Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঝিনাইদহে আবারো কলেজ ছাত্রের গুলিবিদ্ধ লাশ

প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩৮ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০১৬

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার ঈশ্বরবা জামতলা থেকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া সেই কলেজছাত্র সোহানের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেছে। নিহত সোহানুর কালীগঞ্জের ঈশ্বরা গ্রামের মহাসিন আলীর ছেলে ও স্থানীয় শহিদ নূর আলী কলেজের প্রথমবর্ষের ছাত্র। নিখোঁজের ১২ দিন পর বুধবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাড়াগোদা গ্রামের পন্নাতলা মাঠে সোহানের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। ২০১৫ সালের ৩ মার্চ একই স্থানে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া ঝিনাইদহের যুবদল নেতা মেরাজুল ইসলামের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে ছিল। গ্রামবাসী জানায়, বুধবার সকাল ৭টার দিকে কৃষকেরা মাঠে কাজ করতে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে অল্প বয়সী এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। সোহানের খালাতো ভগ্নিপতি কোঁচদপুর উপজেলার সাবদারপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনাস্থলে এসে লাশটি তার শ্যালকের বলে শনাক্ত করেন। আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গত ১০ এপ্রিল বিকেল ৫টার দিকে ঈশ্বরবা জামতলা নামক স্থানে তার মায়ের জন্য অপেক্ষা করছিলো সোহান। এ সময় নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে চারজন লোক ইজিবাইকে করে জোরপূর্বক তাকে তুলে নিয়ে যায়। সেই থেকে সোহান নিখোঁজ ছিল। সোহানুর রহমানের মা পারভীনা বেগম জানান, তার ছেলে সোহান কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে পড়ালেখা করে। এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৩১ পেয়ে কালীগঞ্জ শহরের শহিদ নূর আলী কলেজে ভর্তি হয়েছিল পুলিশ পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে কেন তাকে হত্যা করা হলো?
সংবাদ সম্মেলনে সোহানের বাবা বলেছিলেন, আমার ছেলে কোন রাজনীতি করে না। ছেলের সন্ধানে রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের দারস্থ হয়ে আমি ক্লান্ত। সবাই আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে। সোহানের নিখোঁজ থাকার বিষয়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বরাবর বলে আসছেন এ ঘটনার সাথে পুলিশ জড়িত নয়। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, হত্যাকা-ের কোনো কারণ জানা যায়নি। দুর্বৃত্তরা সোহান নামে এক কলেজ ছাত্রকে হত্যা করে চুয়াডাঙ্গা জেলার মধ্যে লাশ ফেলে রেখে গেছে। তবে তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এদিকে ঝিনাইদহজুড়ে আইন-শৃংখলা বাহিনী পরিচয়ে এখন সাদা পোশাকের লোকজনের আতংকে ভুগছে মানুষ। পুলিশ বা ডিবি পরিচয়ে লোকজন তুলে নিয়ে যাওয়ার পর লাশ মিলছে। কিন্তু কোন কূল-কিনারা পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশের পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছে তাদের কোন সদস্য এ ঘটনার সাথে জড়িত নয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সালের ২০ এপ্রিল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ২৭ জনকে তুলে নিয়ে যওয়া হয়। এর মধ্যে লাশ পাওয়া গেছে ২৪ জনের। বাকী তিনজন এখনো গুম রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবর ও রাজনৈতিক দলের দাবী মতে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ৩ জন বিএনপি, ৬ জন জামায়াত শিবির, ১ জন আওয়ামী লীগের কর্মী নিহত হয়েছেন। বাকী ১৪ জনের বিরুদ্ধে চরমপন্থী ও সন্ত্রাসী হিসেবে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। বাইরে থেকে ঝিনাইদহে এনে হত্যা করা ৬ জনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। এ সব বিষয়ে ঝিনাইদহ পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ বলেন, এ সব হত্যার বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সুনির্দিষ্টভাবে কোন অভিযোগ করছে না। তিনি আরো জানান, দু’একটা অপহরণ বা তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ফাইন্ড আউট হলে অপরাধ বন্ধ হবে বলে তিনি মনে করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঝিনাইদহে আবারো কলেজ ছাত্রের গুলিবিদ্ধ লাশ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ