পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। দ্রোহ, প্রেম, সাম্য, মানবতার কবি, বিদ্রোহী কবি একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সম্পাদক এমনকি রাজনীতিবিদ ও সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল ছিলেন সোচ্চার। বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ই জ্যৈষ্ঠ (২৪শে মে, ১৮৯৯) বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে কবি কাজী নজরুল ইসলাম জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম দুখু মিয়া। এক দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। প্রাথমিক শিক্ষা ছিল ধর্মীয়।
তাঁর বিচিত্র জীবনে স্থানীয় এক মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। কাজ নেন একটি রুটির দোকানে। আঠার বছর বয়সে বৃটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কিছুদিন কাজ করার পর সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। এক সময় তিনি বৃটিশ রাজের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। এ সময় তিনি রচনা করেন ‘বিদ্রোহী’ ও ‘ভাঙার গান’ কবিতা। রচনা করেন সাময়িকী ধূমকেতু। প্রতিবাদী লেখার কারণে এক সময় তিনি জেলে বন্দি হন। জেলবন্দি অবস্থায় তিনি লেখেন ‘রাজবন্দির জবানবন্দি’।
কাজী নজরুলের লেখনী জাতীয় জীবনে অসামপ্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। তাঁর কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। তার কবিতা ক্রমে বৃটিশ রাজের শোষণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদী ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তাঁর বিদ্রোহী কবিতায় সরাসরি বৃটিশ রাজকে সমালোচনা করা হয়। এ ছাড়া ভাঙ্গার গান, ধূমকেতু কবিতাও একই চেতনার কবিতা নির্মাণ করেন কবি। ছোটকাল থেকেই কবির রচনায় অসামপ্রদায়িক চেতনার বিকাশ ঘটে। তিনি বিদ্রোহী উপাধিতে ভূষিত হন। তার বই নিষিদ্ধ করে বৃটিশ শাসকরা। তিন হাজার গান রচনা করেন কাজী নজরুল। তার গানের বাণী হয়ে উঠে মানবতাবাদ ও সাম্যবাদের পক্ষে শক্তিশালী হাতিয়ার। অসংখ্য গানের সুরারোপও করেন কবি নিজেই। পেশাগত জীবনে কবি দীর্ঘদিন সাংবাদিকতায় নিয়োজিত ছিলেন। দুটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তাঁর বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির বসবাসের জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন তিনি। মধ্য বয়সে তিনি রোগাক্রান্ত হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
দীর্ঘকাল অসুস্থ থাকার পর কবি ১৯৭৬ সালের ২৯শে আগস্ট (১২ই ভাদ্র) ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে দাফন করা হয়। কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন, রাজনৈতিক দল বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কবির মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে কবির সমাধিতে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি পালন শুরু হবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো হবে।
বাংলা একাডেমি দিবসটি উপলক্ষে দুদিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, নজরুল একাডেমিসহ বিভিন্ন সংগঠন পৃথক কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।