পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : কৃষকদের মাথায় করে রাখা উচিত এবং তাঁদের সবচেয়ে বেশি সম্মান করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কৃষক লীগের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর খামারবাড়িতে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষক আমাদের বেঁচে থাকার পণ্য উৎপাদন করে। খাদ্যপণ্য উৎপাদন করে, ক্ষুণিœবৃত্তি জোগায়। ক্ষুধার জ্বালা কেমন, সেটা তো মানুষ জানেই। সে জ্বালা পূরণ করে কে? সে আমার কৃষক। কাজেই কৃষকদের মাথায় করে রাখা উচিত। সবচেয়ে সম্মান করা উচিত বলে আমি মনে করি।
ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা স্কুলে পড়ে, কলেজে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, তাদেরও কৃষি মাঠে নিয়ে যাওয়া দরকার। কৃষিপণ্য কীভাবে উৎপাদন করা হয়, হাতে-কলমে এটা তাদের অনুশীলন করা দরকার, জানা দরকার। তারা ঘরে বসে খাবে, ওটা কোথা থেকে এসেছে তা-ও জানবে না, গাছটাও চিনবে না; ধানগাছে তক্তা হয় কি না, সেটার খোঁজ করবে। আসলে একসময় সেটাই হয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, প্রতিটি স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একবার হলেও মাঠে নিয়ে যাওয়া উচিত। তাদের হাত দিয়ে কিছু কাজও করানো উচিত, হাতে-কলমে কিছু শিক্ষা দেওয়া উচিত। তার জন্য যদি এক্সট্রা নম্বর প্রয়োজন হয়, তা-ও দেওয়া উচিত। যাতে কৃষিকাজটাকে কেউ ছোট চোখে না দেখে। কৃষকের ছেলে পড়ালেখা শিখে আর মাঠে যেতে চায় না। অনেক সময় বাপের পরিচয় দিতেও লজ্জা পায় যে তার বাবা কৃষক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মাটি এত উর্বর যে বীজ ফেললে গাছ হয়। গাছ থেকে ফল হয়। কাজেই আমরা না খেয়ে থাকব কেন। সোনার মাটি আমাদের, এত উর্বর। আমরা কেন তা কাজে লাগাব না। আর কেন অন্যের কাছে আমাদের ভিক্ষা চাইতে হবে, সাহায্য চাইতে হবে। সাহায্যে চলতে হবে, এই চিন্তা কেন আমাদের মাথায় থাকবে?
বাংলাদেশের পাটকলগুলো বিএনপি বন্ধ করে দিয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রায় ৩৭ প্রকার পণ্য পাট থেকে উৎপন্ন হয়। পাটকে অবহেলা করা হয়েছিল। পাটকলগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল বিএনপি। কারণ তাদের প্রতিহিংসা বা এতই পাকিপ্রেম ছিল যে পাট নিয়ে ঝগড়া, পাট নিয়ে সংগ্রাম, সেখান থেকে স্বাধীনতা। কাজেই ওই পাটকে শেষ করো। এটাই বোধ হয় তাদের মনে ছিল।
’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ কৃষি বিষয়ক সুপরিকল্পনা গড়ে তুলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তখন থেকেই আমরা সঠিক কৃষিবান্ধব ব্যবস্থা নিয়েছি। একটি বাড়ি একটি খামার করেছি আমরা। দীর্ঘ দিন গবেষণা করে এটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। যার পাইলট প্রকল্প ছিল গাজীপুরের শ্রীপুরে। তবে ২০০১ সালে সবই ধ্বংস করে দিলো বিএনপি-জামায়াত।
তিনি বলেন, আমরা কৃষি উপকরণ কার্ড দিয়েছি, যা ২ কোটি কৃষক পাচ্ছেন। এছাড়া দেওয়া হচ্ছে ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সুবিধা, যা ১ কোটি কৃষক পাচ্ছেন। আমরা দেশি মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে গবেষণা চালু করি- এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে চতুর্থ স্থান নিয়েছি এখন।
বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি বলেছিল দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না, এতে বিদেশি সাহায্য আসবে না। চিন্তা-চেতনায় কী পার্থক্য আমাদের সঙ্গে তাদের, একবার এটি ভাবুন!
শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্য আয় এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ করবো আমরা। এ জন্য চাই কৃষির আরও উন্নতি সাধান। এছাড়া ২০২০ সালে জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করবো আশা করছি তখনই প্রায় এক বছর আগে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়ে যাবে।
তার আগে বক্তব্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, কিংবদন্তির কথা বলছি- সর্বশ্রেষ্ঠ কিংবদন্তি আমাদের প্রধানমন্ত্রী। তার হাতের ছোঁয়া পরশ পাথর। তিনি যেখানে হাত দিয়েছেন সফল হয়েছেন, দেশের উন্নয়ন করেছেন। এদেশের মানুষ সারাজীবন তাকে কৃতজ্ঞতা ভরে স্মরণ রাখবে।
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমাদের চিন্তার বাইরে উন্নতি করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেই ’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে ‘কৃষক বাঁচাও দেশ বাঁচাও’ কর্মসূচি শুরু করেন। তিনি কৃষকও বাঁচিয়েছেন, দেশও বাঁচিয়েছেন। দেশে উন্নতি করেছেন। তবে ২০০১ সালে বিএনপি জোট ক্ষমতায় এসে দেশে অন্ধকার নিয়ে আসে। তবে ২০০৯ সালে ফের সুযোগ পেয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়ন শুরু করলেন। সব দিন থেকে তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, নিয়ে যাচ্ছেন।
‘কৃষি বিষয়ে যদি কোনো জরিপ হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রী এক নম্বরে থাকবেন- কারণ শেখ হাসিনা প্রকৃত অর্থেই জনবান্ধব, বাংলার গরিব মানুষের মমতাময়ী মা,’ যোগ করেন মতিয়া চৌধুরী।
কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শামসুল হক রেজা প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।