পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পলাশ মাহমুদ : জ্বালানির দাম বাড়লেই বাড়ানো হয় পরিবহন ভাড়া। গত ২৯ বছরে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ১১ বার। এর মধ্যে ২বার ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত হলেও তা কার্যকর হয়নি। বর্তমান সরকারের ৭ বছরে ৭ বার ভাড়া বাড়ানো হলেও কমানো হয়নি একবারও। গত রোববার থেকে জ্বালানির (ডিজেল) মূল্য লিটার প্রতি ৩ টাকা কমানো হয়েছে। কিন্তু এবার ভাড়া কমানোর কোন উদ্যোগ নেই। ফলে ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। ভাড়া কমানো হবে এমন আকাক্সক্ষা সাধারণ যাত্রীদেরও।
কিছুদিন পূর্বে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তেলের দাম কমলে আনুপাতিকহারে ভাড়া সমন্বয় করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু মন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নেও এখনো কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকা শহরে প্রায় অর্ধেক পরিবহন চলে তেলে। ফলে তেলের দাম কমার সাথে সাথে ভাড়া সমন্বয় করা উচিৎ। কিন্তু এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেই।’
এ দিকে সমিতির পক্ষ থেকে ভাড়া সমন্বয় করার দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল এক বিবৃতিতে সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সাথে সাথে গণ পরিবহনগুলো যাত্রী সাধারণের কাছ থেকে বর্ধিত ভাড়া আদায় করে থাকে। তবে গত রাতে জ্বালানি তেলের মূল্য কমানো হলেও দেশের কোন গণপরিবহনে ভাড়া ১ পয়সাও কমানো হয়নি। সংগঠনের পক্ষ থেকে গণপরিবহনের ভাড়া কমানোর জন্য জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়।’ ভাড়া কমানোর দাবিতে সমিতির পক্ষ থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
বর্তমানে ঢাকা শহরে বাস, হিউম্যান হলার, অটো-সিএনসি মিলে যাত্রীবাহী গণপরিবহনের সংখ্যা রয়েছে প্রায় ২ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার গণপরিবহন চলে তেলে। ফলে তেলের দাম কমার সাথে সাথে এসব পরিবহনের ভাড়া কমানো যৌক্তিক। কিন্তু এ বিষয়ে ভাড়া নির্ধারনি সংস্থা ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ’ (বিআরটিএ) এখনো কোন উদ্যোগ নেয়নি।
এ বিষয়ে জানতে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি মিটিং এ আছেন বলে জানান তার একান্ত সচিব মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। তবে আব্দুর রাজ্জাক জানান, ভাড়া কমানোর বিষয়ে এখনো কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কি না তা তার জানা নেই।
গতকাল (সোমবার) রাজধানীর গাবতলী বাসটার্মিনাল এবং নগরীর অভ্যন্তরে চলাচলকারী বাস চালকদের সঙ্গে কথা বললে তারা সবাই ভাড়া কমানোর সম্ভাবনা নেই বলে জানান। ডিজেলের দাম কমায় ভাড়া কমানো হবে কিনা জানতে চাইলে, ট্রাকের মালিক সবুজ বলেন, ভাড়া কমানোর কি হইছে? দাম কমেছে লিটার প্রতি মাত্র ৩ টাকা। এর থেকে ভাড়া কি কম নিবো?’ গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ি রুটে চলাচলকারী ২২নং বাসের চালক আনোয়ার বলেন, ভাড়া কমবো ক্যামনে? তেলের দাম যা কমছে তাতে ভাড়া কমানো যাইবো না।’
হানিফ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার সঞ্জিব বাবু গণমাধ্যমকে, ‘ভাড়া কমবো কি, এমনিতেই তো আমরা কম নেই। নতুন করে আর কি কমবো, ডিজেলে দাম কমায়ছে ৩ টাকা। এ দিয়ে কি লাভ হইবো?’ তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় গাড়ি চালালে ব্যবসা থাকতো না। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘বরিশালের ন্যূনতম ভাড়া ৫২০ টাকা। নরমাল বাজারে আমরা বিক্রি করি ৪৫০ টাকা। এখন ৪০০ টাকায় বিক্রি করেই যাত্রী পাচ্ছি না। ট্রিপ চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। সরকার যে ৩ টাকা কমাইছে, এতে ভাড়া কমবে না। কমানোর কোনো যৌক্তিকতাও নেই’।
বাসের ভাড়া বাড়ানো বা কমানোর সিদ্ধান্ত নির্ভর করে ১৮টি উপাদানের উপরে। এর মধ্যে শ্রমিকের মজুরি, যন্ত্রাংশের মূল্য বাড়া-কমা, ঘাট খরচ ইত্যাদি রয়েছে। তবে মূখ্য বিষয় হচ্ছে জ্বালানির মূল্য। মূলত পরিবহন ভাড়া বাড়ানো বা কমানোর সিদ্ধান্ত ৭০ ভাগ নির্ভর করে জ্বালানির মূল্যের উপর। সেকারণে জ্বালানির মূল্য বাড়লে অন্য সব ঠিক থাকলেও ভাড়া বাড়ানো হয়। কিন্তু অন্য সব ঠিক থেকে জ্বালানির মূল্য কমলে আর ভাড়া কমানো হয় না।
এ বিষয়ে কথা বলছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি দেশের বাইরে আছেন বলে সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
তবে সংস্থার এক কর্মকর্তা সালাউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা টিভিতে দেখেছি। এখনো বিষয়টি পুরো জানি না। বাসের ভাড়া কমবে কি-না, সেটা মিটিং করেই জানানো হবে’।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৮ সালে ২৮ অক্টোবর ডিজেলের মূল্য ৫৫ টাকা থেকে কমিয়ে ৪৮ টাকা করা হয়। সাত টাকা মূল্য কমায় ভাড়া কমে সাত পয়সা। এরপর ২০০৯ সালের ১২ জানুয়ারি ডিজেলের মূল্য আবার ৪৮ টাকা থেকে কমিয়ে করা হয় ৪৪ টাকা। তখন ভাড়া কমে ৪ চার পয়সা। তবে এ সিদ্ধান্ত কাগজে কলমে ছিল বলে জানান সমিতির মহাসচিব।
তেলের দাম কমানোয় ভাড়া কমানো হবে এমন আকাক্সক্ষা যাত্রীদের। তবে তা আসলে হবে কিনা তা নিয়ে যাত্রীরা সন্দিহান। গতকাল দুপুরে ফার্মগেট থেকে মতিঝিলগামী যাত্রী আবু সাইদ বলেন, ‘তেলের দাম কমলে কি হবে? যাত্রীদেরতো কোন লাভ নাই। ভাড়া কমবে বলে মনে হয়। আসলে সরকারের প্রভাবশালীরাই তো পরিবহনের মালিক। তাহলে কমাবে কে?’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।