Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভারতে খরায় ৩৩ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত

প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতে খরায় কমপক্ষে ৩৩ কোটি লোক ক্ষতিগ্রস্ত। সরকার সুপ্রিম কোর্টকে এই তথ্য জানিয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, চরম পানি ঘাটতির সন্মুখীন কয়েকটি রাজ্য এখনো বিস্তারিত তথ্য না দেয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
বর্তমানে কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের অনেক উপরে থাকায় ভারতের বেশিরভাগ অঞ্চলেই দাবদাহের বিস্তার ঘটায় এরসঙ্গে পাল্লা দিয়ে খরারও বিস্তার ঘটছে। চলমান দাবদাহ অনেকেরই প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। সর্বশেষ পশ্চিমাঞ্চলীয় মহারাষ্ট্র রাজ্যে গ্রামের পাম্প থেকে পানি তুলতে গিয়ে ১১ বছরের এক মেয়ে হিটস্ট্রোকে মারা গেছে। পাম্প থেকে পানি আনার জন্য ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের প্রচ- গরমে যোগিতা দেশাই নামের এই মেয়েকে সেখানে দীর্ঘ লাইনে ৪ ঘন্টা অবস্থান করতে হয়। এক পর্যায়ে হিটস্ট্রোকে সে মারা যায়।
সরকার বলছে, সারা ভারতের জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাশই কোন না কোনভাবে খরায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পূর্বাঞ্চলীয় উড়িষ্যা রাজ্যে সকল বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে এবং এবারের গ্রীষ্মকালের শুরুতেই দক্ষিণাঞ্চলীয় তেলেঙ্গানা রাজ্য থেকে অন্ধ্রপ্রদেশজুড়ে সারা ভারতে হিটস্ট্রোকে এ পর্যন্ত শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গত গ্রীস্মকালজুড়ে প্রাণহানির সংখ্যা ছিল ২ হাজারের বেশী।
ভারত মওসুমী বৃষ্টিপাতের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। কিন্তু গত দুই বছরে খুব সামান্যই বৃষ্টিপাত হয়েছে।
খরা পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার বিভিন্ন রাজ্যে বিশেষ ট্রেনে করে পানি পৌঁছে দিচ্ছে। ২৫ লাখ লিটার পানি নিয়ে আরো একটি বিশেষ ট্রেনের গতকাল মহারাষ্ট্রের লাতুরে পৌঁছানোর কথা। খরায় এই রাজ্য সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খরার কারণে ক্রিকেট পিচে পানির ব্যবহার বন্ধে এই রাজ্য থেকে আইপিএলের ১৩ টি ক্রিকেট ম্যাচ সরিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকার স্থানীয় পৌর কর্তৃপক্ষগুলোকে সকল সুইমিং পুলে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্যটি পরপর দুইবছর খরার কবলে পড়ায় মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। ইতিমধ্যে শস্য উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় মৎস্যজীবিরা বেকার হয়ে পড়ছে।
এদিকে পানি নিয়ে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মতো উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো নদীর পানির মালিকানা নিয়ে বিবাদে লিপ্ত হয়েছে। তীব্র পানি সংকটে উড়িষ্যায় কৃষকরা তাদের ক্ষেতের ফসল বাঁচাতে নদ-নদীর বাঁধ কেটে দিচ্ছে বলে জানা গেছে।
ভারতের ৯১ টি রিজারভারে পানির প্রাপ্যতা দশকের মধ্যে সর্বনি¤œতে নেমে গেছে। দেশটিতে খাবার পনির ৮৫ শতাংশ আসে নদী থেকে। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে নদীতেও পানির স্তর অনেক নেমে গেছে।
গত দুই বছর ধরে মৌসুমী বৃষ্টিপাত অনেক কমে গেছে। মেরু অঞ্চলের বাইরে বরফ জমিয়ে রাখার পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আধার হিমালয় পবর্তমালা। ভারতের নদ-নদীতে পানি প্রবাহ অব্যাহত রাখতে হিমালয়ে গলে যাওয়া বরফ বিরাট ভূমিকা রাখে। নদীর প্রবাহের ১৫ শতাংশ অবদান হচ্ছে হিমালয়ের বরফ গলা পানি। কিন্তু এ বছর এই বরফ গলতেও বিলম্ব হয়েছে।
পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, গত দুই বছরে মওসুমী বৃষ্টির যে খামখেয়ালিপনা তার জন্য অনেকাংশে দায়ী প্রশান্ত মহাসাগরের শক্তিশালী এল নিনোর প্রভাব। সূত্র : বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারতে খরায় ৩৩ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ