পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বহুল আলোচিত ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রকল্পের অনুমোদন দিল সরকার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন মাস আগে অনুমোদন পাওয়া এ প্রকল্পের পুরো টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে যোগান দেওয়া হবে।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিন হাজার ৮২৫ কোটি টাকা ব্যয় সংবলিত প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন।
পরিকল্পনা কমিশনের দেওয়া তথ্য মতে, অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে দেড় লাখ ইভিএম কেনা হবে এই প্রকল্পের আওতায়। একই সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত তিন হাজার ১১০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তিন ধাপে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে নির্বাচন কমিশন। গত ১১ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় প্রকল্পটি শর্তসাপেক্ষে একনেক সভায় অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়। এর আগে গত ১৯ আগস্ট প্রকল্পের ওপর পিইসি বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণ দেখিয়ে পরে তা স্থগিত করে দেওয়া হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান সরকারের অন্যতম একটি লক্ষ্য ছিল দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপ দেওয়া। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ত্রু টিমুক্ত করতে দেড় লাখ ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তবে আসছে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি না তা ঠিক করবে নির্বাচন কমিশন। আমাদের কাজ ছিল প্রকল্প পাস করে দেওয়া। অবশ্য নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে চাইলে ইভিএম ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বৃতি দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, একসঙ্গে নয়; বরং ধীরে ধীরে ইভিএম ব্যবহার করতে। আগে ইভিএম ব্যবহারে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। ইভিএম ব্যবহার জানতে হবে। শিখতে হবে। শিখাতে হবে। তারপর ব্যাপকহারে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। আসছে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করতে চাইলে আমাদের গণপ্রতিনিধিত্ব আইন (আরপিও) পরিবর্তন করতে হবে। আরপিও পরিবর্তন ছাড়া ইভিএম ব্যবহারের সুযোগ নেই। কারণ, আইনে ইভিএম ব্যবহার শুধু স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলা আছে। জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের কথা বলা নেই। জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে সীমিত আকারে ইভিএম ব্যবহার করা যেতে পারে। আর সেটা হতে পারে শহরে। কারণ, শহরের মানুষ শিক্ষিত। গ্রামের মানুষ ততটা শিক্ষিত নয়। তারা আবার মনে করতে পারে, মেশিনে টিপ দিলে জায়গা জমি নিয়ে যাবে। এই ধরনের হাঙ্গামায় যাওয়ার সময় এখন নেই। ইভিএম কিনতে তাড়াহুড়া করা হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, কোনো ধরনের তাড়াহুড়া করা হচ্ছে না। সব নিয়ম-নীতি মেনে সময় নিয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গতকাল একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ইভিএম ব্যবহার করতে গিয়ে যাতে সরকারের কোনো সমালোচনা না হয়, সেদিকে সর্বোচ্চ নজর দিতে। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য মতে, ইভিএমের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্রে আঙ্গুলের ছাপের সাহায্যে যখন ভোটারদের তথ্য যাচাই করা হবে, তখন ভোটারের ছবিসহ তথ্য ইভিএমের ডিসপ্লে ইউনিটে দৃশ্যমান হবে। যা ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পোলিং এজেন্টরা যাচাই করতে পারবে। কমিশন বলছে, এই প্রযুক্তি ব্যবহার হলে একজনের ভোট আরেকজন দেওয়া অসম্ভব। এই মেশিনে ভোট গ্রহণ শুরুর আগে এবং শুন্য ভোটিং প্রিন্ট করার সুবিধা এবং ভোট গ্রহণ শেষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দ্রুত ফলাফল প্রিন্ট ও ঘোষণা করা যাবে। ইভিএম ব্যবহারের জন্য শিক্ষাবিধ জামিলুর রেজা চৌধুরীকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও একনেক সভায় জানানো হয়।
এদিকে গতকালের সভায় ভারতের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে চিলাহাটি এবং চিলাহাটি বর্ডারের মধ্যে রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ৮০ কোটি টাকা। সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বলেন, একনেক সভায় ১২ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে খরচ হবে আট হাজার ৮৪২ কোটি টাকা। বাকি টাকা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়ার আশা করছে সরকার।
একনেক সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- চার হাজার ৯৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রামীণ সেতু নির্মাণ, ৮২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ৫২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে হাটহাজারী থেকে রাউজান পর্যন্ত চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।