পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সমুদ্রপথে শত-শত মানুষকে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর পর জিম্মি করে স্বজনদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন তিনি
আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের বাংলাদেশের প্রধান নিয়ন্ত্রণকারী তিনি
মানব পাচারের অভিযোগে মোহাম্মদ আছেম (৩৫) নামে রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের এক শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। তিনি সাগর পথে মালয়েশিয়ায় মানবপাচার চক্রের অন্যতম হোতা। সমুদ্রপথে শত-শত মানুষকে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর পর তাদের অনেককে জিম্মি করে স্বজন-পরিজনের কাছ থেকে নানাভাবে টাকা আদায় করেছেন। গতকাল সোমবার সকালে সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আছেম বর্তমানে পূর্ব রাজাবাজারে বসবাস করেন। তিনি তেজগাঁও কলেজের বিবিএ ডিপার্টমেন্টের প্রভাষক। তার গ্রামের বাড়ি টেকনাফ উপজেলার মৌলভীপাড়া এলাকায়। তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং ও মানব পাচারের তিনটি মামলা রয়েছে। একটি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানায়, একটি রাজধানীর বনানী এবং অপর মামলাটি বাজিতপুর থানায় মানবপাচার আইনে করা হয়েছে। গত পাঁচদিন আগে তাকে সিআইডি গ্রেফতার করেছিল, কিন্তু তিনদিনের মাথায় তার জামিন হলে সে আবার বের হয়ে আসে বলেও জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার।
তিনি বলেন, আছেমের বাবা ও বড়ভাই দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়া রয়েছেন। এই সুবাদে তিনি মানবপাচারের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। তারা শতশত মানুষকে কক্সবাজার ও টেকনাফ দিয়ে সাগর পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় পাঠিয়েছে। মালয়েশিয়া পাঠানোর পর বিভিন্ন ব্যক্তিকে আটকে রেখে নির্যাতন এবং বাংলাদেশে থাকা তাদের আত্মীয়দের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করতো তারা। আমরা তথ্য পেয়েছি আছেম মুক্তিপণের টাকা তার আত্মীয়-স্বজন, মা ও নিজের অ্যাকাউন্টে জমা রেখেছেন।
মোল্যা নজরুল আরো বলেন, ২০১৪ সালে এই আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্র সাগর পথে সিরাজগঞ্জের মাসুদকে মালয়েশিয়ায় পাচার করে। এরপর পাচারকারীরা ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা দাবী করে। পরে মাসুদের বাবা আ. ছালাম ইসলামী ব্যাংকের মহাখালি শাখার একাউন্টে মুক্তিপণের ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা পাঠান। কিন্তু এরপরও তার ছেলে মুক্তি না পেলে, এই ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে উল্লাপাড়া থানায় একটি মামলা করেন (মামলা নং-১১, তারিখঃ ১১/৩/২০১৬, ধারাঃ৭/৮/১০ এর মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২)।
তিনি বলেন, সিআইডি মামলাটি তদন্ত করে জানতে পারে, একটি সংঘবব্ধ আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী গ্রুপ মাসুদেকে পাচারের সাথে জড়িত। মানি ফ্লো এবং লিঙ্ক চার্ট থেকে দেখা যায় কারা মানব পাচারের অবৈধ অর্থ গ্রহন করেছে এবং নৃশংস অপরাধ সাথে জড়িত ছিল। এই মামলা তদন্তকালে ইসলামী ব্যাংকের মহাখালি শাখার ওই একাউন্টের সূত্র ধরে উদ্ঘাটিত হয় এর সঙ্গে জড়িত একটি সংঘবব্ধ আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্র।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের বাংলাদেশের প্রধান নিয়ন্ত্রণকারী মূলহোতা মোহাম্মদ আছেম। তাকে গত রোববার কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে সিআইডি গ্রেফতার করে। আছেমের বাবা আনোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় ছিলেন এবং তার বড়ভাই মোহাম্মদ খোবায়েদ সেও মালয়েশিয়ায়। এই সুবাদে তারা আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের সঙ্গে যোগ দেয়। তিনি আরও জানান, আছেম মানবপাচারের টাকায় রাজধানীতে এসিএম করপোরেশন নামে একটি রিক্রটিং এজেন্সি খুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টেও অনেক টাকা রেখে। সেগুলো এই প্রতিষ্ঠানের ফাইন্যান্স ম্যানেজার আরিফুজ্জামান আকন্দ ওরফে আরিফ তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নিয়েছে বলেও সিআইডি অভিযোগ করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।