Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

খালেদা জিয়ার মামলার রায় নিয়ে আদেশ রোববার

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট: বিচারে সহায়তা না করার অভিযোগ দুদকের আইনজীবীর

মালেক মল্লিক | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিএনপির চেয়াার্পাসন খালেদা জিয়াসহ চার আসামীর বিরুদ্ধে যুক্তি উপস্থাপন সমাপ্ত করে রায় ঘোষণার দিন ঠিক করার আবেদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে -৫ এ লিখিত আবেদন করেন। ওই আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর আদেশের জন্য ধার্য করেন অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। একই সঙ্গে এ মামলায় আদালতের বিচারকের প্রতি দুই আসামি অনাস্থা বিষয়েও আদেশের দিন রাখেন। এছাড়া ধার্য তারিখ পর্যন্ত খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করেন।
পুরোনো কেন্দ্রীয় করাগারে স্থাপিত আদালতে গতকাল বুধবার নিয়ে চলতি সপ্তাহে এ মামলায় তিন দিন শুনানি হলো। প্রতি দিনই দুদকের পক্ষ থেকে আসামিপক্ষকে যুক্তিতর্ক শুনানি করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা হয়। খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার চলার আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যেতে তাঁরা সময় চান খালেদা জিয়াসহ অপর তিনজনের আইনজীবীরা। এমতাবস্থায় গতকাল এই মামলায় বিচারের সহায়তা না করার অভিযোগ করে রায়ের তারিখের চান দুদকের আইনজীবী। এদিকে যুক্তিতর্ক ছাড়াই রায় জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাবে বলে মন্তব্য করেছেন আসামী পক্ষের আইনজীবীরা।
গত ফেব্রুয়ারি থেকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাবন্দি আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। অসুস্থতার কারণে তাকে গত সাত মাসে আদালতে হাজির করতে না পারায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ করতে সেপ্টেম্বরের শুরুতে আদালত স্থানান্তর করে সরকার। আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দেয়া সময়ের তৃতীয় দিন বেলা ১১টা থেকে ৪০ মিনিটের মত আদালতের কার্যক্রম চলে।
শুনানিতে যা হল : শুনানি শুরুতে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, যুক্তিতর্ক, যুক্তিতর্ক থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত। আমরা সময় নষ্ট করতে চাচ্ছি না। যুক্তিতর্ক শুনানি না করে তাঁরা আদালতকে অসহযোগিতা করছেন। আসামীপক্ষ বিলম্ব করে মামলার কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছে। তারা যুক্তিতর্ক করছে না। আমরা রায়ের তারিখ ধার্য করার জন্য লিখিতভাবে আবেদন করছি। এসময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, আমরা আদালতে আসি, আপনি জামিন দেন চলে যাই। আদালতকে কিছু দেই না। মাঠে-ঘাটে সব জায়গায় বলে বেড়াচ্ছেন ন্যায়বিচার ব্যাহত করছি। আমরা ন্যায়বিচার ব্যাহত করছি না। তিনি মামলার চেয়ে রাজনীতির কথা বেশি বলছেন। পিপির কারণে এই মামলায় কলঙ্ক লেপন হোক তা আমরা চাই না। আপনার বিচার যেন প্রহসনের বিচার না হয়। সেটা যেন পিপির কারণে না হয়। এ বিচার যদি একতরফা হয়, যদি প্রহসনের বিচারের তকমা লেগে যায়, তা কখনো কাম্য নয়। আর পিপি সাহেবের এক তরফা আচরণের কারণে বিচার যদি প্রহসন হয়ে যায় উনি এর দায়ভার নিবেন কি না আমরা আদালতকে সব সময় সহযোগিতা করে আসছি। আমরা আদালতের কাছে সব সময় ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি। মনিরুল ইসলাম খানের আইনজীবী আখতারুজ্জামান বলেন, আদালতের প্রতি অনাস্থার বিষয়ে তারা উচ্চ আদালতে যাবেন এজন্য মামলার কার্যক্রম মুলতবি রাখার আবেদন করেন।
খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, এ মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করবেন সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও আবদুর রেজাক খান। খন্দকার মাহবুব হোসেনের বিরুদ্ধে চলতি সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশ ১৩টি মামলা করেছে। তিনি অসুস্থ, তারপরও হাইকোর্টে হাজির হয়ে জামিন নিতে হচ্ছে। আবদুর রেজাক খানের বিরুদ্ধে ১০ মামলা, তিনি একজন বয়স্ক লোক, ৮৬ বছর বয়স। আমার বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের এভাবে মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। আমরা একটা মুলতবি চাচ্ছি। এরপর মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার বলেন, যুক্তিতর্ক ছাড়াই রায় ঘোষণার আবেদন গ্রহণ করা হলে বিচার সম্পর্কে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে। তাড়াহুড়া করে যদি এই বিচার স্টিগমায় পড়ে যায়, প্রহসনের বিচার হয়ে যায়- তার দায়-দায়িত্ব আপনি নিতে পারবেন না। আমরা আপনার কোর্টে মামলা করছি। আমাদের একটা যুক্তিসঙ্গত সময় দেন। আমরা মামলা নিষ্পত্তি করতে সহযোগিতা করবো। আর মামলা হয়ে শেষ হয়ে এসেছে, এত তাড়াহুড়ো করার কি আছে।
এসময় দুদকের আইনজীবী বলেন, আইনে কোথাও যুক্তিতর্ক শুনানি করার বিধান নেই। এরপরও আসামিপক্ষকে যুক্তিতর্ক শুনানি করার সুযোগ দিচ্ছেন আদালত। কিন্তু আসামিপক্ষ জামিনসহ সব ধরনের সুযোগ পকেটে ভরে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যুক্তিতর্কের শুনানি করছে না। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মোটেও আদালতকে সহযোগিতা করছে না। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ৩০ সেপ্টেম্বর মামলাটির যুক্তিতর্ক সমাপ্ত করে রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য হবে কি না সে বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করেন।



 

Show all comments
  • Md Kawsar ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১১:০৭ এএম says : 0
    মায়ের মুক্তি চাই
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ