কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেছেন,
বিএনপি ও আওয়ামী লীগ থেকে সম দুরত্ব রেখে জাতীর আকাংখা পরিপূর্ণ করার জন্য প্রবীণ নেতা বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে আমরা একটা জাতীয় ঐক্য চাই। সে ঐক্যের পথে অনেক শুভ পদক্ষেপ থাকবে আবার অনেক অশুভ কর্মকান্ডও ঘটবে। কিন্তু জাতীর প্রত্যাশা অপূর্ণ থাকবে না। শনিবার বিকালে রাজধানীর মতিঝিল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় ঐক্য আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে হতে পারে না বলে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরে যে মন্তব্য করেছেন সেটি যথার্থ বলে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমরা শেষদিন পর্যন্ত জাতীয় ঐক্য গড়ার চেষ্টা চালাব। আমরা চেষ্টা করবো আওয়ামী লীগ ও
বিএনপিকে সম দুরত্বে রেখে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে।
বিএনপি যদি জাতীয় ঐক্যে শরীক হতে পারেন তাহলে ওই ঐক্যে আওয়ামী লীগের শরীক হতেও কোন বাধা থাকার কারণ নাই বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, বর্তমান পর্যন্ত আমরা যেভাবে ছিলাম সেভাবেই আছি। আজকে যে এই জাতীয় ঐক্য হচ্ছে, আমরা এর প্রধান স্তম্ভ। গত ১৩/১৪ বছর আগে ড. কামাল হোসেন যখন পল্টন ময়দানে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন, সেই সভার উদ্যেগতাও আমরা ছিলাম। ওই সম্মেলনে আমাদের প্রায় ২০ হাজার নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন। সে জন্য আমি বলতে চাই, দড়ি টানা টানি যাই হোক কৃষক শ্রমিক জনতা লীগকে বাদ দিয়ে কোন কিছু হবে না। এ ব্যপারে কোন একক নেতার বক্তব্যকে শেষ কথা বলে ধরে নেয়ার কোন কারণ নেই।
তিনি বলেন, সমনে একটি নির্বাচন। এটি আদৌ হবে কি হবে না তা জানি না। যদি বিশ্বাস যোগ্য প্রভাব মুক্ত নির্বাচন হয়, আনন্দের সাথে বলতে চাই, আমরা সে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো। বঙ্গবীর বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন দেশের তৎকালীণ প্রধান বিরোধী দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আমরা বর্জন করেছিলাম। বর্তমানে
বিএনপির নেত্রী জেলে।
বিএনপি থেকে কখনো কখনো বলা হচ্ছে নেত্রীকে জেলে রেখে তারা নির্বাচনে অংশ নিবে না।
বিএনপি নির্বাচন করবে কি করবে না, এটা তাদের ব্যপার।
বিএনপি যদি নির্বাচন না করে তাহলে আমরা কি নির্বাচন করবো না? সে বিষয়টিকে খোলাশা করার জন্য জন্য পরিষ্কার বলছি, নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি হলে, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে, কে অংশগ্রহণ করবে আর কে করবে না কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সেটা বিবেচনা করবে না। আমরা সে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো। এছাড়া কোন জোটে আমরা যাবো কি যাবো না সেটা সময়ের ব্যপার, পরবর্তীতে সে সম্পর্কে আমাদের সিদ্ধান্ত জানাবো।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কোন কথা নেই। আমি বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারণ করে রাজনীতি শুরু করেছি, যে কদিন বেঁচে থাকবো বঙ্গবন্ধুকে নিয়েই রাজনীতি করে যাবো। অনেকে বলে থাকেন
বঙ্গবন্ধুর জন্য তো তার দল আওয়ামী লীগ রয়েছে। সে জন্য আমি প্রতিজ্ঞা করে বলতে পারি আওয়ামী লীগ বর্তমানে
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবীল বলেন, আমরা এখন সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, শেখ হসিনার পতন চাই না। এই সরকার এখন চলে যাচ্ছে। এইটুকুন ধর্য্য আমাদের আছে। আর মাত্র অল্প কিছু দিন পরে তাদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে, এর মধ্যে পতনের কি আছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য গণতান্ত্রিক পরিবেশ চায় বাংলাদেশের মানুষ। সাধারণ মানুষ যদি দেশের মালিক হয়ে থাকে তাহলে ভোট দেয়ার অধিকার তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে হবে।