পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সংসদে পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল নিয়ে সম্পাদক পরিষদ যেসব উদ্বেগ ও দাবি জানিয়েছে, সেগুলো নিয়ে সরকার আরও আলোচনা করে তা নিরসনের উদ্যোগ নেবে। সম্পাদক পরিষদ আইনটির বিষয়ে যে আপত্তি ও প্রস্তাবনা দিয়েছে তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা এবং নতুন করে নেওয়া হবে। সম্পাদক পরিষদও আশা প্রকাশ করে বলেছে, তারাও মনে করে আলোচনার মাধ্যমে একটা গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে সরকারের তিন মন্ত্রী ও একজন উপদেষ্টার বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। আইন মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নয়টি ধারা নিয়ে সম্পাদক পরিষদের আপত্তির বিষয়টি মন্ত্রিসভায় আলোচনার জন্য তোলা হবে। মন্ত্রিসভায় আলোচনা করার পর আবারও তারা সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে বসবেন। আইনমন্ত্রী বলেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বেরিয়ে এসেছে এ রকম একটা আইন হওয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে, আমরা সেই ঐকমত্যে পৌঁছেছি। কিন্তু এ রকম একটা আইন যেন সাংবাদিকতার স্বাধীনতা বা বাকস্বাধীনতা ক্ষুন্ন না করে- সেই ব্যাপারে কিছু প্রশ্ন আছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আনিসুল বলেন, অন্যান্য ধারা নিয়ে কারও বক্তব্য নেই। আগামী ৩ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয়েছে, সেখানে অনেক এজেন্ডা আছে, হয়ত সেখানে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হবে না। এর পরে যে কেবিনেট মিটিং হবে সেখানে এটাকে আমি উপস্থাপন করব। এডিটরস কাউন্সিলের যে আপত্তিগুলো তা তুলে ধরব। আলোচনা করার জন্য যে টার্মস অব রেফারেন্স দেওয়া হবে সে অনুসারে আমরা আবার আলোচনায় বসার জন্য সম্মত হয়েছি। আইনমন্ত্রী বলেন, খবরের কাগজে সম্পাদক পরিষদের আপত্তিগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের বক্তব্য তথ্যমন্ত্রী এবং আইসিটি মন্ত্রীসহ আমরা মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করব। ২১ ধারাটা মোটামুটি আমরা এগ্রি করেছি, যেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে। কিছু যদি আরও ভালো করা যায় চিন্তা করা হবে।
সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আনাম জানান, বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২৫, ২৮, ২৯,৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা সম্পর্কে আপত্তি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। এসব ধারা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী। এসব ধারার বিরুদ্ধে আপত্তি ও কিছু সুপারিশ সরকারের তিন মন্ত্রীর কাছে লিখিতভাবে উপস্থাপন করেছি আমরা। আইনটির ২১ নম্বর ধারা সম্পর্কেও আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম তবে সরকারের ব্যাখ্যায় আমরা সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, এ ধরনের একটি আইন হোক তা আমরা চাই কিন্তু, তা যেন স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি না করে। সংসদে পাস হওয়া এ আইনটি বাতিল নয় আমরা সংশোধন চাই। সে কারণে এই আইনের বিষয়ে আমাদের আপত্তিগুলো আমরা লিখিত আকারে দিয়েছি। আইনটি সংসদে পাস হওয়ার আগে আমরা মন্ত্রণালয় ও সংসদীয় কমিটির সঙ্গে বসেছিলাম এবং অনেক পথ এগিয়েছিলাম। সংসদীয় কমিটির সঙ্গে দুই দফা আমরা বসেছি। তবে কথা থাকলেও তৃতীয় দফা আর বসা হয়নি। সংসদীয় কমিটি আমাদের সঙ্গে তৃতীয় দফা না বসে কেন আইনটি সংসদে পাস করেছে সেটা আমরা জানি না। মাহফুজ আনাম বলেন, যে আইনটি সংসদে পাস হয়েছে সেটা সংবিধানে বাক ও গণমাধ্যমের যে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, তার লঙ্ঘন করবে। এটি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও গণতন্ত্রেরও পরিপন্থী।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, আইনটির বিষয়ে সম্পাদক পরিষদ যে উদ্বেগ জানিয়েছে সেই উদ্বেগের বিষয়ে আমরা শ্রদ্ধাশীল। তাদের দেওয়া আপত্তিগুলো বোঝার চেষ্টা করেছি, লিপিবদ্ধ করেছি। তবে তাদের আপত্তিগুলো আরও পরিষ্কারভাবে বোঝার জন্য তাদের সঙ্গে আরও কয়েকবার বৈঠক করতে হতে পারে। সরকার মনে করে গণমাধ্যমের কর্মীদের নিরাপদ রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আইনটি সংসদে পাস হয়েছে। তবে প্রেসিডেন্টের দরবারে এটি এখনও যায়নি। প্রেসিডেন্টের সই না হওয়ায় আইনটি এখনও কার্যকর নয়। তবে দেশে ডিজিটাল অপরাধ বেড়ে গেছে। এসব এখন আপদ, বিপদ এবং উৎপাতে পরিণত হয়েছে। এর থেকে রক্ষা পেতেই এই আইন করা হয়েছে। সম্পাদক পরিষদ এ আইন নিয়ে যে উদ্বেগ ও আশঙ্কা জানিয়েছে তা দূর করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার। আইনটি নিয়ে সাংবাদিকরা বিভিন্ন প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যেহেতু বিষয়টি নিয়ে সরকার আরও বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাই এখনই কোনও মন্তব্য করা সমীচিন হবে না।
সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের নেতৃত্বে রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, প্রথম আলোর মতিউর রহমান, মানবজমিনের মতিউর রহমান চৌধুরী, ইনকিলাবের এ এম এম বাহাউদ্দীন, নিউ এইজের নুরুল কবীর, বাংলাদেশ প্রতদিনের নঈম নিজাম, যুগান্তরের সাইফুল আলম, কালের কণ্ঠের ইমদাদুল হক মিলন, , ঢাকা ট্রিবিউনের জাফর সোবহান, ইনডিপেনডেন্টের শামসুর রহমান, বণিক বার্তার দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, সমকালের মুস্তাফিজ শফিসহ আরও কয়েকজন এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান এবং দায়িত্ব প্রাপ্ত তথ্য সচিব আবুয়াল হোসেনও সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকে এর বিভিন্ন ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিল সম্পাদক পরিষদসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন। তাদের আপত্তির সুরাহা না করেই গত ১৯ সেপ্টেম্বর সংসদে ওই আইন পাস করা হয়। এই প্রেক্ষাপটে ‘বাক স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতার পরিপন্থি’ আইন প্রণয়নের প্রতিবাদে ২৯ সেপ্টেম্বর মানববন্ধনের কর্মসূচির ঘোষনা দেয় সম্পাদক পরিষদ। পরে রাজপথের কর্মসূচিতে না নামার অনুরোধ জানিয়ে সম্পাদক পরিষদকে চিঠি দেন তথ্যমন্ত্রী। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসূচি স্থগিত করে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নেয় সম্পাদক পরিষদ। ওই আইন নিয়ে বোববার বিএফইউজে ও ডিইউজে এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নেতাদের সঙ্গেও বৈঠকে করেছে তথ্যমন্ত্রী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।