Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গুরুর রাজনীতি শিষ্যের কব্জায়

প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আফজাল বারী : বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে বিএনপিকে নবরূপে সাজানো হচ্ছে। দীর্ঘ মেয়াদী টার্গেট করে অপেক্ষাকৃত তরুণদের হাতে তোলে দেয়া হচ্ছে দলের নেতৃত্ব। আসন্ন মেঘা কমিটির আংশিক ঘোষণা করা হয়েছে। তিন ধাপে ঘোষিত নেতৃত্ব নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে যেমন আলোচনা রয়েছে, তেমনি সমালোচনার পাল্লাও ভারী হচ্ছে।
প্রতিবারের মতো এবারো পদ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে দলের ভেতরে-বাইরে। আসন্ন কমিটিতেও গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে দেয়ার কন্ট্রাক নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের আস্থাভাজন খ্যাত ও আশপাশের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ নবনির্বাচিত দুই নেতা।   
রাজনৈতিক বোদ্ধারা মন্তব্য করেছেন, পরিবর্তনের চিন্তা অবশ্যই ভালো, তবে বাস্তবতা ও আংশিক কমিটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় অতীতে যার অধীনে কর্মী হিসেবে রাজপথে ছিলেন নবগঠিত কমিটিতে সেই কর্মীকেই এখন নেতার নেতার আসনে বাসিয়ে দেয়া হয়েছে। মোদ্দা কথা দলটিতে গুরুর রাজনীতি এখন শিষ্যদের কব্জায়। বাকিটা সময় বলে দিবে।
এদিকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ-অসন্তোষ বিরাজ করছে। কেউ প্রত্যাশার চেয়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন, আবার কারো পদাবনতি ঘটেছে। কোন কোন বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ নেতার সংখ্যা বেশি, কোন কোন জেলা এখন পর্যন্ত নেতৃত্বই পায়নি। বিভাগের বাসিন্দা না হলেও ওই বিভাগের নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য না হলেও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব প্রত্যাশা না করেও পেয়েছেন। অবমূল্যায়িত ও পদাবনতির শিকার নেতারা রাজনীতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করছে। নিষ্ক্রিয়তা অবলম্বনসহ দল ত্যাগের কথাও জানিয়েছেন তাদের কয়েকজন।
বিএনপির হাইকমান্ডের প্রতি বোদ্ধাদের পরামর্শ হলো-নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে আরো বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে হবে। তা না হলে আন্দোলন সংগ্রামে অতীতের ব্যর্থতা কাটানো কঠিন হবে। বিএনপির সামনে আরো কঠিন সময় বিরাজ করছে বলেও সাবধানবাণী দিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রফেসর ড. তারেক শামসুর রহমান।  
গত ১৯ মার্চ জাতীয় কাউন্সিলের আগে দলের চেয়ারপার্সন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচন হয়েছে। কাউন্সিলের পরে দলের মহাসচিব, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব, ৭ যুগ্ম-মহাসচিব, ১০ সাংগঠনিক সম্পাদক, ২০ সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষসহ ৪০ পদে নেতার নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি
ঢাকা বিভাগ : গত কাউন্সিলের পরে এই বিভাগ ত্রিখ-িত। তিন বিভাগ হলো-ঢাকা, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর। এখনকার ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা ৯০’এর আন্দোলনে লড়াকু খ্যাত সাবেক ছাত্রনেতা খায়রুল কবির খোকন এখন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব। অবিভক্ত ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন আরেক সাবেক ছাত্র নেতা ফজলুল হক মিলন। অতীতের বিএনপির শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়ার বিচারে তাকে আগের পদেই বহাল রাখা হয়েছে। পদাবনতি দিয়ে শুধু ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে। দুই সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ ও শহিদুল ইসলাম বাবুল। অবিভক্ত ঢাকা বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদককের দায়িত্ব পান মরহুম নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুর শূন্য পদে বসানো হয় যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম আজাদকে। তার সমকক্ষ্য হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় ছাত্র দলের সাবেক সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবুলকে। বাবুল ফরিদপুর বিভাগের বাসিন্দা, গত নির্বাহী কমিটির সদস্যও ছিলো না তারপরও জুনিয়র এই ছাত্র নেতাকে ঢাকা বিভাগের এমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়ায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
এ ঘটনায় রাগে-ক্ষোভে কমিটি ঘোষণার পর থেকে দলীয় কার্যালয়ে যাচ্ছেন না আব্দুস সালাম।
পদাবনতির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ফজলুল হক মিলন ফোনে বলেন, তিনি অসুস্থ হয়ে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মন্তব্য দেয়া মতো অবস্থা তার নেই। মুন্সিগঞ্জের মিজানুর রহমান সিনহাকে এবারো কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগ : নতুন কমিটির ঘোষিত নেতাদের মধ্যে যুগ্ম-মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন লায়ন আসলাম চৌধুরী। এক সময়কার চট্টগ্রাম জিয়া পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করতেন। ২০০৮ সালে স্থানীয় বিএনপির নেতায় রূপান্তরিত হন। গত কমিটিতে তিনি সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে ছিলেন। আরেক গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচিত হয়েছেন ১৯৯৩ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল ছাত্রদলের সভাপতি ডা. শাহাদাৎ হোসেন। তার সহযোগী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে মাহবুবুর রহমান শামীম ও আবুল হাশেম বক্করকে। মাহবুবুর রহমান শামীম ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চাকসু) এজিএস ছিলেন। ৯০’র গণআন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী এবং সেই শামীমকে এখন রাজনীতিক গুরু মানতে হবে রাজনীতিতে জুনিয়র লায়ন আসলাম চৌধুরী ও ডা. শাহাদাৎ হোসেনকে। চাউর রয়েছে কোটি টাকার ডোনেশনের বদৌলতে অধস্তন নেতাকে ঊর্ধ্বতনেরূপ দেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে শামীম ইনকিলাবকে বলেন, আসলাম ও শাহাদাৎ রাজনীতির বয়সে আমার জুনিয়র। আমি যখন নেতা শাহাদৎ তখন ছাত্রদল কর্মী। যা-ই হোক শীর্ষ নেতা বেগম খালেদা জিয়া কাকে কোন পদ দিলেন তা বিবেচ্য বিষয় নয়, আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে তা সঠিকভাবে পালন করতে চেষ্টা করবো।
রাজশাহী বিভাগ : এখন পর্যন্ত এই বিভাগ থেকে চার নেতা গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন। হারুন অর রশিদ (যুগ্ম-মহাসচিব), রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু (সাংগঠনিক সম্পাদক) এবং দুই সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মমিন তালুকদার ও শাহীন শওকত। রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলকে যুগ্ম-মহাসচিব করবার জন্য বিশেষ স্থান থেকে সুপারিশ করা হলেও শীর্ষ নেতা সেটি গ্রহণ করেননি। এদিকে রাজশাহীর স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ হারুন অর রশিদ গত দুইটি আন্দোলনে রাজপথেই নামেননি। তবে তার স্ত্রী পাপিয়া সোচ্চার ছিলেন।

খুলনা বিভাগ : এই বিভাগে নবগঠিত কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন গত কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু। আন্দোলন সংগ্রামে অবদানের তুলনায় তার মুল্যায়ন কম হয়েছে বলে মনে করে খুলনাবাসী। তার সহযোগী হিসেবে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন ছাত্রদলের টুকু-আলিম কমিটির সহ-সভাপতি জয়ন্তু কুমার কুন্ডু এবং যশোহর বিএনপির সদস্য অনিন্দ ইসলাম অনিক। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদ্য পিতা তরিকুল ইসলামের ছেলের সুবাদে অনিকের পরিচিতি অনেক। তবে ঝিনাইদহের জয়ন্ত কুন্ডুর সাংগঠনিক দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জেলা পর্যায়ের নেতারা।     

বরিশাল বিভাগ : পীর আলেম অধুষ্যিত বরিশাল বিভাগ। বিএনপির ঘোষিত আংশিক কমিটির ৪০ নেতার মধ্যে এই বিভাগেই ৭ জন। দুই যুগ্ম-মহাসচিব শ্রমিক নেতা সাবেক এমপি মজিবর রহমান সারোয়ার ও সাবেক এমপি যুবনেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। সাবেক ছাত্র নেতা বিলকিস জাহান শিরিন (সাংগঠনিক সম্পাদক) এবং দুই সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আকন কুদ্দুসুর রহমান ও সাবেক ছাত্র নেতা মাহবুবুল হক নান্নু। বরিশাল বিএম কলেজের সাবেক ভিপি (১৯৯৩) মাহবুবুল হক নান্নু। সহ-সভাপতি ছিলেন ওই সালের কেন্দ্রীয় ছাত্র দলের এ্যানী-সোহেল কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি। ১৯৮৬ সাল থেকেই তিনি বরিশাল বিভাগীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তখন শিরিন তার কর্মী ছিলো। এবার তাকে জুনিয়র শিরিনের অধীনেই রাজনীতি করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে নান্নু ইনকিলাবকে বলেন, পীর-আউলিয়া অনুষ্যিত বরিশালে নারী নেতৃত্ব কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা পাবে, মানুষ লুফে নেবে তা হাইকমান্ডকে আরেকটু ভেবে দেখা বিষয় রয়েছে। তবে আমাকে যে গুরু দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো।

সিলেট বিভাগ : বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নিখোঁজ এম ইলিয়াসের জন্য কমিটি ঘোষণার একদিন পর সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকের না ঘোষণা করা হয়েছে। তার স্থলে গত কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অপর দুই সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হোসেন সেলিম ও কলিম উদ্দিন মিলনকে দায়িত্ব অর্পণের নেপথ্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে সিলেটজুঁড়ে। অভিযোগ উঠেছে বিএনপির গত কমিটির একজন যুগ্ম-মহাসচিবের হস্তক্ষেপে সংস্কারপন্থী পরিচিত এই দুই নেতাকে গুরুদায়িত্ব দেয়া হয়েছে। চাউর রয়েছে আন্দোলন সংগ্রামে না নামলেও মোটা অঙ্কের বিনিময়ে আগামীর পথ কাটামুক্ত করেছেন সেলিম-কলিম।   

রংপুর বিভাগ : বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে রংপুর বিভাগেই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ঠাকুরগাঁও), সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রিজভী আহম্মেদ (কুড়িগ্রাম), যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল (রংপুর), সাংগঠনিক আসাদুল হাবিব দুলু (লালমনিরহাট), সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুজ্জামান (নীলফামারী) ও জাহাঙ্গীর হোসেন (দিনাজপুর)। শামসুজ্জামান জেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক এবং জাহাঙ্গীর দিনাজপুর সদরের মেয়র। সংখ্যা ও গুরুত্বের দিক দিয়ে অন্য বিভাগের চেয়ে বেশি হলেও কাঠখড় পুড়িয়েই পদপদবী লাভ করেছে বলে দলটির সিনিয়র নেতাদের মন্তব্য। তবে গত কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী আসাদুল হাবীব দুলুর পদ নড়চড় হয়নি।   

ময়মনসিংহ বিভাগ : ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর ও নেত্রকোনা- এই চার জেলা নিয়ে নবগঠিত ময়মনসিংহ বিভাগ। এখন পর্যন্ত তিন নেতা নাম ঘোষণা করা হয়েছে তার মধ্যে একজন এই বিভাগের বাসিন্দাই নন। এ নিয়ে ময়মনসিংগ বিভাগের নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তিন নেতৃত্বের মধ্যে রয়েছে- বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ইমরান সালেহ প্রিন্স (ময়মনসিংহ), দুই সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলম (কিশোরগঞ্জ) ও এডভোকেট শাহ ওয়ারেছ আলী মামুন (জামালপুর)। বিভাগ থেকে নেতৃত্ব না দেয়ায় শরিফুল আলমকে ‘পরগাছা’ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে ওই চার জেলার নেতাকর্মীরা। বিভাগের বাসিন্দা না হবার পরও কেন তাকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হলো নেপথ্যের কারণ খুঁজছে ময়মনসিংহ বিভাগের নেতারা।  

কুমিল্লা বিভাগ : নেতা নির্বাচনের বেলায় এই বিভাগে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ করেছে স্থানীয় নেতাকর্মীরা। ঘোষিত আংশিক কমিটিতে চার নেতার মধ্যে তিনজনই কুমিল্লা জেলার। একজন যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নোয়াখালীর। সাংগঠনিক সম্পাদক কর্নেল (অব.) আনোয়ারুল আজিম (কুমিল্লা)। গত কয়েক বছরের আন্দোলন সংগ্রামে নেতাকর্মীরা নবনির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল আজিমের হদিস পাননি।  
অপর দুই নেতা দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক হোসেন (কুমিল্লা) ও আব্দুল আউয়াল খান (কুমিল্লার দেবিদ্বার)। বাকি ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় এখন পর্যন্ত কোন প্রতিনিধি নেই। এছাড়াও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য না হয়েও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন মোস্তাক। বিএনপির অঙ্গসংগঠনের (মৎসজীবী দল) সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আওয়াল খান এখন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক।

এ প্রসঙ্গে চাঁদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ মানিক বলেন, কাউন্সিলের শীর্ষ নেতা বেগম খালেদা জিয়ার হাতে নেতা নির্বাচনের জন্য সর্বময় ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। তিনি যা করবেন আমরা মনে করি সেটাই সঠিক। চাঁদপুরে ২২ জন নেতাকর্মী সরকারের দমন-নিপীড়ন নির্যাতনে নিহত হয়েছে। এখনও ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী-এমপিদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছি। ত্যাগের আলোকে এ জেলা থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে নেতা নির্বাচন করবেন বলে আশা রাখি।
যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুস শুকুর পাটোয়ারি ইনকিলাবকে বলেন, বিগত আন্দোলন সংগ্রামে সারা দেশের মতো চাঁদপুরও উত্তাল ছিলো। পুলিশ ও ক্ষমতাসীনদের হাতে ২২টি তাজা প্রাণ কেড়ে নেয়া হয়েছে। বহু মামলা-নির্যাতনের খড়গ বইছে এই জেলার নেতাকর্মীদের উপর দিয়ে। আমি আশা করবো ত্যাগের মূল্যায়নের মাধ্যমে চাঁদপুরের ত্যাগী নেতাদের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান দিবেন।

ফরিদপুর বিভাগ : এই বিভাগের জন্য তিনটি পদে সাংগঠনিক সম্পাদক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নেতার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। শ্যামা ওবায়েদ সাংগঠনিক সম্পাদক। দুই সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম ও সেলিমুজ্জামান সেলিম। ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ফরিদপুরের শহিদুল ইসলাম বাবুলকে। নানামুখী সমালোচনা রয়েছে শ্যামা ওবায়েদের পদ প্রাপ্তি নিয়ে। আলাপকালে তিনি সিনিয়র নেতাদের কাছে দাবি জানিয়েছেন সম্পাদক (আন্তর্জাতিক) পদ। সে প্রত্যাশায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেকে প্রচার-প্রকাশও করেছেন। প্রযুক্তিগত লব্ধজ্ঞান কাজে লাগিয়েছেন দলের কাউন্সিলে। তাকে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তার প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তি বেশি বলে ঘনিষ্ঠজনদের সাথে আলোচানা করেছেন শ্যামা।
বিএনপির সাবেক মহাসচিব মরহুম কেএম ওবায়দুর রহমানের সাথে রাজপথে থাকা শাহ আবু জাফরকে এখন চেয়ার ছেড়ে দিতে হবে ওবায়দুর রহমানের কন্যা শ্যামাকে। স্থানীয় সদর উপজেলা নির্বাচনে লড়াই করে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জনকারী মাহবুবুল হাসান পিংকুসহ অধিকাংশ সিনিয়র নেতাকর্মী এখন রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা বোধ করছেন।  
রাজবাড়ীর সাবেক এমপি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়াম দীর্ঘদিন খালেদাপন্থীদের রোষাণলে পড়ার ভয়ে মাঠে নামেননি। পদ বণ্টনের বেলায় তিনিও এবার সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক। যুবদলের সুপার ফাইভে থাকার জন্য যিনি দলের সিনিয়র নেতাদের দ্বারস্থ হচ্ছিলেন গোপালগঞ্জের সেই সেলিমুজ্জামান সেলিমকে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ওই জেলার গুরুত্বপূর্ণ নেতারা বাদ পড়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীরাই নবনির্বাচিত নেতাদের অভিষেকে বাদ সেধে ছিলেন।


                                                                                                                                                                                                                           

                                                                                                                                                                                             

                                                                  


                                                                                                                                                                                       




                                                                                                                                                 
    
 
















                                                                                                                                                       
                                                                                                                                                                       


************



 

Show all comments
  • Yasmin ২৪ এপ্রিল, ২০১৬, ২:২৩ পিএম says : 0
    ata baper na
    Total Reply(0) Reply
  • kawsir ২৪ এপ্রিল, ২০১৬, ২:২৩ পিএম says : 1
    agulo thakbe e
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গুরুর রাজনীতি শিষ্যের কব্জায়
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ