Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শফিক রেহমানকে মুক্তি দিন

প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানের গ্রেফতারের তীব্র সমালোচনা করেছে সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টস (আইএফজে) এবং ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ইনস্টিটিউট (আইপিআই)। সংস্থা দুটি নিজেদের পৃথক পৃথক বিবৃতিতে শফিক রেহমান অতিসত্ত্বর কারাগার থেকে মুক্তি দেয়ার আহ্বানও জানিয়েছে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরামের সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতিতে আইএফজের বলেছে, ‘প্রবীণ একজন সাংবাদিকের গ্রেপ্তারে আইএফজে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সরকারের সমালোচনাকারী সম্পাদকদের বিরুদ্ধে আইনি হয়রানির বর্তমান প্রবণতা বাংলাদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পরিস্থিতিতে তীব্র উদ্বেগ তৈরি করেছে। ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে উদযাপনের প্রস্তুতি নেয়ার সময়ে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর হামলা বন্ধ করার জন্য আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাই।’
বিবৃতিতে অবিলম্বে শফিক রেহমানের মুক্তি দাবি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর নিপীড়নের সমাপ্তি দাবি করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ৮১ বছর বয়সী শফিক রেহমানকে শনিবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয় তার বাসভবন থেকে। এ সময় কর্তব্যরত পুলিশ অফিসাররা ছিলেন সাদা পোশাকে। তারা বৈশাখী টিভির সাংবাদিক পরিচয়ে শফিক রেহমানের বাসভবনে প্রবেশ করে তাকে গ্রেফতার করেন। এরপর তাকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তার বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যার প্রচেষ্টায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনা হয়েছে। শফিক রেহমান জামিনের আবেদন করলেও তা নামঞ্জুর করা হয়।
আইএফজের বিবৃতিতে বিবিসিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আটক করা বিরোধীদলপন্থি সম্পাদকের মধ্যে শফিক রেহমান তৃতীয়। ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে ৩৬টিরও বেশি মামলা দায়ের করা হয়, যার মধ্যে ছয়টি মামলা ছিল রাষ্ট্রদ্রোহিতার এবং অনেক মামলা ছিল মানহানির। ৩রা ফেব্রুয়ারি এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে মাহফুজ আনাম স্বীকার করেছিলেন, প্রায় এক দশক আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তৎকালীন গোয়েন্দা সংস্থার সরবরাহকৃত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তার পত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল, যেসব তথ্য পত্রিকাটি স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করতে পারেনি। একে নিজের সম্পাদকীয় বিবেচনার ভুল হিসেবেও স্বীকার করে নেন তিনি। এর পরপরই তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের করা হয়।
এদিকে গতকাল ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ইনস্টিটিউট তাদের ‘বাংলাদেশে বিরোধীমতের সাংবাদিকদের গ্রেফতার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে’ শিরোনামের বিবৃতিতে বলেছে, খ্যাতিমান সাংবাদিক এবং সম্পাদক শফিক রেহমানের গ্রেফতারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে আইপিআই। সংস্থাটির ডিরেক্টর অব এভোকেসি এন্ড কমিউনিকেশন্স স্টিভেন এম ইলিস বলেন, ‘সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহ প্রমাণ করছে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের জন্য এ যাবৎকালের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। একই সাথে রাজনৈতিক বিরোধীদের সাথে যারা কণ্ঠ মিলাচ্ছেন তাদেরকে জেলে ঢুকানো হচ্ছে, আর উগ্রবাদের বিরোধীতাকারীদেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হচ্ছে।’
স্টিভেন ইলিস সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, হয় শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগের প্রমাণাদি প্রকাশ্যে হাজির করা হোক অন্যথায় তাকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দিয়ে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ বাতিল করা হোক



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শফিক রেহমানকে মুক্তি দিন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ