পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অনতিবিলম্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করে বিএনপি চেয়ারর্পাসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের অধ্যাপক আবদুল জলিল চৌধুরী ও সহযোগী অধ্যাপক বদরুন্নেছা আহমেদকে রেখে নতুন করে ৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করতে বলা হয়েছে। গতকাল বৃহষ্পতিবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে প্রয়োজন হলে এই বোর্ডের অনুমোদন সাপেক্ষে খালেদা জিয়া বিএসএমএমইউ হাসপাতালের বাইরের পছন্দমতো কোনো চিকিৎসক দেখাতে পারবেন। একইসঙ্গে এই বোর্ডের তত্বাবধানে খালেদা জিয়া তার পছন্দমতো ফিজিওথেরাপিষ্ট, গাইনোলজিষ্ট ও মেডিকেল টেকনিশিয়ান নিতে পারবেন।
এই আদেশ দ্রুত বাস্তবায়নে সরকার, কারা কর্তৃপক্ষ ও বিএসএমএমইউ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রে তার মর্যাদার দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে।
আদালত বলেছেন, বিএসএমএমইউর দুই চিকিৎসক ছাড়াও অপর তিনজনের কেউই আওয়ামী লীগপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও বিএনপিপন্থীদের সংগঠন ড্যাবের বর্তমান বা অতীত সদস্য সমর্থক হতে পারবেন না।
আদালত মূল নির্দেশনার আগে আদেশে কিছু পর্যবেক্ষণ দেন। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, এটা সত্য যে খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি ইউনাইটেড বা অ্যাপোলো’র মতো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। তিনি পছন্দমতো চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা নিতে চান। তার পছন্দ অনুযায়ী চিকিৎসার সুবিধা দেয়া বিবেচনার দাবি রাখে। তবে বাস্তবতা হলো তিনি যেহেতু সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দি। তাই আইনগতভাবে তাকে সরকার বা কারা কর্তৃপক্ষের তত্বাবধানেই চিকিৎসা নিতে হবে।
পর্যবেক্ষণে আরো বলা হয়, সরকার তা চিকিৎসার জন্য বিএসএমইউ হাসপাতালের ৫ জন চিকিৎসক নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে। এই মেডিকেল বোর্ডের তিনজন সদস্যের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ করেছেন যে তারা স্বাচিবের নেতা। তাদের মাধ্যমে সঠিক চিকিৎসা পাবেন না বলে তাদের সন্দেহ। তবে আমরা বিশ্বাস করি যে একজন চিকিৎসক তিনি যে দলেরই সমর্থক হন না কেন, যখন তিনি চিকিৎসা দেন তখন তার দলীয় চিন্তা থাকে না। একজন রোগীকে রোগী হিসেবেই চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।
আদালত আরো বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের দেশের চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলীসহ সকল পেশাজীবীরা আজ প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলে বিভক্ত। কেউ আওয়ামী লীগ সমর্থক আবার কেউ বিএনপি সমর্থক। তবে আমরা বিশ্বাস করি যে, পেশাদারিত্বের ক্ষেত্রে বা পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তারা এসব রাজনৈতিক বিভক্তির উর্ধ্বে থাকেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় পেশার নীতিই অনুসরণ করেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী । এসময় উপস্থিত ছিলেন আবদুল বাসেত মজুমদার, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জয়নুল আবেদীন, মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদল, কামরুল ইসলাম সজল, রাগিব রউফ চৌধুরী, এহসানুর রহমান, আতিকুর রহমান, ফাইয়াজ জিবরান প্রমুখ।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এর আগে দেশের বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। গত ৯ সেপ্টেম্বর রিটটি দায়ের করা হয়। যার ওপর গত মঙ্গল ও বুধবার শুনানি হয়। এ বিষয়ে আদেশের জন্য সময় নির্ধারণ করেন আদালত।
আপিল শুনানি মুলতবি: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে করা আপিলের শুনানি রোববার পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন এ জে মোহাম্মদ আলী। এসময় উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন প্রমুখ। দুদক পক্ষে খুরশিদ আলম খান। এর আগে গত ১২, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৯, ৩০, ৩১ জুলাই, ৮ ও ১৩ আগস্ট মোট ১৫ দিন খালেদা জিয়ার আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি হয়। এ মামলায় খালাস চেয়ে খালেদা জিয়ার আপিলসহ মোট চারটি আবেদনের ওপর শুনানি হবে। খালেদা জিয়ার আপিল ছাড়াও এ মামলায় শুনানির অপেক্ষায় থাকা আরো তিনটি আবেদন হলো- খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে করা দুদকের আবেদন।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।