বদরবারে এখন সাহসী জাতি হিসেবে বিবেচিত। দেশ এবং জাতির কল্যাণে অবদানের জন্য তিনি ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন।
এদিকে, জাতীয় নেতা শেরেবাংলার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালন করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ উপলক্ষে আজ সকাল সাড়ে ৭টায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মরহুমের মাজারে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ ও তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
অপরদিকে, এ উপলক্ষে নেতার জন্মভূমি বরিশালের সাতুরিয়া গ্রামে ব্যাপক কর্মসূচী পালন করছে ‘শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক রিসার্চ ইনস্টিটিউট’। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, কোরআনখানি, দোয়া ও মিলাদ, শিক্ষার্থীদের মধ্যে টিশার্ট এবং বই বিতরণ। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডা. আজিজ রহিম। এছাড়াও টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেবেন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা যুক্তরাজ্য প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার এ কেএম রেজাউল করিম। বিশেষ অতিথি রাজাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো: মনিরুজ্জামান, কাউখালি উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আহসান কবির, ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম উজ্জল তালুকদার, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাজী এনায়েতুর রহমান বাচ্চুসহ অন্যান্যজনরা। সভাপতিত্ব করবেন শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক রিসার্চ ইনস্টিটিউট চেয়ারম্যান কে এম আব্দুল করিম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।