Inqilab Logo

রোববার, ২৩ জুন ২০২৪, ০৯ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও স্বাধীনতা নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ ‘হিন্দুত্ববাদের’ পাঠ্যসূচি -ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও ইমামগণ

প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : পাঠ্যসূচিতে ইসলাম মুসলমানদের বিষয়সমুহ বাদ দিয়ে হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদ সংযোজনের বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইমাম সংগঠনের এবং ইসলামী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, যারা পাঠ্যসূচিতে হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদ সংযোজন করেছে তারা দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নিতে হবে।
জমিয়ত নেতৃবৃন্দ
ধর্মহীন শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে যারা সমাজ পরিবর্তন, সামাজিক উন্নয়নের স্বপ্ন দেখেন তারা সম্পূর্ণ ভুলের মধ্যে আছেন বলে মন্তব্য করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশে এর নেতৃবৃন্দ। নেতারা বলেন, ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া নৈতিক চারিত্রিক উৎকর্ষতা কখনোই সম্ভব নয়। প্রকৃত মনুষত্ববোধ জাগ্রত করে ঘুণে ধরা এ সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য শিক্ষার সর্বক্ষেত্রে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। অন্যথায় দেশে এক কঠিন নৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
নেতারা বলেন শিক্ষানীতি ২০১০ সর্ম্পূণরূপে ধর্মহীন। তাই এর আলোকে কোন আইন এবং পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা হলে তা হবে ধর্মহীনতার চাদরে আবৃত। ধর্মহীন কোন শিক্ষা ব্যবস্থা জোর করে কেউ এদেশের সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিম জনগণের উপর চাপিয়ে দিতে চাইলে তার পরিণতি শুভ হবে না। অবিলম্বে ধর্মহীন শিক্ষানীতি ২০১০ ও শিক্ষা আইন ২০১৬ বাতিল না করলে ইসলাম প্রেমী তৌহিদী জনতা যে কোন কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।
গতকাল বিকালে পল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর জমিয়তের দায়িত্বশীলদের এক জরুরি সভায় নেতারা এসব কথা বলেন।
জমিয়তের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর জমিয়তের সভাপতি মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তৃতা করেন, মুফতি বশীরুল হাসান, মুফতি মাহবুবুল আলম, মাওলানা হেদায়েতুল ইসলাম, তোফায়েল গাজালি প্রমুখ।
ইমাম সমিতি
বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির সভাপতি আলহাজ মাওলানা কাজী আবু হোরায়রা ও মহাসচিব মাও. আবদুল মালেক নূরী বলেছেন পঁচানব্বই ভাগ মুসলমানের এদেশে শিক্ষা পাঠ্যক্রমে ইসলামী প্রবন্ধ গল্প ও কবিতার স্থলে হিন্দুত্ববাদের শিক্ষাক্রম চালু করা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বিশেষ। দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদসমূহে বসে যারা এসব করছে তার উদ্দেশ্য শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও হুমকির ইঙ্গিত বহন করে কিনা তা রীতিমত ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তানাহলে তারা এত বড় দুঃসাহস দেখালো কেমন করে।
ইমাম সমিতির নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন অবিলম্বে পাঠ্যসূচি দেশের ইসলামী ভাবাপন্ন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি করতে হবে। ব্রাহ্মন্যবাদী ও নাস্তিকদের বাদ দিতে হবে। তা নাহলে শাহজালাল শাহ্ পরান ও খান জাহান আলীর বাংলাদেশে মুসলমানরা গর্জে উঠবে। আমরা শান্তি চাই তাই অবিলম্বে দাবি মেনে নিন।
জাতীয় ইমাম সমাজ
দেশের বৃহৎ ইমামদের সংগঠন জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশ এর উদ্যোগে গতকাল সংগঠনটির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক বিশেষ জরুরি সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা বলেন এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে পঙ্গু করাসহ রাষ্ট্রের শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার জন্য এবং মুসলিম কঁচি কাঁচা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অনৈসলামিক ধর্মহীনতা ও নাস্তিকতার বীজ বপন করার লক্ষ্য একটি ইসলাম বিদ্বেষী কুচক্রীমহল তাদের জঘণ্য অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। বক্তারা বলেন, ইসলাম বিদ্বেষী প্রভূদের খুশি করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলামী ইতিহাস সম্বলিত ঘটনাবলী ও ধর্মীয় বিষয়াবলীকে বাদ দিয়ে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে অনৈসলামিক কল্পকাহিনী ও ভিন্ন ধর্মীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটনো হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের ইসলাম শিক্ষা বইয়ের কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন অংশকে বিকৃত করা হয়েছে। এর জবাব চাই, জবাব দিতে হবে।
বক্তারা বলেন, এই হীন কর্মকা-ের মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, এই রাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থা আজ ধর্মহীন ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিকদে গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার।
বক্তারা অনতিবিলম্বে শিক্ষা কমিশন প্রধান, জাতীয় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নকারী ও এ সংশ্লিষ্ট সকলের পদত্যাগ দাবি করে এবং এদেশের সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য ইসলামী ব্যক্তিত্বদের সমন্বয়ে জাতীয় শিক্ষা কমিশন পুনঃগঠনের দাবি জানান। যদি এমতাবস্থায় চলতে থাকে তাহলে ৯২ ভাগ মুসলিম অধ্যূষিত ও রাষ্ট্রের ভবিষ্যত প্রজন্ম ধর্মীয় অনুভূতিশূন্য, জ্ঞানহীন ও ইসলাম বিদ্বেষী জাতিতে পরিণত হবে। যা কোন মুসলমান কখনোই বরদাস্ত করতে পারে না। অন্যথায় জনগণকে সাথে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য করা হবে। সভাপতি মাও. ক্বারী আবুল হোসাইন, মহাসচিব, মাও. মুফতি মিনহাজ উদ্দিন, মাও. নূরুদ্দিন লাহোরী, মাও. বেলায়েত ফিরোজী, মুফতি সাইফুল ইসলাম, মাও. আহল্লাহ ওয়াসেল, মাও. আনওয়ারুল হক, মাও. তাসলিম আহমেদ, মাও. আ. হক, মাও. শামসুল হক, মাও. জোবায়ের আহমদ, মাও. হামিদুল হক, মাও. শহিদুল আনোয়ার, মাও. আ. মাজীদ, মাও. রহমতুল্লাহ, মাও. এমদাদুল হক সাইফী, হাফেজ হারুন প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ