পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
মোটরসাইকেল ইন্ডাস্ট্রি দেশের সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে উঠে আসছে। আর এ সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে এগিয়ে এসেছে সরকার। ইতোমধ্যে এই শিল্পের জন্য একটি খসড়া নীতিমালা প্রাণয়ন করা হয়েছে। পাশাপাশি মোটরসাইকেল রফতানিতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়ার নির্দেশনা জারি হয়েছে।
গত ১১ সেপ্টেম্বর মন্ত্রীসভা কমিটির বৈঠকে ‘মোটর সাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা,২০১৮’ এর খসড়া অনুমোদন করা হয়, যাতে দেশে মোটরসাইকেল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একই দিনে বাংলাদেশ ব্যাংক মোটরসাইকেলসহ ৯টি পণ্য রফতানিতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেদিন থেকেই এটি কার্যকর বলে জানানো হয়। মূলত বৈশ্বিক বাজারে এসব পণ্যের প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা বাড়ানো ও রফতানিকে চাঙ্গা করার উদ্দেশ্যে নগদ সহায়তার মতো প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।
বর্তমানে দেশে একমাত্র কোম্পানি হিসেবে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড মোটরসাইকেল উৎপাদন করছে। প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি করছে রানার ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল। প্রতিষ্ঠানটিকে সম্প্রতি ৫০০ সিসি পর্যন্ত ক্ষমতার মোটরসাইকেল উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছে সরকার, যেখানে শুধু রফতানির উদ্দেশ্যে এ মোটর সাইকেল উৎপাদনের শর্ত দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে দেশে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মোটরসাইকেল সংযোজন কারখানা গড়ে তুলেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এসিআই মোটরস লিমিটেড ইয়ামাহা মোটরসাইকেল, এটলাস বাংলাদেশ টিভিএস মোটরসাইকেল,নিলয় মোটরস হিরো মোটরসাইকেল, উত্তরা মোটরস বাজাজ মোটরসাইকেল, র্যাংকন মোটরবাইকস লিমিটেড সুজুকি মোটরসাইকেল সংযোজন করছে। এছাড়া টিভিএস এবং হোন্ডা মোটরসাইকেলও বাংলাদেশে সংযোজিত হচ্ছে।
সরকারের নেওয়া উদ্যোগের ফলে সবগুলো প্রতিষ্ঠানই লাভবান হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। রানার অটোমোবাইলস নগদ প্রণোদনার সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে তার রফতানিবাজার বড় করতে পারবে। অন্যদিকে যেসব প্রতিষ্ঠান বর্তমানে শুধু মোটরসাইকেল সংযোজন করছে, তারা মোটরসাইকেল উৎপাদন কারখানা স্থাপনে উৎসাহী হবে। সব মিলিয়ে এই খাতে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে।
আর এই সম্ভাবনার বিষয়টিই তুলে ধরা হয়েছে ‘মোটর সাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা, ২০১৮’ এ। নীতিমালায় মোটর সাইকেল খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান পাঁচ লাখ থেকে বাড়িয়ে ২০২৭ সালের মধ্যে ১৫ লাখে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে দেশীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে পাঁচ লাখ এবং ২০২৭ সালের মধ্যে ১০ লাখ মোটর সাইকেল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে নীতিমালায়। দেশে মোটর সাইকেল উৎপাদনের পর স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সেগুলো সরবরাহ করা হবে।
খসড়া নীতিমালার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, দেশীয় মোটর সাইকেল শিল্পের প্রসার ঘটাতে এই নীতিমালা করা হয়েছে,যেন মোটর সাইকেল আমদানি করতে না হয়। তিনি আরও বলেন,বাংলাদেশে বিদ্যমান মোটরসাইকেল সংযোজন শিল্পের পরিবর্তে এখানে বিশ্বমানের মোটর সাইকেল উৎপাদন কারখানা সৃষ্টিতে উৎসাহিত করা হবে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে এই খাতে বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
তিনি বলেন, নীতিমালার উদ্দেশ্য হচ্ছে নতুন করে মোটর সেইকেল তৈরি বা সংযোজন যেটাই করা হোক, দেশীয় শিল্প কারখানার মাধ্যমে তা উৎপাদন করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে মোটরসাইকেলের বর্তমান বাজারের আকার চার থেকে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সারাদেশে সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক বড় হওয়া, বিশেষ করে গ্রামীণ জনপদে পাকা সড়ক নির্মাণের কারণে মোটরসাইকেলের চাহিদা বাড়ছে। বছরে এই খাতে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।