পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বোয়ালখালী উপজেলা সংবাদদাতা : চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে শেলী শীল (৩৫) ও শিশুকন্যা অন্তরা শীল (৫) নামের মা-মেয়ের দুটি লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের উত্তর কঞ্জুরীর শীল পাড়ার মালদহ শীলের বাড়ী এলাকার ভূপাল শীলের বাড়ি থেকে এ লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। তাদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
খবর পেয়ে মঙ্গলবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) হাবিবুর রহমান, পটিয়া সার্কেল এএসপি শামীম হোসেন, র্যাব-৭-এর এএসপি জালাল আহমদের নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল ও পিবিআইয়ের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী অসীম শীল ও পরিাবরের অন্যরা পলাতক রয়েছে। র্যাবের তদন্ত টিম এবং পুলিশের তদন্ত ব্যুরোর অপর একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন।
জানা যায়, ঘরের বিছানার উপর শেলীর গলায় রশি দিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে এবং মেয়ে অন্তরা খাটের একই বিছানায় নিথর দেহে পড়ে রয়েছে। গত সোমবার রাতের কোন এক সময় এ জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। ঘরের ফ্যানের সাথে শেলী শীল ঝুলে থাকলেও খাটের ওপর তার হাঁটু মোড়া রহস্যজনকই ছিল। তবে মা-মেয়ে উভয়ের শরীরে জখমের চিহ্ন রয়েছে।
নিহত শেলী শীল চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর ছোটপুল এলাকার অমিয় শীলের মেয়ে। প্রায় ৮ বছর আগে উপজেলা সারোয়াতলীর উত্তর কন্জুরীর বটতলীস্থ শীল পাড়ার মৃত ভূপাল শীলের ছেলে অসীম শীলের সাথে বিবাহ হয়। তাদের সংসারে অন্তরা (৫) ও অনুরাগ (৮ মাস) নামের ২ সন্তান রয়েছে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তেমনটা বনিবনা না হওয়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক করে সংসারটি টিকিয়ে রাখার প্রচেষ্টা চালায়। কয়েক মাস আগেও অসীম তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা শেলীর ওপর অমানুষিক নির্যাতন করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম ও বাম হাত ভেঙে দেয়। এ ঘটনায় আনোয়ারা থানার একটি মানবাধিকার অফিসে সালিশি বৈঠকে স্বামী অসীম মুচলেকা দিয়ে শেলীকে ফিরিয়ে আনে। এর পর থেকে শেলীর বাড়ীতে যোগাযোগ প্রায় বন্ধ ছিল। অসীম পটিয়া আদালত পাড়ায় এক আইনজীজিবীর সাথে চতুর মুহুরী হিসেবে কাজ করত।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে স্বামী অসীমসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা উধাও হয়ে গেছে। দুপুরের দিকে অসীমের মা সবিতা শীলকে স্থানীয়রা খুঁজে বাড়িতে নিয়ে আসলেও তার কথাবার্তা ও আচরণে অসংলগ্নতা পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। বিকালে বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার লোকজন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসি ঘটনাস্থলে এলেও অসীমের পরিবারের কোন পুরুষকে পাওয়া যায়নি।
শেলীর ভাই সুজন শীল বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রতিবেশীদের মোবাইলে জানতে পেরে আমরা দ্রুত বোনের বাড়িতে আসি। অসীমই বোন শেলী ও শিশু ভাগ্নি অন্তরাকে খুন করেছে। আমরা থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা এ ঘটনার ন্যায়বিচার ও খুনি অসীমের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, শেলীর লাশ ফাঁসিতে ঝুলে থাকলেও শিশু অন্তরাকে কেউ না কেউ হত্যা করেছে। এটি অবশ্যই হত্যা মামলা হবে। তবে আমরা সব দিক খতিয়ে দেখেই পদক্ষেপ নেব।
বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সালাহ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ঘরের বিছানার উপর শিশুটির লাশ ও একই বিছানার পূর্ব দিকে মুখ করা সিলিং ফ্যানের সাথে শেলীর লাশ গলায় দড়ি লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।