পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নাটোর-৪ আসনে সাবেক এমপি মোজাম্মেল হকের টানা অনুপস্থিতি ও দলীয় কোন্দলে স্থানীয় বিএনপি এখন তিন ভাগে বিভক্ত। দলের ভেতরে উপদলীয় কোন্দলে তৃণমূল নেতাকর্মীরা এখন অনেকটাই দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, গত ১২ বছর বিএনপি ক্ষমতায় নেই, এ সময়ে হামলা-মামলা ও পুলিশি নির্যাতন এবং গ্রেফতার আতঙ্কে বিএনপি এখন সেখানে কোনঠাসা। দল ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম মোজাম্মেল হক এলাকা ছেড়ে ঢাকায় থাকছেন। ওই এলাকায় সাংগঠনিক কাজেও ভাটা পড়েছে। এতে করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী সংকট দেখা দেয়ায় জেলা বিএনপির সভাপতি, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুকে নাটোর-৪ আসনে প্রার্থী করা হলে তাদের ওই সব সংকট কেটে যাবে বলে দলের প্রায় সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী সহ সমর্থকরাও মনে করছেন। তাঁদের মতে আওয়ামী লীগকে খুব সহজে পরাস্ত করতে সেখানে বিএনপি’র দুলুই একমাত্র হেভিওয়েট প্রার্থী হতে পারেন।
বড়াইগ্রাম আর গুরুদাসপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে বিএনপি’র ১৫ই ফেব্রæয়ারীর নির্বাচন ছাড়া প্রায় সব সরকারের সময়েই গুরুদাসপুর থেকে এমপি নির্বাচিত হওয়ায় মূলত সেখানেই সঙ্কট বেশী। গুরুদাসপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ, সাবেক সংসদ সদস্য মোজাম্মেল হক এবং উপজেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি আয়নাল হক তালুকদার পৃথক ভাবে তিন মেরুতে থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে আগামী সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে গুরুদাসপুর উপজেলা বিএনপির তেমন কোন কর্মসূচি পালন করতে দেখা যাচ্ছে না। উপজেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান শাহ্ মারা যাওয়ার পর দলের হাইকমান্ড সাবেক মেয়র আমজাদ হোসেনকে সাধারন সম্পাদক করেছেন। তিনি স্থানীয় সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের পক্ষে দলীয় সঙ্কট নিরসনে এই আসনে প্রার্থী হিসেবে দলের যোগ্য, শক্তিশালী ও জনপ্রিয় নেতা হিসেবে নাটোর জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুকে দলীয় প্রার্থী করার দাবী জানিয়েছেন। বড়াইগ্রামে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস অধ্যক্ষ একরামূল হক ২০১৪ সালে মারা যাওয়ায় এবং গুরুদাসপুরে দলীয় কোন্দলের কারণে দুই উপজেলাতেই বিএনপির রাজনীতিতে ভাটা পড়েছে। এছাড়াও আব্দুল আজিজ দলের সভাপতি হয়েও উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে ১৫ আগষ্ট শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়া এবং বিএনপি’র ৪০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে না থাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে আরো ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। এসব কারণে দুই উপজেলায় বিএনপি নেতৃত্বে সঙ্কট বেড়েছে এবং দেখা দিয়েছে প্রার্থী জটিলতাও।
গুরুদাসপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র মো. আমজাদ হোসেন বলেন, গুরুদাসপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আজিজ দলীয় নেতাকর্মীদের মতামতকে উপেক্ষা করে আগামী নির্বাচনে নিজেই প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমুলের পকেট কমিটি গঠন ও দলের নেতাকর্মীদের সাথে বৈরী আচরণ করার অনেক অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি নাজমুল করিম নজু বলেন, বিএনপি দীর্ঘ দিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে থাকায় সাবেক সংসদ সদস্য মোজাম্মেল হক এলাকায় থাকেন না। উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল আজিজ নানা কারণে বিতর্কিত হয়ে পরেছেন। এসব কারনেই দলের ভিতরের কলহ নিরসনে এখন প্রায় সবাই স্থানীয় কোন নেতাকেই আর আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী না করার পক্ষে। জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুকে ওই আসনে প্রার্থী করার দাবী তাঁদের সবার।
গুরুদাসপুর পৌর বিএনপির সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র মশিউর রহমান বাবলু বলেন, দলের সাংগঠনিক অবস্থা বিবেচনা করে জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুকে ওই আসনে প্রার্থী করা হলে দলের ভেতরে আর কোন কোন্দল বা উপদলীয় কোন্দল থাকবেনা বলে মনে করেন, তবে তিনি নিজেও মনোনয়ন চাইবেন।
গুরুদাসপুর পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দুলাল সরকার মনে করেন, বিএনপি দীর্ঘ দিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে রয়েছে। সেই সুযোগে সাবেক সংসদ সদস্য মোজাম্মেল হক ও পৌর বিএনপি’র সভাপতি মশিউর রহমান বাবুলও এলাকায় থাকেন না। উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল আজিজ নানা কারনে দলে বিতর্কিত। তাঁদের কারনেই আন্তঃকলহে দলটি কার্যত বিভক্ত হয়ে পরেছে। এই অবস্থায় জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুকে ওই আসনে প্রার্থী করার কথা ভাবছে সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। তারা মনে করছেন, দুলু প্রার্থী হলে ওই এলাকায় দল আগের চেয়েও আরও সু-সংগঠিত হয়ে উঠবে।
গুরুদাসপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল আজিজ এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গঠনতন্ত্র মেনেই তিনি কমিটি গঠনসহ দল পরিচালনা করছেন। তৃনমুল বিএনপির সমর্থন নিয়ে তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে রয়েছেন। তাঁর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে দলের কিছু নেতা তাঁর বিরুদ্ধে বিষোদগারে নেমেছেন। তবে বিএনপি চেয়ারপার্সন যাকেই ধানের শীষের প্রার্থী করবেন তিনি তাকেই মেনে নিবেন।
সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম মোজাম্মেল হক বলেন, দেশের পরিস্থিতির কারণেই তিনি ঢাকায় থাকেন। তবে এলাকার নেতাকর্মীদের সাথে সব সময়েই তাঁর যোগাযোগ রয়েছে।
জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম মোজাম্মেল হকের এলাকায় অনুপস্থিতি ও নিস্ক্রিয়তার কারণেই বিএনপি সেখানে অনেকটা অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়েছে। স্থানীয় কোন্দল এড়াতে নির্বাচনী এলাকার নেতাকর্মীরা তাঁকে প্রার্থী হওয়ার দাবী জানিয়েছেন। দলকে সু-সংগঠিত করতে দলের হাই কমান্ড যদি তাঁকে ওই আসনে মনোনয়ন দেন তিনি তাহলে অবশ্যই সেখানে নির্বাচন করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।