পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভয়ংকর মরণব্যাধি জলাতঙ্ক, এ রোগে মৃত্যু অনিবার্য। জলাতঙ্কের কারনে পৃথিবীতে প্রতি ঘন্টায় ৬ জন মানুষের মৃত্যু ঘটে। বছরে প্রায় ৫৫ হাজার জন মানুষ জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ মানুষ কুকুর ও অন্যান্য প্রাণির আক্রমনের শিকার হয়ে থাকে। এতে বছরে সহস্রাধিক মানুষ জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় এবং এর পাশাপাশি অনেক গবাদি প্রাণি এ রোগে মারা যায়।
সংশ্লিষ্টদের মতে, আক্রমনকারী প্রাণীগুলোর মধ্যে রয়েছে কুকুর, বিড়াল, শিয়াল, বেজী, চীকা ও বানর অন্যতম। এসব প্রাণীর কামড়েরর ফলে মানুষ ও অন্যান্য গবাদীপশুর জলাতঙ্ক হয়ে থাকে। সরকারের সংক্রামক ব্যধী হাসপাতালের বার্ষিক পরিসংখ্যান অনুযয়ী, দিনে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ৬০০ থেকে ৮০০ লোক চিকিৎসা নিতে আসেন। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৭ সালে ৫০ জন রোগীর মৃত্যু ঘটে। বছরে গড়ে ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী মৃত্যুবরণ করে জলাতঙ্কে।
বাংলাদেশে জলাতঙ্কে আক্রান্তদের মধ্যে ৮৫ থেকে ৯৯ ভাগই কুকুরের কামড়ের শিকার হন। তবে পশু কামড়ালেই জলতঙ্ক হবে এমনটি ভাবার অবকাশ নেই। কারণ আক্রমনকারী পশুকে অবশ্যই জলাতঙ্কের জীবানু বাহক হতে হবে।
এদিকে আজ (শুক্রবার) বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। ২০০৭ সালে সর্বপ্রথম বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস পালিত হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘জলাতঙ্ক অপরকে জানান, জীবন বাঁচান’।
জানা গেছে, ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে জলাতঙ্ক মুক্ত করতে ২০১০ সাল থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক ব্যাধী শাখার (সিডিসি) উদ্যোগে প্রাণী সম্পদ মন্ত্রনালয় এবং স্থাণীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের সহযোগীতায় জাতীয় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রন কর্মসূচি চলমান রয়েছে। যা ২০১৭ সালে জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচিতে উন্নীত করা হয়। এই কার্যক্রমের ধারাবহিকতায় ২০১১ সাল থেকে জাতীয় পর্যায়ে ১টি এবং জেলা পর্যায়ে একটি জেলা জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রন ও নির্মূল কেন্দ্রসহ মোট ৬৭টি কেন্দ্র চালু করা হয়। এসব কেন্দ্র থেকে কুকুর কামড়ের আধুনিক ব্যবস্থাপণা এবং টিকা বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য জনবলের মাধ্যমে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বীনামূলে ১ লাখ ৮০ হাজার ইনজেকশন এবং দুই লাখ ৬৫ হাজার ২৭৫ জনকে প্রাণীর কামড়ের চিকিৎসা প্রদান করা হয়। সারাদেশে এ পর্যন্ত ১০ লাখের অধীক রোগীকে এ সেবা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিডিসি শাখার উদ্যোগে ২০১১ সাল থেকে ৬ দশমিক ৫ লাখের অধীক কুকুরকে টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের জেনেটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. উম্মে রুমান সিদ্দিকী বলেন, এ রোগে আক্রান্ত হলে মৃত্যু অনিবার্য। তাই সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। তিনি বলেন, কুকুর কামড়ানোর সাথে সাথে প্রাথমিক ভাবে কাপড় কাঁচা সাবান দিয়ে ক্ষত স্থান বার বার ধুয়ে ফেলতে হবে। এরপর যতদ্রুত সম্ভব টিকা দিতে হবে। অনেকই টিকার তিনটি ডোজ সম্পন্ন করে না। যে কারণে টিকা নেয়ার পরও অনেকের জলাতঙ্ক হয়। আমাদের গবেষণা মতে, দেশের ৭০ ভাগ কুকুরকে তিন রাউন্ড টিকা দিতে পারলে একশ ভাগ জলতঙ্ক মুক্ত হওয়া সম্ভব।
সামগ্রীক বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রন) প্রফেসর ডা. সানিয়া তাহমিনা বলেন, জলাতঙ্ক একটি অবহেলিত রোগ। এটি মূলতঃ মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে সে কারণে আক্রান্ত মানুষ পাগলের মতো আচরণ করে। ৮৫ ভাগ জলতঙ্ক রোগ গ্রামেই দেখা যায়। তিনি বলেন, আগে জলাতঙ্কের টিকার মান তেমন ভাল ছিল না, কিন্তু বর্তমানে উন্নত মানের টিকা থাকায় এ রোগে আক্রান্তের হার পূর্বের তুলনায় অনেক কমে এসছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।