Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিভীষিকাময় ৯/১১ আজ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

ইতিহাসের বিভীষিকাময় নাইন ইলেভেন আজ। ১৭ বছর আগে ২০০১ সালের এ দিনে আত্মঘাতী বিমান হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গর্ব নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার ধ্বংস করা হয়। হামলায় নিহত হয় প্রায় তিন হাজার মানুষ। আল-কায়েদা এ হামলা চালিয়েছে দাবি করে এরপর থেকে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট।
নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় তখন সকাল পৌনে নয়টা। চারটি মার্কিন যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই করে দুটি দিয়ে টুইন টাওয়ারে হামলা চালায়। গুঁড়িয়ে যায় বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের ভবন দুটি।
মার্কিন এয়ারলাইন্সের ছিনতাই করা আরেকটি বিমান নিয়ে হামলা চালানো হয় মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনে। আর যাত্রীদের বাধায় নির্ধারিত স্থানে হামলা চালাতে ব্যর্থ হওয়া চতুর্থ বিমানটি পেনসিলভেনিয়ার আকাশে বিধ্বস্ত হয়। এরপর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ তার ভাষায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সূচনা করেন। গত এক যুগেরও বেশি সময়ে আফগানিস্তান ও ইরাকে দুটি যুদ্ধ চালিয়েছে আমেরিকা, যার রেশ এখনো চলছে।
ঘটনার পর থেকেই সারাবিশ্বে সন্ত্রাস ও ইসলামি জঙ্গি দমন অভিযানে নামে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের অভিযানের মূল টার্গেট ছিল আল-কায়েদা। এ সংগঠনের নেতা ওসামা বিন লাদেনকে ২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে হত্যা করে মার্কিন বিশেষ বাহিনী ‘নেভি সিল’।
সংগঠনটি অনেকটা দুর্বল হলেও বিশ্বজুড়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে একই ধরনের একাধিক সংগঠন। আফ্রিকায় বোকো হারাম, ইরাক ও সিরিয়ার বড় অংশ জুড়ে রয়েছে আইএস। সিরিয়ায় বাশার আল আসাদ আর ইরাকে নুরি আল মালিকির সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধরতদের সাথেও রয়েছে এসব সংগঠনের কর্মীরা।
নিউইয়র্কে সন্ত্রাসী হামলার স্থলে নির্মিত হয়েছে ন্যাশনাল সেপ্ট. ইলেভেন মেমোরিয়াল অ্যান্ড মিউজিয়াম ও বিশাল দুটি জলাশয়। ১৭ বছর আগে নিহত, আহত এবং তাদের স্বজনের প্রতি শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানাবে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ।
৯/১১-এর ঘটনা সম্পর্কে প্রথমেই যে প্রশ্নটি আসে তা হল, প্রকৃতপক্ষে কারা এটি ঘটিয়েছিল? উল্লেখ্য, আজ পর্যন্ত পেন্টাগনে হামলার কোনো ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করা হয়নি।
পরিকল্পিতভাবে চালানো নারকীয় এ ধ্বংস ও হত্যাকান্ডের জন্য আল কায়েদাকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগ। গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, আল-কায়েদার তখনকার নেতা ওসামা বিন লাদেনই ছিলেন হামলার রূপকার।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, আমেরিকার ৯/১১ টুইন টাওয়ার হামলা ঘটনার ৩ জন প্রত্যক্ষদর্শীর ক্যান্সারে মৃত্যু হয়েছে একই দিনে। তবে আজ পর্যন্ত চিকিৎসকরা নিশ্চিত হতে পারেননি ওই হামলার সঙ্গে ক্যান্সারের কী সম্পর্ক ছিল।
৯/১১-এর কারণে আমেরিকা বা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত মুসলিম অভিবাসী তথা মুসলমানরা কতখানি বিপদাপন্ন ও অসহায়ত্বের শিকার তা শুধু তারাই মর্মে উপলব্ধি করতে পারেন। কারণ আমেরিকান ও ইউরোপীয়দের মধ্যে কেউ কেউ ৯/১১-কে দেখছেন পাশ্চাত্য সংস্কৃতির ওপর মুসলিম বিশ্বের আগ্রাসনরূপে, আবার অনেকে এটাকে কেন্দ্র করে মুসলিম বিশ্ব বলির পাঁঠা হোক তা চান না। ৯/১১-পরবর্তী আমেরিকার যুদ্ধনীতি বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষের কাছেই সমর্থনযোগ্য নয়। যুক্তরাষ্ট্রে এই বর্বর হামলায় যারা নিহত হয়েছে তাদের পরিবারের থেকে অনেক বেশি মূল্য দিতে হয়েছে অন্য অনেক নিরপরাধ রাষ্ট্র ও তার জনগণকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রবাসি হয়তো একদিন নাইন-ইলেভেনের ঘটনার মূল রহস্য উন্মোচিত করে কলঙ্ক ও দায়মুক্ত হবে বিশ্ববাসীর কাছে। আমেরিকাবাসির কাছে ‘আজ ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ার হামলার ১৭তম বার্ষিকীতে’ সেই আশাবাদ আপামর সাধারণ মানুষের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নাইন ইলেভেন

১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ