Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্মঘটে নৌপথ অচল

প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:৩২ এএম, ২২ এপ্রিল, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবি পূরণের জন্য সারা গতকাল (বৃহস্পতিবার) সারা দেশে নৌ-যান শ্রমিকরা ধর্মঘট পালন করেছে। ফলে দেশের বিভিন্ন রুটে নৌ-যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে জিম্মি করে দাবি আদায়ের চেষ্টা না করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। অন্যদিকে মজুরি বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।                                    
জানাযায়, নৌযান শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠন তাদের ১৫ দফা দাবি পূরণের লক্ষ্যে প্রায় একবছর যাবত সরকারের প্রতি আবেদন জানানোর পাশাপাশি নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। কিন্তু ইতিবাচক কোনো ফল না পেয়ে ২১ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টা থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডাকে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন ও বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত বুধবার নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ও নৌযান মালিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা শ্রমিকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন। কিন্তু সমঝোতা না হওয়ায় রাত ১২টা থেকে শুরু হয় পূর্বঘোষিত লাগাতর নৌ ধর্মঘট। এতে সারা দেশে নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে।
জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, যাত্রীবাহী লঞ্চসহ সব ধরনের পণ্যবাহী জাহাজে কর্মরত শ্রমিকদের বর্তমান ন্যূনতম মজুরি ৪ হাজার ১০০ টাকা; বর্তমান বাজারমূল্যে যা খুবই নগন্য। নৌযান শ্রমিকরা তাঁদের মজুরি বাড়িয়ে ন্যূনতম ৮ হাজার ২৫০ টাকা করার যে দাবি তুলেছেন তা অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত। এছাড়া নৌপথে চাঁদাবাজি বন্ধ, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও নিয়োগপত্র প্রদানসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির দাবিও যৌক্তিক বলে মনে করে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি। সুতরাং জনস্বার্থে এ সংকট নিরসনে দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান
অন্যদিকে ধর্মঘটের কারণে গতকাল খুলনা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নৌ যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে নৌঘাটগুলোতে বুধবার রাত ১২টা থেকে পণ্য উঠা-নামা বন্ধ রয়েছে। অচল হয়ে পড়েছে ওইসব এলাকার নৌ-ঘাটগুলো।
নৌ-যান ফেডারেশনের সহ-সভাপতি বাহারুল ইসলাম বলেন, ‘মংলা বন্দর থেকে যশোরের নওয়াপাড়া পর্যন্ত কোথাও কোনো নৌ-যান চলছে না। এসব ঘাটে প্রায় ৫ শতাধিক নৌ-যান পণ্য উঠা-নামার অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া সারাদেশে একযোগে এই ধর্মঘট পালিত হচ্ছে।’
গতকাল সকাল থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে পণ্যবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব ও পশ্চিম তীরে নোঙর করে রয়েছে পণ্যবাহী নৌযান। নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জসহ স্বল্প দৈর্ঘ্যের রুটে কিছু যাত্রীবাহী লঞ্চ ছেড়ে গেলেও অন্যান্য রুটের লঞ্চ ছেড়ে যায়নি।
বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মিজানুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত ২৬টি লঞ্চের মধ্যে ১৬ টি লঞ্চ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। শীতলক্ষ্যার দুই তীরে গড়ে ওঠা শতাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানে পণ্য লোড আনলোড বন্ধ রয়েছে। জাহাজগুলো স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের সামনে নোঙর করে রাখলেও লোড আনলোড হচ্ছে না। অন্যদিকে ‘মানুষদের জিম্মি করে দাবি আদায়ের চেষ্টা না করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে নৌ মালিক ও শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান করেছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। গতকাল দুপুরে আশুলিয়ার দক্ষিণ জামগড়া এলাকায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কুরআন শিক্ষা ফাউন্ডেশনের তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘এটা সরকারের কোনো বিষয় নয়। ফলে কোনো সিদ্ধান্ত জোর করে কারোর ওপর চাপিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।’ তবে সরকার মিডিয়া হয়ে কাজ করতে পারে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘মজুরি আদায়ে শ্রমিকদের নৌ ধর্মঘটের যুক্তিকতা রয়েছে। তবে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে জিম্মি আদায়ে চেষ্টা সঠিক নয়।’          
এ বিষয়ে নৌ মালিকদের অনড় না থেকে নমনীয় হতে হবে। উভয়পক্ষ জনদুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রেখে দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানান।
কর্ণফুলির ১৬ ঘাটে পণ্য খালাস বন্ধ
চট্টগ্রাম ব্যুরো : ধর্মঘটের কারণে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে কর্ণফুলী নদীর ১৬ ঘাট। বুধবার মধ্যরাত থেকে সারা দেশের মতো কর্ণফুলীর ১৬ ঘাটেও পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে।  
বহির্নোঙরে অবস্থানরত বড় জাহাজ থেকে খোলা পণ্য বোঝাই করে আসা ছোট জাহাজগুলো (লাইটার) থেকে কর্ণফুলীর ঘাটগুলোতে কোন পণ্য ওঠানামা করছে না। অলস সময় কাটাচ্ছেন শ্রমিকরা। বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন ও লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, বন্দরের জেটিতে দেশি-বিদেশি বড় জাহাজগুলোতে স্বাভাবিক কাজ চলছে। তবে কর্ণফুলী নদীর ঘাটগুলোতে অবস্থানরত লাইটার জাহাজ, ট্যাংকারগুলোতে কাজ বন্ধ রয়েছে।
লাইটার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নবী আলম মাস্টার বলেন, নৌযান শ্রমিকদের বেতন সরকারি পে-স্কেলের সঙ্গে সমন্বয় এবং নদী পথে অব্যাহত চাঁদাবাজি বন্ধসহ ১৫ দফা দাবিতে বুধবার আমরা মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে বসেছিলাম। ১০ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হলেও আমাদের দাবি আদায়ের বিষয়ে বৈঠকে কোন সুরাহা হয়নি। তাই বুধবার রাত ১২টা থেকে ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, নৌযানের (কার্গো, কোস্টার, বার্জ) শ্রমিক-কর্মচারীরা তাদের কাজ বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করছেন। সারাদেশে এ কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। তবে ব্যক্তি মালিকানাধীন লাইটার জাহাজের কাজ চলছে।
এদিকে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহারে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল এক জরুরি বার্তায় তিনি বলেন, ১৫ দফার দাবিতে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের আহবানে লাইটারেজ ও ফিশিং জাহাজের ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য খালাস ও পরিবহন এবং গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ বন্ধ রয়েছে। ফলে আমদানিকৃত কাঁচামাল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় অচলাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে সারাদেশে নিত্যপণ্যের সংকট সৃষ্টি হবে এবং পণ্যমূল্যের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার আশংকার পাশাপাশি বন্দরের ডেমারেজ চার্জসহ ব্যয় বৃদ্ধির ফলে আমদানিকারকগণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে মনে করেন চেম্বার সভাপতি।                                                     
খুলনায় ৫শ’ নৌযান খালাসের অপেক্ষায়
বিশেষ সংবাদদাতা, খুলনা : খুলনায় পাঁচ শতাধিক নৌযান থেকে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে ৫ শতাদিক নৌযান পন্য খালাসের অপেক্ষারত।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টিএনঘাট, ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ঘাট এবং রুজভেল্ট জেটিতে অবস্থানরত কোন জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করা হয়নি। এ ছাড়া খুলনা লঞ্চঘাট থেকে কোন নৌযান ছেড়ে যায়নি বা আসেনি। এরআগে গত বুধবার মজুরি বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবি আদায়ের জন্য নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন এ ধর্মঘটের ডাক দেয়। ধর্মঘটের সমর্থনে খ- খ- মিছিল করেন শ্রমিকরা।
নৌ-যান ফেডারেশনের সহ-সভাপতি বাহারুল ইসলাম জানান, মংলা বন্দর থেকে যশোরের নওয়াপাড়া পর্যন্ত কোথাও কোন নৌযান চলছে না। এসব ঘাটে পাঁচ শতাধিক নৌযান অবস্থান করছে পণ্য ওঠানামার জন্য।  
এদিকে, এসব ঘাট ও রুজভেল্ট জেটি পরিদর্শন করে দেখা গেছে, কার্গো বার্জ থেকে পণ্য নেয়ার জন্য শত শত ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকলেও নৌযান শ্রমিকরা কাজ করছে না। ফলে সব স্থবির হয়ে পড়েছে।
মংলা বন্দর থেকে নৌপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ
মংলা সংবাদদাতা : বুধবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে এই লাগাতার কর্মবিরতি ফলে মংলা বন্দর থেকে নৌপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন মংলা আঞ্চলিক কমিটির  সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম মাষ্টার জানান, ন্যূনতম ১০ হাজার টাকা মূল মজুরী ঘোষনাসহ ১৫ দফা দাবিতে  রাত ১২টা ১মিনিট থেকে তারা লাগাতার কর্মবিরতি পালন করতে শুরু করেছে । তিনি দাবি করেন , দীর্ঘদিন ধরে তারা মালিক পক্ষকে ওই সব দাবি জানিয়ে আসলেও তা মালিক পক্ষ মেনে নিচ্ছেনা  সেজন্যই তারা এই লাগাতার কর্মবিরতি পারন করছেন । দাবি মানা নাহলে তারা পণ্য পরিবহনের কাজে অংশ নেবেনা ।
মংলা  অবস্থানরত সকল নৌযান কর্মচারিরা জাহাজ গুলো নোঙ্গর করে অলসভাবে বসে থাকার ফলে মংলা বন্দর থেকে নৌপথে সারাদেশে পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যয়ে
বরিশাল ব্যুরো :  ধর্মঘটে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘটের ফলে হাজার-হাজার মানুষ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে আটকা পড়েছে। বরিশাল  সহ দক্ষিণাঞ্চলের নদী বন্দরগুলোর আওতাধীন ৩০টি নৌ পথের অন্তত দেড়শ’ যাত্রীবাহী নৌযানের শ্রমিকরা গতকাল সকাল থেকে অবিরাম ধর্মঘট শুরু করায় সাধারন মানুষের দুর্ভোগও সব বর্ণনার বাইরে।
এ ধর্মঘটের ফলে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে রাজধানী ঢাকার সাথে সংযোগ রক্ষাকারী শতাধিক যাত্রীবাহী নৌযানও যাত্রী পরিবহন থেকে বিরত রয়েছ। ফলে অন্তত ৫০ হাজার মানুষের নির্বিঘœ চলাচলে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। শুধুমাত্র বিআইডব্লিউটিসি’র একটি যাত্রীবাহী নৌযান গতকাল বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ থেকে পিরোজপুর ও ঝালকাঠী থেকে বরিশাল হয়ে চাঁদপুরÑঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। নৌযানটির ছাদেও তিল ধরার ঠাঁই ছিলনা। তবে গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে বিআইডব্লিউটিসি’র নিয়মিত রকেট ষ্টিমারের সাথে একটি বিশেষ নৌযানও বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের উদ্যেশ্যে যাত্রা করে। কিন্তু আজ (শুক্রবার) সিডিউল অনুযায়ী ঢাকা থেকে সরকারী এ সংস্থাটির কোন নৌযান দক্ষিণাঞ্চলের উদ্যেশ্যে যাত্রা করার কথা নয়। পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রয়োজনে আজ ঢাকা থেকে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের উদ্যেশ্যে সংস্থাটির বিশেষ নৌযান ছাড়ার ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব আতাহার আলী।
চাঁদপুর নৌ-বন্দরে ভোগান্তিতে হাজারো যাত্রী
চাঁদপুর জেলা সংবাদদাতা : ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে চাঁদপুর নৌ-বন্দর। পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়েছে হাজার হাজার যাত্রী। বুধবার রাত হতে চাঁদপুর থেকে সকল রুটে সব ধরনের নৌ-যান চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় নারী পুরুষ ও শিশু যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এছাড়াও নৌ-যান চলাচল বন্ধ থাকায় রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। যদিও শ্রমিক নেতারা বলছেন দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।
প্রতিদিন চাঁদপুর থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, খুলনা, ভোলাসহ অন্তত ২০টি রুটে প্রায় অর্ধশতাধিক যাত্রীবাহি লঞ্চসহ সকল ধরনের নৌ-যান চলাচল করে। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে ঐসব যানবাহন বন্ধ রয়েছে। ফলে চাঁদপুর নৌঘাটেই প্রবেশ ফি বাবদ প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা রাজস্ব আদায়ও বন্ধ রয়েছে। আর এভাবে ধর্মঘট অব্যহত থাকলে রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তেই থাকবে।
আশুগঞ্জে ভোগান্তি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা : কেন্দ্রীয় নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। আশুগঞ্জে  এ কর্মবিরতিতে লঞ্চ, বাল্কহেড, তেলবাহী ট্যাংকার, বালুবাহী নৌকা, লাইটার জাহাজসহ সকল প্রকার নৌযান শ্রমিকরা একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মবিরতি পালন করছে। ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পন্য নিয়ে আসা প্রায় দু’শতাধিক কার্গো জাহাজ আশুগঞ্জ নৌবন্দরে আটকে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে আশুগঞ্জের সাথে দেশের পূর্বাঞ্চলীয় ৬ টি নৌ-রুটের ৫ জেলা সিলেট, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ১৪ উপজেলার লঞ্চ যোগাযোগ।                                                                                                                                                    
ঢাকার সদরঘাটে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলাকালে গতকাল তাদের সঙ্গে ঘাটশ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় ঘাটশ্রমিকদের পিটুনিতে ৩ নৌযান শ্রমিক আহত হয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যায় নৌযান শ্রমিকরা কর্মবিরতির সমর্থনে মিছিল বের করলে তাদের ধাওয়া করেন ঘাটশ্রমিকরা। এ সময় নৌযান শ্রমিকদের মিছিলে থাকা তিনজনকে ধরে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন তারা। তাদেরকে স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
সর্বনিম্ন মজুরি ১১ হাজার টাকা নির্ধারণ ও গ্রহণযোগ্য পে-স্কেল ঘোষণাসহ ৭ দফা দাবি আদায়ে বাংলাদেশ জাহাজ শ্রমিক ফেডারেশনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
শীতলক্ষ্যায় নৌযান শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিল
না’গঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার : নৌযানে কর্মরত সকল জাহাজী শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য সর্বনি¤œ মজুরি ১১ হাজার টাকা নির্ধারণ ও গ্রহণযোগ্য পে-স্কেল ঘোষণাসহ ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ২১ এপ্রিল থেকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীসহ দেশব্যাপী নৌপথে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছে নৌযান শ্রমিকরা। সকাল ৬টা থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে বন্ধ রয়েছে পণ্যবাহী নৌযান চলাচল। অন্যান্য দিনের তুলনায় যাত্রীবাহী লঞ্চও চলাচল করেছে সীমিত সংখ্যক। এতে করে যাত্রীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে দুর্ভোগ। এদিকে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে দুর্ভোগে পড়েছে লোড আনলোড শ্রমিকরাও। এছাড়া নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে কমেছে ট্রাক, কাভার্ডভ্যানের চলাচলও।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে শহরের ৫ নং সারঘাট এলাকা থেকে মিছিলটি বের হয়ে বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ শিকদার, ত্রাণ ও পুর্নবাসন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল ওয়াহিদ মাস্টার, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি সরদার আলমগীর মাস্টার, কার্যকরী সভাপতি নিজামউদ্দিন খান, যুগ্ম সম্পাদক আক্তার হোসেন, ডেমরা শাখার সভাপতি জাকির হোসেন, নারায়ণগঞ্জ শাখার নেতা কবির হোসেন, কাওসার আহমেদ ও পান্না মিয়া প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্মঘটে নৌপথ অচল

২২ এপ্রিল, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ