Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মানবপাচার চক্রের হোতা আছেম গ্রেফতার

শিক্ষকতার আড়ালে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে পাচার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

মানবপাচারের অভিযোগে মোহাম্মদ আছেম (৩৫) নামে এক কলেজ শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি। গত রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মানব পাচার চক্রের হোতা আছেম কলেজ শিক্ষকতার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে নৌকায় করে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে মানব পাচার করে আসছে। গতকাল মালিবাগে সিআইডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম এ সব তথ্য জানান।
আছেমের বাড়ি কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মৌলভীপাড়ায়। তিনি রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পূর্ব রাজাবাজারে থাকেন এবং তেজগাঁও কলেজের বিবিএ অনুষদের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। গত পাঁচদিন আগে সিআইডি তাকে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু তিনদিনের মাথায় সে জামিন নিয়ে বেড়িয়ে আসে।
মোল্লা নজরুল বলেন, আছেমের বাবা আনোয়ার হোসেন ও বড় ভাই মোহাম্মদ খোবায়েদ দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় থাকছেন। এই সুবাদে সে কক্সবাজার ও টেকনাফ দিয়ে সাগর পথে অবৈধভাবে শতশত মানুষকে মালয়েশিয়ায় পাচার করেছে। মালয়েশিয়া পাঠানোর পর তাদেরকে আটকে  রেখে নির্যাতন চালিয়ে বাংলাদেশে থাকা স্বজনদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ মুক্তিপণ আদায় করে। এ সব টাকা নিজের অ্যাকাউন্ট ছাড়াও মা এবং অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের রাখে। তিনি আরও বলেন, চক্রটি গত কয়েক বছরে হাজার হাজার মানুষকে মালয়েশিয়ায় পাচার করেছে। তারা পাচারের রুট হিসেবে কক্সবাজার-থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়ায় সাগর পথ ব্যবহার করতো। নৌপথে মালয়েশিয়ার যাওয়ার সময় অনেক মানুষ মারা গেছেন। নিখোঁজও আছেন অনেকে।
মোল্লা নজরুল বলেন, চক্রটি ২০১৪ সালে সিরাজগঞ্জের মাসুদ নামে এক ব্যক্তিকে মালয়েশিয়ায় পাচার করে। এরপর মুক্তিপণ হিসেবে মাসুদের পরিবারের কাছে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে মাসুদের বাবা আব্দুস ছালাম ইসলামী ব্যাংকের মহাখালী শাখার একটি অ্যাকাউন্টে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা পাঠায়। টাকা নেওয়ার পরেও মাসুদকে মুক্তি না তিনি উল্লাপাড়া থানায় একটি মামলা করেন। সিআইডি মামলাটির তদন্ত করতে গিয়ে আছেমের মতো সংঘবদ্ধ আন্তর্জাতিক পাচারচক্র সম্পর্কে জানতে পারে। এরপর গত বছরের ২ মে মানব পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক খান বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। পরে তদন্তকালে পুলিশ মানবপাচার চক্রের সব সদস্যের পরিচয় জানতে পারে। সিআইডি জানায়, আছেম মানবপাচারের টাকায় রাজধানীতে ‘এসিএম করপোরেশন’ নামে একটি রিক্রটিং এজেন্সি খুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে অনেক টাকার হদিস পাওয়া গেছে। সে সব টাকা প্রতিষ্ঠানের ফাইন্যান্স ম্যানেজার আরিফুজ্জামান আকন্দ ওরফে আরিফ তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নিয়েছে। এ ছাড়া মানব পাচারের টাকা দিয়ে টেকনাফে বাড়ি ও জমি এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাতে জমি কিনেছে আছেম। তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং ও মানবপাচারের তিনটি মামলা রয়েছে। যা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া, বাজিতপুর ও বনানী থানায় করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ