এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের নারীরাও
আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। লিঙ্গ সমতার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিনটি
সাদিয়া তাসু
জীবন ধারনের ভার কাঁধে নিয়ে মানুষ ছুটতে ছুটতে এক সময় তার মন ও শরীর ভীষণ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তখন শুধু মনে হয় সবকিছু ছুড়ে ফেলে দিয়ে অনেক দূরে কোথাও পালিয়ে যাই। দু’দ- শান্তির আশায় চাই ¯িœগ্ধ শীতল আরামদায়ক বিশ্রাম। পালিয়ে না গিয়ে ক্লান্তির মোকাবিলা করতে সারাবেলার টিপসগুলো মেনে নেয়াই কিন্তু বুদ্ধিমানের কাজ। ক্লান্তি একরকম ব্যাধির মতো, এটা এক একজন মানুষের মনগড়াও হতে পারে, আবার পরিবেশও আপনার ক্লান্তির কারণ হতে পারে। কেউ কেউ আবার অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। ক্লান্তি দূর করার জন্য সারাবেলার কিছু টিপস জানানো হলো।
১) জরুরি কাজের একটা তালিকা তৈরি করে নিতে হবে। যে কাজগুলো কাল করতে হবে তা আজই তালিকা তৈরি করুন। অফিস ছুটির আগেই কোনো মেসেজে থাকলে তা রিসেপশনে বুঝিয়ে দিন। গৃহিণীও তেমনি তালিকা তৈরি করুন।
২) খোলা জায়গায় অথবা জানালার পাশে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকুন কয়েক মিনিট। কয়েকবার জোরে জোরে লম্বা-লম্বা শ্বাস নিন এবং ছাড়–ন। এতে ক্লান্তি কেটে যাবে।
৩) সম্ভব হলে সকালে এবং রাতে ঘুমানোর আগে হালকা ব্যায়াম করে নিন। এতে আপনার শরীরে থাকবে শীতল সজিবতা কেটে যাবে ক্লান্তি।
৪) অপছন্দনীয় কাজ ফেলে রাখবেন না। এতে কাজ জমতে থাকবে, সব কাজই সময় আর নিয়ম মতো করলে আজকের ব্যস্ত ও গতিশীল জীবনে নারীর দায়িত্ব পালনে আপনিও পিছিয়ে পড়বেন না কখনোই।
৫) ঘন কালো মেঘে আকাশটা ছেয়ে গেছে। পরিবারের সবাই এক সাথে লংড্রাইভে বেরিয়ে পড়–ন। হতে পারে ময়নামতি অথবা ঢাকার বাইরে কোথাও। এতে সময় কাটানো হবে, ক্লান্তিও দূর হবে।
৬) ব্যায়াম করে এনার্জি বাড়াতে পারেন। যে ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরে অক্সিজেন ঢোকে বেশি, এমন ব্যায়াম ক্লান্তি কাটানোর জন্য আদর্শ।
৭) ক্লান্তি কাটানোর জন্য সবচেয়ে বেশি অবশ্যই বিশ্রাম প্রয়োজন। কিছুতেই ক্লান্তি না কাটলে ডাক্তার দেখান। হতে পারে আপনার শরীরে কোনো রোগ বাসা বেঁধেছে।
৮) সারাদিন কর্মব্যস্ত থেকে আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। বাড়িতে পার্টির আয়োজন করুন। আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা হবে। তাদের কৌশলাদি জানুন। এতে আপনার ক্লান্তি কেটে যাবে। তাদের সুখ-দুঃখ শুনে তাদের পাশে এসে দাঁড়ান। ৯) আপনার পছন্দের জিনিস কিনে আত্মীয়-স্বজন এবং প্রিয়জনদের উপহার দিন। এতে ভারি মনটা হালকা হবে। তবে অবশ্যই সামর্থ্য অনুযায়ী।
১০) মনটা বেশ ভারি মনে হচ্ছে। ডায়েরিটা খুলে নিন। অতীত জীবনের ফেলে আসা স্মরণীয় স্মৃতিগুলো দেখুন, মনটা হালকা হবে।
১১) ছাদে, ব্যালকনিতে, বাড়ির সামনে পরিত্যক্ত জায়গায় সবজির এবং ফুলের বাগান করুন। এতে পরিবারের সবজির চাহিদা মিটিয়ে আয়ও করতে পারেন। ফুলের সুগন্ধে পরিবেশ থাকবে শীতল ¯িœগ্ধ আমেজে আরামদায়ক সজিবতা।
১২) সারাদিন কর্মব্যস্ততার পর ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরলেন। হাত-মুখ ধুয়ে শরীর টান-টান রেখে সোজা হয়ে চোখ বন্ধ করে ১৫/২০ মিনিট শুয়ে থাকুন। এবার একগ্লাস লেবুর শরবত খেয়ে কিছুক্ষণ পর গোসল করে নিন।
১৩) দীর্ঘসময় ধরে চেয়ারে বসে কাজ করার সময় মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে বা বসে আস্তে আস্তে মাথা থেকে শরীর যতটা সম্ভব পিছনের দিকে বাঁকান। এভাবে ৮/১০ বার করুন। চেয়ারে হেলান দিয়ে হাত দুটো ২ পাশে ঝুলিয়ে পা দুটি টান টান করে সামনের দিকে দিন। এবার চোখ বন্ধ রাখুন কিছুটা সময়। শরীরটাকে ¯িœগ্ধ শিথিল করে নিন।
১৪) কোনো ঘটনা, দৃশ্য অতীতের কোনো স্মৃতি নিয়ে ক্লান্তি বোধ করছেন। সে সময় প্রিয়জনদের নিয়ে আড্ডা দিন অথবা অতীতের সুন্দর স্মরণীয় স্মৃতিগুলো চিন্তা করে দিবাস্বপ্ন দেখতে চেষ্টা করুন, ক্লান্তি কেটে যাবে।
১৫) ব্যালকনিতে এবং ফুলের টবে কীটনাশক স্প্রে করুন। ঘর সাজিয়ে গুছিয়ে রাখুন। স্বাচ্ছন্দ্যকর পরিবেশে ক্লান্তি সহজে মনে বাসা বাঁধতে পারে না।
১৬) আপনার আশপাশে রয়েছে অনেক শিশু। এরা ফুলের মতো। কিন্তু ফুটার সম্ভাবনা নেই। এদের অক্ষরজ্ঞান দান করে এদের অধিকার নিশ্চিত করুন। অথবা এদের একজনের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দায়িত্ব নিতে পারেন। এই দায়িত্ব নেয়ার ফুর্তিতে মনটা হয়ে উঠবে চনমনে।
১৭) ঘাড় আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করুন। তেল, ক্রিম অথবা পাউডার দিয়ে বৃত্তাকারে হাত ঘোরান। এতে বেশ ভালো আরামবোধ হবে। ক্লান্তি হবে দূর।
১৮) হাঁটার সময় সঠিক জুতো পরবেন। সারাদিনের হাঁটাহাঁটির পর পায়ের পাতা অবসন্ন হয়ে যায়। সে জায়গায় ক্রীম দিয়ে আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করুন। এতে ক্লান্তি কেটে আরাম বোধ হবে।
১৯) হালকা রঙের পোশাক পরবেন। শোয়ার ঘরটি গুছিয়ে রাখুন। বিছানা ও বালিশ পরিষ্কার এবং হালকা-পাতলা স্বাচ্ছন্দ্যকর, আরামদায়ক পোশাকেই সারাদিনের ক্লান্তি দূর হবে।
২০) নিজের প্রতি যতœ নিন। স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য নানা বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের দক্ষতা বাড়ান। এতে মন থাকবে হালকা-সতেজ।
২১) সারাবেলার কর্মব্যস্ততার মধ্যে কিছুটা সময় সুযোগ করে নিন। প্রিয়জনদের নিয়ে আড্ডা দিন, টিভি দেখুন, গান শুনুন, গান করুন। মুহূর্তেই কেটে যাবে ক্লান্তি, শরীরটা হয়ে উঠবে চনমনে।
২২) আপনি অনেক সময় ধরে একটানা ভারি কাজ করতে করতে আপনার শরীর-মন একেবারে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, কিছুক্ষণের জন্য কাজটা রেখে দিয়ে হালকা ধরনের কাজ করুন। এবার ফিরে যান আপনার আগের কাজে।
২৩) সারাবেলা কর্মব্যস্ততার পর যা রান্না হলো তাই খেতে হচ্ছে। অবসর সময় নিজের পরিবারের পছন্দের জিনিসগুলো রান্না করে প্রিয়জনদের নিয়ে খেতে পারেন। ফ্রিজে রাখতে পারেন।
২৪) নানা ধরনের বই পড়–ন । এতে অনেক কিছু জানতে পারবেন। এতে কোনো কিছুতেই ক্লান্ত হয়ে পড়বেন না।
ক্লান্তি আমাদের একটি বড় সমস্যা। কোনো ক্ষেত্রে না সারলে অনেক ক্ষেত্রেই উপরের এই টিপসগুলোর মাধ্যমে আমরা আমাদের শারীরিক ক্লান্তি ও মানসিক ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে পারি। মনে রাখবেন, হাসি-ঠাট্টা এবং আরামদায়ক বিশ্রাম ও ঘুম ক্লান্তি কাটাতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।