Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কোরবানির চামড়ার দর নিয়ে টেনারি সিন্ডিকেটের অসাধু চক্রান্ত বন্ধ করতে হবে -কওমী ফোরাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০১৮, ৪:২২ পিএম | আপডেট : ৫:০১ পিএম, ২০ আগস্ট, ২০১৮

কওমী মাদরাসার অস্তিত্ব রক্ষা ও চামড়া খাতের বিপর্যয় রোধে এবং গরীবের হক আদায়ে কোরবানির চামড়ার ২০১৩ সালের দর অনুযায়ী ন্যায্যমূল্য নির্ধারণের দাবী করেছে কওমী ফোরাম। ‘চামড়ার যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে মাদরাসা ও চামড়া শিল্প ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার দাবীতে’ আজ সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী হলে কওমী ফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এ দাবী করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, কোরবানির চামড়ার মূল্য ২০১৩ সালের তুলনায় এবার অর্ধেকের চেয়ে কম মূল্য নির্ধারণ করে কওমী মাদরাসা সমূহকে এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক খাত চামড়া সেক্টরকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করছে বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের প্রশ্রয় পাওয়া টেনারী সিন্ডিকেট। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সমন্বয়ক মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা হাসান জামিল, মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ আরমান, মাওলানা রুহুল আমীন সাদী, মুফতি এনায়েতুল্লাহ, মাওলানা গাজী ইয়াকুব, মুফতি মুরতাজা হাসান ফয়জি মাসুম, মুফতি রেজওয়ান রফিকী ও ছাত্রনেতা তোফায়েল গাজালি, মুফতি শামসুদ্দুহা আশরাফী, মুফতি জাকারিয়া সিদ্দীকী প্রমুখ।
কওমী ফোরামের সাংবাদিক সম্মেলনে আরো বলা হয় ২০১৩ সালে সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া ৮৫ থেকে ৯০ টাকা আর ঢাকার বাইরে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে কেনা হয়। সারাদেশে প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়ার দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। অর্থাৎ প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দর করা হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। আর খাসির দর করা হয়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। অর্থাৎ ছয় বছরে ক্রমান্বয়ে কমিয়ে এনে এ বছর চামড়ার দাম কমানো হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কওমী মাদরাসা সমূহের ২০ লাখ ছাত্র শিক্ষক ঈদের আনন্দ বাদ দিয়ে চামড়া সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত থাকে । এ বছর চামড়ার যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে চামড়া সংগ্রহের যাতায়াত ব্যায়ের টাকা উঠাও কঠিন। উল্লেখ্য স¤প্রতি ঢাকার একটি মাদরাসাকে দেওয়া একটি চামড়া সংগ্রহে যাতায়াত ব্যায় হয়েছে ২৪০ টাকা। আর চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে ১৪০টাকার কম। এ অবস্থা চলতে থাকলে কওমী অঙ্গন চামড়া সংগ্রহের কাজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। আর তখন সারা দেশের আনাচে কানাচের কোরবানির চামড়া সংগ্রহ করা সরকার এবং টেনারি সিন্ডিকেটের পক্ষে সম্ভব হবে না। ফলে চামড়া শিল্পে নেমে আসবে কঠিন বিপর্যয়। কোরবানির চামড়ার ন্যায্য মূল্যের উপর গরীব ও এতিমদের হক আদায়ে ব্যর্থতার দায়ভার নিতে হবে বানিজ্যমন্ত্রনালয় তথা সরকার ও টেনারি সিন্ডকেটকে। কারণ কোরবানির চামড়ার ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করে সংগ্রীহিত অর্থ গরীব এবং এতিমদের মাঝে বিতরণ ওয়াজিব।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় টেনারী ব্যবসায়ীরা বলছেন, চামড়ার মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে যাওয়ার কথা। আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম সম্পর্কে ‘ইনডেক্সমুডি’ নামের একটি ওয়েবসাইটে দেখানো হয়েছে, ‘২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে গরুর চামড়ার প্রতি পাউন্ডের দাম ছিল ৮৬ সেন্ট। ২০১৪ সালে তা বেড়ে ১ ডলার ১৫ সেন্ট পর্যন্ত উঠেছিল। ২০১৫ সালে দাম কমতে শুরু করে। এখন চামড়ার দাম প্রতি পাউন্ড ৭০ সেন্ট। সুতরাং আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার মূল্য যে হারে কমেছে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি হারে বাংলাদেশ চামড়ার মূল্য কমানো হয়েছে। এটি ভয়ানক চক্রান্তের অংশ। এচক্রান্ত প্রতিহত করতে কওমী অঙ্গনকে যথাযথ ভূমিকা নিতে হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ