Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের শিলংয়ে বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

বিশেষ সংবাদদাতা, কক্সবাজার | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০১৮, ৭:৩৪ পিএম

ভারতের শিলংয়ে নির্বাসিত বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব সালাহ উদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারী করেছে কক্সবাজারের আদালত।

একই সাথে মন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ও দলীয় ২২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তৌফিক আজিজ এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন।

জানাগেছে, ২০১১সালের ৪জুন সরকারি কর্তব্যকাজে বাঁধা, সরকারি গাড়ি ভাংচুর ও জনসাধারণ চলাচলে বাঁধা দেয়ায় কথিত নাশকতার অভিযোগে চকরিয়া থানা পুলিশের তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এস আই) মো. ইয়াছিন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করে।

কক্সবাজার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহজাহান নুরী এ তথ্য নিশ্চিত হওয়াগেছে।

তিনি আরও বলেন, যাদের বিরুদ্ধে আদালতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারী করা হয়েছে তারা হলেন, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, মনজুর আলম, মো. সেলিম উল্লাহ প্রকাশ রাইফেল সেলিম, সাইফুল ইসলাম, মৌলভী রফিক আহমদ, আজিজুল হক, হেফাজতুর রহমান টিপু, আহসানুল কাদের সাব্বির, ইমরুল হাসান হান্নান, জাহাঙ্গীর, জিয়াবুল কবির, জসিম উদ্দিন প্রকাশ কানা জসিম, সাইফুল ইসলাম, ইব্রাহিম খলিল কাকন, জয়নাল, আলী হোসেন প্রকাশ আজাদ।

মামলায় ওই ১৬জনসহ রুবেল বড়ুয়া, নুরুল আমিন, আবদুর রহিম, জালাল উদ্দিন ও মো. বাবুল ছাড়াও আরো একজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ গঠন করা হয়েছে বলেও জানান শাহজাহান।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ২০১১ সালে ৩ জুন সরকারি কর্তব্যকাজে বাঁধা দেয়ার দায়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়, যার থানার মামলা নম্বর ৪/২০১১।সে সময় ইউপি নির্বাচন চলছিল। ৩জুন বিকেল সাড়ে ৪টায় উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউপির চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর রাজারবিল ব্রীজের উত্তর পাশে মালেক ড্রাইভারের বাড়িতে উঠান বৈঠক করে।

বৈঠক শেষে বাড়ি ফেরার পথে রাজারবিল নয়াপাড়া ব্রীজের কাছাকাছি পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে একই ইউনিয়নের বিএনপি প্রার্থী আজিজুল হকের সমর্থনে দেড়-দুই হাজার লোক ব্রীজের কাছাকাছি এসে গিয়াস উদ্দিন ও তার লোকজনের উপর হামলা করে। দু’পক্ষে মুখোমুখি হলে খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ব্রীজ এলাকায় এসে উভয়পক্ষকে ঘটনাস্থল থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।এতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তার লোকজন নিয়ে সরে গেলেও বিএনপির সালাহ উদ্দিন ও তার লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপের পর হামলা চালায়। ওই সময় তিন পুলিশ আহত হয়। এতে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের মোটরসাইকেল ভাংচুর করে।পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে টিপু, জিয়া ও জয়নাল নামের তিনজনকে আটক করা হয়।

ওসি বখতিয়ার আরও বলেন, এ ঘটনার জের ধরে বিএনপির লোকজন ওইদিন রাতে ফাঁসিয়াখালী ভেন্ডিবাজারস্থ চট্রগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে ব্যাপক গাড়ি ভাংচুর চালায়।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে ছুটে যাওয়া কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাড়ি ভাংচুর ও সঙ্গে থাকা পুলিশকে মারধর করে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালায়। হামলায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়।এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ইমরুল, রুবেল ও রফিক নামের তিনজনকে আটক করা হয়। তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরকসহ নাশকতায় ব্যবহ্নত বিভিন্ন সরঞ্জাম ও দ্রুত গতির গাড়ি জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় ৪/১১মামলাটি নথিভুক্ত করা করা হয়।

কক্সবাজার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এপিপি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইকবালুর রশিদ আমিন সোহেল বলেন, ২০১২সালের ৪ ডিসেম্বর ওই মামলায় সালাহ উদ্দিন আহমেদসহ ২২জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।সে সময় ২১জন জামিনে ছিলেন। কিন্তু পরে আদালতে হাজিরা না দেয়া ও আসামীপক্ষের বারবার সময়ের আবেদনের কারণে বিচার বিলম্বিত হয়। বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হলে বিচারক তৌফিক আজিজ অভিযুক্ত ২২জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের নির্দেশ দেন এবং ১৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারী করেছেন।

মামলায় অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী ও জেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না বলেন, সালাহ উদ্দিন ভারতে কারান্তরীণ রয়েছে। এ কারণে অভিযুক্তদের পক্ষথেকে বৃহস্পতিবার সময়ের আবেদন করা হয়।কিন্তু আদালত সময়ের আবেদন গ্রহণ করেনি।

সালাহ উদ্দিনসহ ওই মামলার ২২জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গঠন এবং ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালত পরোয়ানা জারী করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ