পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুল (পিপিআর) অনুসরণ না করেই ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় লিনিয়ার এক্সিলারেটর (রেডিওথেরাপি মেশিন) কিনতে তৎপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ)। গত সোমবার এ সংক্রান্ত একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় আগামী ১ অক্টোবর চূড়ান্ত ক্রয়াদেশ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
জানা গেছে, দুই বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও নানা অনিয়মের অভিযোগে লিনিয়ার এক্সিলারেটর ক্রয়ের প্রক্রিয়া কয়েকবার পিছিয়েছে। টেন্ডার সংক্রান্ত অনিয়ম প্রসঙ্গে এ পর্যন্ত ৫ বার চিঠি দিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগীরা। ২০১৬ সালে ক্রয় প্রক্রিয়া শুরু হলেও এ পর্যন্ত দুবার টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রয় কমিটির দুর্নীতি পরায়ণ একটি গোষ্টি এসব করছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে। এই গোষ্ঠির একগুয়েমীর কারণে দূর্ভোগে রয়েছেন দেশের অংসখ্য দরিদ্র ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী।
বিএসএমএমইউ সূত্র জানায়, লিনিয়ার এক্সিলারেটর কিনতে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে টেন্ডার আহবান করে বিএসএমএমইউ। কিন্তু টেন্ডার মূল্যায়নে অনিয়মের অভিযোগের কারণেই জটিলতা শুরু হয়। অনিয়মের বিষয়টি জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সে সময় বেশ উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন তৎকালীন ভিসি প্রফেসর ডা. কামরুল হাসান খান। তদন্ত কমিটি অনিয়মের অস্তিত্ব পাওয়ায় পূর্বের টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করে পুৃনরায় টেন্ডার আহবানের সুপারিশ করে। সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর আবারও টেন্ডার আহবান করা হয়।
সূত্র জানায়, পুনরায় টেন্ডার আহবান করার পর টেন্ডারের সব শর্ত মেনে দেশের মাত্র দুটি কোম্পানী এতে অংশ নিতে সমর্থ হয়। এরমধ্যে একটি কোম্পানী সর্ব নিম্ন দরদাতা হিসাবে দরপত্রে উল্লিখিত শর্তপূরনে সক্ষম মেশিনের দাম প্রস্তাব করে ২১ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার। অপর দিকে অন্য কোম্পানীর প্রস্তাবিত দাম ২৬ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। অর্থাৎ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানটি ৪ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা কমে উন্নত মানের টেন্ডারের শর্ত পূরনে সক্ষম মেশিন সরবরাহ করার প্রস্তাব দেয়। অপেক্ষকৃত কম মূল্যে উন্নত মানের ক্যান্সার চিকিৎসরা মেশিন সরবরাহ করায় ক্যান্সার হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্যান্সার চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ওই কোম্পানী থেকে লিনিয়ার এক্সিলারেটর ক্রয় করে থাকে। কিন্তু বিএসএমএমইউ প্রশাসন অজ্ঞাত কারণে ৪ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা বেশি দিয়ে লিনিয়ার কিনতে আগ্রহী হয়ে ওঠে।
এতে করে অপেক্ষকৃত স্পল্পমূল্যে মেশন সরবরাহে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানটি ক্রয় কমিটিকে পিপিআর রুল অনুসারে ক্রয় কমিটিকে ক্লিনিক্যাল ভিজিটের আমন্ত্রন জানায়। এমনকি গত ৮ জুলাই টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় ক্রয় কমিটির চেয়ারম্যান এবং প্রধান প্রো-ভিসি শিক্ষা প্রফেসর ডা. শাহানা আক্তার রহমান এবং টেন্ডার মূল্যান কমিটির প্রধান প্রফেসর ডা. আহমেদ আবু সালেহ বরাবর অভিযোগ করে। এক্ষেত্রে টেন্ডারে অনিয়ম ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট এ্যাক্ট-২০০৬ এর ধারা-২৯ তৎসহ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুল-২০০৮ এর রুল ৫৬ ও ৫৭ সহ অধ্যায়-৩ এর পার্ট- ১২ তৎসহ টেন্ডার ডকুমেন্ট এর ধারা ১(৭০) অনুযায়ী লিখিত অভিযোগ দাখিল করে। যে অভিযোগের কপি সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রাপ্তিস্বীকারসহ গ্রহণ করেন। কিন্তু উল্লেখিত অভিযোগ দায়েরের পরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় কম দাম প্রস্তাবাকারী কোম্পানির পক্ষ থেকে একই অভিযোগ গত ১৯ জুলাই স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবর করা হয়।
খোজ নিয়ে জানান গেছে, ক্রয় প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন দুর্নীতি পরায়ন ব্যক্তি টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটি এবং কেন্দ্রীয় ক্রয় কমিটির চেয়ারম্যানকে ভুল বুঝিয়ে ৪ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা বেশি দামে লিনিয়ার ক্রয়ের বিষয়টি বুঝাতে সক্ষম হয়েছে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির সভায় আগামী ১ অক্টোবর বেশি দামে মেশিন ক্রয় করতে তাদের পচ্ছন্দের কোম্পানিকে ক্রয়াদেশ প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
কেন্দ্রীয় ক্রয় কমিটির চেয়ারম্যান ও প্রো-ভিসি (শিক্ষা) ডা. সাহানা আখতার রহমান জানান, এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। এক্ষেত্রে তিনি ভিসিকে ফোন দেয়ার কথা জানান।
সামগ্রীক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া জানান, খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা হবে। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে হতে পারে। আমাদের তদন্ত চলছে। যদি আগের টেন্ডারের বিষয়ে কোন অভিযোগ থাকে তাহলে সেটা বাতিল করে পুনরায় টেন্ডার দিয়ে মেশিনটি কেনার কাজ সম্পাদন করা হবে। আর অভিযোগ না থাকলে আগের টেন্ডার অনুসারেই সব হবে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।