পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দরিদ্র্য জনগোষ্ঠী স্বনির্ভরতার বদলে হয়ে পড়ছে স্বর্বশান্ত
কারবারীদের লাগাম টানার ব্যবস্থা নেই, নেই তদারকি
গ্রামীণ দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর ভাগ্য বদলের দোহাই দিয়ে এনজিও’র ক্রেডিট প্রোগ্রামের নামে চলছে ফ্রি স্টাইলে সুদের কারবার। সুদের কারবারীদের লাগাম টেনে ধরার কোন ব্যবস্থা নেই। নেই কোন তদারকি। দারিদ্র্য বিমোচন, পল্লী উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির নামে এমন কোন গ্রাম নেই যেখানে এনজিও’র ক্রেডিট প্রোগ্রাম চলছে না। এতে গরীব ও অসহায় মানুষ স্বনির্ভরতার বদলে হচ্ছেন সর্বস্বান্ত।
সমাজসেবা অধিদপ্তর এনজিওগুলোর রেজিস্ট্রেশন দিয়েই দায়িত্ব শেষ করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাইক্রোক্রেডিট অথরিটি থেকে লাইসেন্স নিয়ে ক্রেডিট প্রোগ্রাম করে থাকে এনজিওগুলো। তারা পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) থেকে ৩/৪ শতাংশ হারে সুদে ক্রেডিট প্রোগ্রামের অর্থ সংগ্রহ করে এলাকাভিত্তিক ঋণ দেয়। কিন্তু আদায় করে ২৫/৩০%। এই চিত্র দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের।
অর্থনীতিবিদ, সচেতন ও পর্যবেক্ষক মহলের মতে, গ্রামীণ দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর ভাগ্য বদলের দোহাই দিয়ে যেসব এনজিও সুদের কারবার চালাচ্ছে তাদের লাগাম টেনে ধরা জরুরী। তা না হলে দারিদ্র্য বিমোচন, পল্লী উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির নামে যাচ্ছেতাই অবস্থার সৃষ্টি হবে। শুধু পাকা ঘরবাড়ী, ভোগ বিলাস আর চকচকে অবস্থা আর্থ-সামাজিক অবস্থা শক্তিশালী প্রমাণ করে না।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ঝিনাইদহের মশিয়াহাটি, যশোরের চুড়ামনকাঠি, সাতক্ষীরার কলারোয়া ও নড়াইলের তুলারামপুরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় এনজিও’র ঋণগ্রস্ত অসহায় মানুষের কথা,‘ঋণের টাকার ব্যাপারে এনজিওরা কখনো চাপ দেয় না। তারা জোরজবরদস্তি আদায় করে সুদ। এতে একবার ঋণগ্রস্ত হলে তার থেকে বের হয়ে আসার উপায় থাকে না’। শুধু রেজিস্ট্রেশনকৃত এনজিও নয়, সাইনবোর্ড সর্বস্ব বিভিন্ন নামের এনজিও সুদের কারবার চালাচ্ছে প্রকাশ্যে। দিনে দিনে সুদের কারবারীদের দাপট বেড়েই চলেছে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায় এনজিও’র সংখ্যা ৮হাজার ৩শ’ ৩৬টি। যার সিংহভাগই সুদের কারবার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। যেসব এনজিও’র ক্রেডিট প্রোগ্রাম নেই, তাদের অধীনস্থ ভিন্ন সমিতি কিংবা সংস্থা গোপনে সুদের কারবার চালায়। তবে কিছু এনজিও আছে তারা ক্রেডিট প্রোগ্রামের বাইরে। ক্রেডিট প্রোগ্রামের এনজি’র কর্মকর্তারা সিংহভাগই প্রভাবশালী। তারা ব্যাংক ও পিকেএসএফ থেকে টাকা নিয়ে উষা, পুষ্প ও বিপুলসহ নানা নামে সুদের রেট বসিয়ে ইচ্ছামাফিক আদায় করে সর্বস্বান্ত করছে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যশোর, খুলনা, ঝিনাইদহ, মাগুরা, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা এমনকি গ্রামপর্যায়ে ক্রেডিট প্রোগ্রামের এনজিও কর্মীদের ব্যাপক তৎপরতা রয়েছে। তারা দারিদ্র্য বিমোচনের দোহাই দিয়ে উচ্চহারে সুদের কারবার করছে অবাধে। সেই সাথে চলছে গ্রামে গ্রামে মহাজনী সুদের ব্যবসা। একজন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি চাষাবাদের আগে মহাজনদের কাছে সুদে টাকা নেয়। দেখা যায়, সুদাসলে টাকা দিতে গিয়ে তার জমির ফসলাদি মাঠ থেকে তুলে নিজ ঘরে তোলার বদলে দিতে হয় মহাজনদের ঘরে। সুদের কারবার ছাড়াও গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন এনজিও’র সাইনবোর্ডের আড়ালে সাধারণ মানুষকে স্বনির্ভর করার প্রলোভন দেখিয়ে নানা কৌশলে তাদের সঞ্চিত অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা একের পর এক ঘটলেও সরকারীভাবে কোন খোঁজ খবর নেয়া হয় না কখনোই। অসহায় দরিদ্র ও সহজ সরল অনেকেই মহাজনী ঋণের জালে আটকা পড়ে ভিটা-বাড়ী পর্যন্ত লিখে দিতে বাধ্য হচ্ছে।
গোটা অঞ্চলের অধিকাংশ গ্রামে চলছে গ্রামের দাপটধারী অর্থবিত্তশালী মহাজনদের সুদের কারবার। এনজিওগুলোর মধ্যে আরআরএফ, জাগরণী চক্র, শাপলা, লাইফ, সমাধান, বাঁচতে শেখা, বন্ধু কল্যাণ ফাউনেশন, সুশীলন, প্রত্যাশা ও সৃজনীসহ শতাধিক এনজিও’র মাইক্রেডিট অথরিটির লাইসেন্সধারী। এর বাইরেও প্রায় সব এনজিও কমবেশী নিজেদের অর্থে কিংবা ব্যাংকের থেকে টাকা নিয়ে বিভিন্নপন্থায় সুদের কারবার করে থাকে। জরুরি প্রয়োজনে লোকজন হাতের কাছে যখন তখন টাকা নিয়ে ফাঁদে আটকা পড়ছে। এমন কোন গ্রাম খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে একাধিক এনজিও সুদের কারবার চালাচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।