পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : সিরিয়ার সরকারী বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াই চলাকালে ৫ এপ্রিল দক্ষিণ আলেপ্পোর আল-বাওয়াবিয়া গ্রামের কাছে একটি সিরীয় জঙ্গি বিমান ভূপাতিত হয়। গার্ডিয়ান সিরীয় সামরিক বাহিনীর বিবৃতি উদ্ধৃত করে জানায়, যে বিমানটি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের মিশনে থাকাকালে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রে ভূপাতিত হয়।
১২ মার্চ বিদ্রোহী জয়শ আল-ইসলাম হামা প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমে ছোট শহর কাফর নাবুদার আকাশে সিরিয়ার আরেকটি জঙ্গি বিমান ভূপাতিত করে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এদিন এক বিবৃতিতে দাবি করে যে কাফর নাবুদায় একটি ম্যানপ্যাড ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সিরিয়ার একটি মিগ-২১ ভূপাতিত হয়।
বিদ্রোহী গ্রুপগুলো জানায়, এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে দুটি জঙ্গি বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে। আর দুটি জঙ্গি বিমানই বিমানবিধ্বংসী কামানের সাহায্যে ভূপাতিত করা হয়, ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে নয়। দুটি জঙ্গি বিমান ভূপাতিত করার এই পরস্পরবিরোধী দাবির প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে যে বিদ্রোহীরা বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পেয়েছে কি না।
সিরিয়ায় সরকারী বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকে জঙ্গি বিমানের কারণে সরকারী বাহিনী এতদিন বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সুবিধা লাভ করে এসেছে। বিদ্রোহীরা বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পেলে বাশার বাহিনীর বিমান প্রাধান্য আর থাকবেনা, উপরন্তু সিরিয়ার যুদ্ধে তা হবে ফলাফল পরিবর্তনকারী।
বাশার বিরোধীরা তাদের সমর্থকদের কাছে সিরিয়ার সরকারী বিমানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বারংবার বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র চেয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ তা দেয়নি এ ভীতি থেকে যে সেগুলো উগ্রপন্থীদের হাতে চলে যেতে পারে।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাবলী থেকে দেখা যায় যে বাশার বিরোধীদের কিছু পৃষ্ঠপোষক বিদ্রোহীদের বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দিতে রাজি। ২০১৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জার্মান সংবাদপত্র দার স্পাইজেলের সাথে এক সাক্ষাৎকারে সউদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবেইর সিরিয়া যুদ্ধে ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন আনতে বিদ্রোহীদের বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র প্রদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
ক্রমবর্ধমান রুশ বিমান ও সামরিক সমর্থনে সিরিয়ার সরকারী বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির প্রেক্ষাপটে সউদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সাক্ষাতকার দেন। সিরীয় বিদ্রোহীদের বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দেয়ার ইচ্ছা সউদি আরবের এই প্রথম নয়। তবে সিরিয়ায় রুশ সামরিক হস্তক্ষেপের প্রেক্ষিতে পরিস্থিতি প্রেসিডেন্ট বাশারের অনুকূলে চলে যায় এবং বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর প্রতি ধ্বংসের নজিরবিহীন হুমকি সৃষ্টি হয়।
সরকার পক্ষ থেকে এ বছর দু’বার সরকারী জঙ্গি বিমান ভূপাতিত করার জন্য দু’বার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ করা হয়। পাঁচ বছরের গৃহযুদ্ধে এটাই প্রথম এ ধরনের দাবি।
যদি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই সিরীয় জঙ্গি বিমান ভূপাতিত হয়ে থাকে তাহলে কেউ এ যুক্তি দিতে পারে যে সিরিয়া থেকে রাশিয়ার সৈন্য ও জঙ্গি বিমান প্রত্যাহার ঘটেছে উত্তেজনা প্রশমিত করা ও বিদ্রোহীদের আরো বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র প্রদান বন্ধের লক্ষ্যে। বিদ্রোহীদের বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র প্রদান রাশিয়ার জন্য সিরিয়া অভিযানকে ব্যয় বহুল ও জীবনহানির ঘটনায় পরিণত করতে পারত।
স্থানীয় সূত্রে বলা হয়, আল নুসরা ফ্রন্ট ৫ এপ্রিল ভূপাতিত করা জঙ্গি বিমানের পাইলটকে শক্তিশালী অপর ইসলামপন্থী গ্রুপ আহরার আল-শামের কাছে হস্তান্তর করেছে। গ্রুপটি ঐ জঙ্গি বিমান ভূপাতিত করার প্রমাণ নিশ্চিত করার প্রেক্ষিতে এ হস্তান্তর ঘটে।
তবে যেহেতু সকল গ্রুপের কাছেই বিমান বিধ্বংসী কামান আছে সে কারণে এটা সঠিক বলা মুশকিল যে আহরার আল-শামই বিমান ধ্বংস করেছে। ইদলিবের একজন সংবাদ কর্মী আহমেদ জানান, জঙ্গি বিমানটি সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়। তাছাড়া এখানে এমন কোনো বিশেষজ্ঞ নেই যিনি বিমান ভূপাতিত হওয়ার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করবেন।
সম্ভবত আহরার আল-শাম সাধারণ ব্যবহৃত বিমানব্বিংসী কামানের বাইরে পৃথক কিছু ব্যবহার করেছে। নইলে আল নুসরা ফ্রন্ট তাদের দাবি মেনে নিত না।
বিদ্রোহীদের কাছে এমন এক সময় বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র থাকার কথা জানা গেল যখন কোনো রুশ জঙ্গি বিমান বা রুশ সৈন্য সিরিয়ায় নেই বলে জানা যাচ্ছে। তবে রুশদের প্রতি না হলেও বিদ্রোহীদের ক্ষেপণাস্ত্র বাশারের জঙ্গি বিমানগুলোর জন্য বড় রকমের হুমকি হবে। রুশ জঙ্গি বিমানের আকাশ থেকে আকাশে আত্মরক্ষার সক্ষমতা আছে এবং তা অনেক উঁচুতে উড়তে সক্ষম বলে লক্ষ্যবস্তু করাও কঠিন।
এমন হতে পারে যে বিদ্রোহীরা বাশারের জঙ্গি বিমানের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার শুরু করলে রাশিয়া বাশারকে অধিকতর উন্নত জঙ্গি বিমান সরবরাহ করতে পারে কিংবা স্থল থেকে স্থলে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের পরামর্শ দিতে পারে।
এ অবস্থায় বিদ্রোহীদের পৃষ্ঠপোষকরা বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রকে বিদ্রোহীদের পক্ষে যুদ্ধের গতি পরিবর্তনের কৌশল হিসেবে দেখার চেয়ে তাকে আলোচনায় বসার জন্য চাপ সৃষ্টির পন্থা হিসেবেই সম্ভবত বিবেচনা করবে। সূত্র নিউজউইক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।