পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইউনাইটেডে নিতে অনুরোধ বিএনপির
মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিষয়টি দেখার দায়িত্ব কারা কর্তৃপক্ষের : বাণিজ্যমন্ত্রী
কারাবন্দি ও অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য দ্রুত ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তরের ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল (রোববার) বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সাথে সাক্ষাতের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের কাছে এই কথা জানান। তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি আছেন। তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এসেছিলাম। আমরা তাকে অনুরোধ করেছি যে, দ্রুত বিশেষায়িত হাসপাতালে যেন তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়। আমরা ইউনাইটেড হাসপাতাল যেটা তিনি (খালেদা জিয়া) পছন্দ করেন সেই হাসপাতালে নেওয়ার জন্য তাকে অনুরোধ করেছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যারা দায়িত্বে আছেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও আইজি প্রিজনসহ অন্যান্যদের সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নিবেন। তিনি এও বলেছেন যে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যারা আছেন তাদের পরামর্শ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন। তবে কবে নাগাদ ব্যবস্থা নেবেন প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সেটা সুনির্দিষ্টভাবে উনি কিছু বলেননি। বলেছেন যে, আজকেই (গতকাল) ওই সভাটা করবেন।
বিএনপি নেতাদের সাথে সাক্ষাতের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আবারও মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সুপারিশ অনুযায়ী আমাদের নীতিমালা অনুযায়ী আমরা সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করব, যদি প্রয়োজন হয়। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে কিছু রিকোয়েস্ট তারা করে গেছেন লিখিত আকারে। তারা জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ এবং তার অসুস্থতার মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এর আগে যে রকম রিকোয়েস্ট করেছিলেন অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য, এবার লিখিত দিয়েছেন। আমরা লিখিত আবেদনটির প্রেক্ষিতে সচিব মহোদয় এবং আইজি প্রিজনসকে এখনই দায়িত্ব দিয়েছি। মন্ত্রী বলেন, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের নিয়ে গতবারও সবাই মিলে যে একটি বোর্ডে তৈরি করেছিলেন তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য, তদ্রুপ বোর্ড গঠন করে আবারও পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন আমাদের সরকারি ডাক্তার এবং তাকে যারা চিকিৎসা দিতেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া আথ্রাইটিসে ভুগছেন, তার সেবার জন্য একজন নারীকে আমরা কারাগারে অ্যালাউ করেছি। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী যা যা প্রয়োজন আমরা কিন্তু সবই করে যাচ্ছি। আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, একজন ফিজিওথেরাপিস্ট একদিন পর পর কারাগারে গিয়ে খালেদা জিয়াকে থেরাপি দিয়ে আসেন। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। শুধু তাই নয়, একজন ডাক্তার একজন ফার্মাসিস্ট প্রতিদিনই তাকে চেক করছেন। আমাদের আইজি প্রিজনস এটা জানিয়েছেন, তাদেরও জানিয়ে দিয়েছি। জেলকোড অনুযায়ী সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা খালেদা জিয়াকে দেওয়া হচ্ছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, তারা (বিএনপি নেতারা) আবারও তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলছেন, এবার সঙ্গে অ্যাপোলো হাসপাতালের কথাও বলেছেন। আমরা জানিয়ে দিয়েছি, আমরা আবার মেডিকেল বোর্ড তৈরি করব। বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিব, যদি প্রয়োজন হয়।
এর আগে বিকেল ৩টা থেকে ৩টা ৫০ পর্যন্ত সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চতুর্থ তলায় মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের কক্ষে বৈঠক করেন বিএনপি নেতারা। বৈঠকের এক পর্যায়ে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীনও মন্ত্রীর কক্ষে প্রবেশ করেন। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান।
এদিকে গতকাল কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ আয়োজিত ‘ইমার্জিং ফোরসিস্টেম: ভ্যালু এডিশন, সাপ্লাই চেইন অ্যান্ড পোস্ট সিকিউরিটি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কোথায় চিকিৎসা দেয়া হবে তা কারা কর্তৃপক্ষের বিষয়। খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব নেননি। তাকে অন্য কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হবে কিনা সেটা কারাগারের বিষয়। আর বিচার দেখছে আদালত, এটা সরকারের বিষয় না। তিনি বলেন, আমি যখন কুমিল্লা জেলে ছিলাম তখন আমার চিকিৎসাও বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালে হয়েছে। এর চেয়ে ভালো হাসপাতাল তো আর নেই। এখানে সব বড় বড় ডাক্তার আছেন। এখানে বড় বড় নেতাদের চিকিৎসা হয়েছে।
নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদার বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে তাকে এই কারাগারে রাখা হয়েছে। এ কারাগারে কর্নেল তাহের ও অনেক বড় বড় নেতার বিচার হয়েছে। তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের হত্যার অভিজ্ঞতা বিএনপির আছে, কিন্তু আমাদের নেই। ২০০১ সালের পরে আমাদের নেতাদের হত্যা নির্যাতন নিপীড়ন করা হয়েছে। জিয়াউর রহমানের আমলে বিনা বিচারে সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের ফাঁসি দেয়া হয়েছে। আমি যখন কুমিল্লা জেলে ছিলাম, তখন প্রতি রাতে চিৎকারের শব্দ শুনতাম।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে বিএনপি গোলযোগ সৃষ্টি করতে চায়। এ সুযোগ তারা পাবে না। ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির উচিত নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া। তাদের সামনে কোনো ইস্যু নেই, তাই খালেদার বিচার ও চিকিৎসা কেন্দ্র করে ইস্যু তৈরির চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলী আকবরের সভাপতিত্বে এ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।