পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আজিবুল হক পার্থ : চলমান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে হাজারো অভিযোগ পড়েছে ইসি সচিবালয়ে। তবে কোনো অভিযোগেরই প্রতিকার করছে না ইসি। দুয়েকটি আমলে নিলেও যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগের পাশাপাশি রয়েছে অভিযোগ আমলে না নেওয়ার অভিযোগ। এতে সংক্ষুব্ধ প্রার্থীরা হতাশ হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ইসির বিরুদ্ধে। তাদের মতে, ইসি বিচার না করে সহিংসতায় উস্কানি দিচ্ছে।
শনিবার দেশের ৬১৪ ইউপিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তৃতীয় ধাপের এ নির্বাচনেও কেন্দ্র দখল, জাল ভোট দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এ ধাপের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের অভিযোগ আসতে থাকে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ায় বাধা ও প্রত্যাহারের হুমকির অভিযোগ করেন প্রার্থীরা। সরকারবিরোধী প্রার্থীদের প্রচারণায় হামলা, বাড়িঘরে হামলার অভিযোগও আসে। এরই মধ্যে তিন শতাধিক ইউপিতে ভোট ডাকাতির ও সংঘাত, সংঘর্ষের আশঙ্কা জানিয়ে অভিযোগ করেছেন প্রার্থীরা। তারা পরেও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না ইসি।
ভোটের আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে তৃতীয় ধাপের ভোটে সকাল ১০টার মধ্যে ভোট কেন্দ্র দখলে নিয়ে সিল করে নৌকা প্রতীকের অনুকূলে ফলাফল ঘোষণা দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন চুন্টা ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ হাবিবুর রহমান।
লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শাহজাহান মিয়া ও তার লোকজন তাকে প্রাণনাশের হুমকিসহ নির্বাচনের দিন সকাল ১০টার মধ্যে লোপাড়া ভোট কেন্দ্র, চুন্টা হাইস্কুল কেন্দ্র, ঘাগড়াজুর প্রাইমারী স্কুল কেন্দ্র, রসুলপুর উত্তর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র জোরপূর্বক দখল করে নৌকা প্রতীকের অনুকূলে ফলাফল ঘোষণা দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইসি কি ব্যবস্থা নিয়েছে জানতে চাইলে হাবিবুর রহমান বলেন, আমি আশা করেছিলাম অভিযোগের প্রতিকার পাব। কিন্তু ইসি কর্মকর্তারা অভিযোগের উল্টো ফল দিয়েছেন। ভোট ডাকাতি শুরু হওয়ার পর আমি ম্যাজিস্ট্রেট ও রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ভোট স্থগিত করার জন্য অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা আমার অনুরোধে সাড়া দেয়নি। আমি বিষয়টি নিয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব। একইভাবে পাবনার চাটমোহর থানার মথুরাপুর ইউপির আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নুর মোহাম্মদ ভোট জালিয়াতির আশংকা ইসিতে অভিযোগ করেছিলেন। ইসিতে লিখিত অভিযোগে তিনি বলেছিলেন, জবেরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চিরইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ছোটগুয়াখড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ব্রিগুয়াখড়া মক্তব কেন্দ্রে সরকার সমর্থিত প্রার্থী দখলের হুমকি দিচ্ছে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি ইসির প্রতি অনুরোধ জানান।
কিন্তু নির্বাচনের দিন ভোট জালিয়াতি হলেও কোনো পদক্ষেপ করেনি ইসি কর্মকর্তারা। উপরন্তু প্রিসাইডিং অফিসার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর হোসেন ফলাফলে জালিয়াতি করেন। সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে তিনি সেখানে ফলাফল ঘোষনা না করে চাটমোহর গিয়ে জালিয়াতির ফল ঘোষণা করেন বলে দাবী করেন নূর মোহাম্মদ।
ফটিক ছড়ির ২নং দাতমারা ইউপির ধানের শীষের প্রার্থী ইদ্রিস মিয়া। কেন্দ্র দখল ও জালিয়াতির আশংকায় ইসিতে অভিযোগ করেছিলেন। লিখিত অভিযোগে তিনি বলেছিলেন, নৌকা সমর্থিত প্রার্থী জানে আলম তার নির্বাচনী এলাকার হিয়াকো বনানী উচ্চ বিদ্যালয়, হিয়াকো বালুটিলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড়বেতুয়ার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিচিন্তা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট কেন্দ্র দখলের হুমকি দিচ্ছে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি ইসির প্রতি অনুরোধ জানান।
তার অনুরোধের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন কী পদক্ষেপ নিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইসিতে অভিযোগ করে কোন প্রতিকার পাইনি। ভোটের দিন সকাল থেকেই ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন নৌকায় সিল দিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম নিজে জালিয়াতির জন্য একজনকে আটক করে কোন ব্যবস্থা ছাড়াই ছেড়ে দেয়। দাতমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ পরিদর্শক আব্দুল বাতেন এক মাস আগে ট্রান্সফার হলেও তিনি এলাকা না ছেড়ে আমার কর্মীদের হয়রানি করেছে। এ বিষয়েও কোন ব্যবস্থা নেয়নি ইসি।
কুষ্টিয়ার খোকসা ৯ নং আড়ামাবাড়ীয়া ইউপির জাসদ সমর্থিত প্রার্থী নুর জাহান বেগম। তার নির্বাচনী এলাকার ৯ টি কেন্দ্রের মধ্যে ৬টি কেন্দ্রেই সরকার সমর্থিত নৌকার প্রার্থী আব্দুস সাত্তার মোল্লা দখল করতে পারে এমন আশংকায় ইসিতে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইসি কী ব্যবস্থা নিয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইসি আমার অভিযোগের কোন সুরাহার করেনি। নৌকার সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন আমার কর্মী ও ভোটারদের হামলা করেছে। তাদের অনেকেই এখন হাসপাতালে ভর্তি। আমার কোন পোলিং এজেন্টকে ভোটকেন্দ্রে থাকতে দেয়নি। তাদের হুমকি ও হামলা চালিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে নৌকায় সিল দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ইউপি ভোটের অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে সাড়া পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী প্রার্থীরা। ইসিতে অভিযোগ নিয়ে আসলে ইসি কর্মকর্তারা বলছে, ‘নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর কমিশনের কিছু করার নেই। এসব বিষয়ে প্রতিকার পেতে হলে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে যেতে হবে।
নির্বাচন পরিচালনাবিধির ৯০ ধারায় বলা আছে, সন্তোষজনক মনে না হলে কমিশন নির্বাচনের যেকোনো পর্যায়ে নির্বাচন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিতে পারে। ফলাফল বাতিলের ক্ষমতাও দেওয়া আছে। কিন্তু সব ক্ষেত্রে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে কমিশন ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের প্রতিকার পাওয়া থেকে বঞ্চিত করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।