পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
দেশে কোটিপতির সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকে এক কোটি টাকা বা এর বেশি আমানত রয়েছে এমন এ্যাকাউন্টের সংখ্যা এখন ৭১ হাজার ৬০০টি। এর মধ্যে ২০১৭ সালেই কোটিপতি আমানতকারীর এ্যাকাউন্ট বেড়েছে ৫ হাজার ৮০৩টি। এছাড়া বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের প্রায় ৪২ শতাংশই কোটিপতিদের দখলে রয়েছে। বাকি ৪৮ ভাগ লাখপতি ও ১০ ভাগ অন্যদের দখলে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যাংকিং খাতে সব শ্রেণীর আমানতকারীর এ্যাকাউন্ট নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে অর্থনীতির আকার ক্রমেই বড় হচ্ছে। প্রতি বছরই বাড়ছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয়। এতে মানুষের সঞ্চয় প্রবণতা বেড়েছে। তবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গুণগত মান না বাড়ায় সমাজের একটি বিশেষ শ্রেণীর কাছেই বেশি সম্পদ ও অর্থ কেন্দ্রীভ‚ত হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে কোটিপতির প্রকৃত সংখ্যা কত সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন পরিসংখ্যান নেই। তবে আমানতকারীর ব্যাংক হিসাব থেকে এ বিষয়ে একটি ধারণা যায়। তবে বাস্তবে কোটিপতির সংখ্যা আরও বেশি বলে জানা গেছে। কারণ এখানে কেবল যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আমানত হিসাবে কোটি টাকার বেশি জমা আছে সেই সংখ্যা দেয়া হয়েছে। এর বাইরে অনেকেই আছেন যাদের কোটি কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, দেশে কোটিপতির সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে বৈষম্যও বেড়েছে। সম্পদের সুষম বণ্টন না হওয়াই এর কারণ। দেখা যাচ্ছে, একটি বিশেষ শ্রেণীর মানুষের কাছেই আয় ও সম্পদ বেশি কেন্দ্রীভ‚ত। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের সুফল এ শ্রেণীর মানুষ-ই বেশি ভোগ করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৯৯ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে কোটিপতিদের দখলে থাকা আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা, যা ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের প্রায় ৪১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত এক বছরে ৫০ কোটি টাকারও বেশি পরিমাণ অর্থ জমা রাখার তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছেন ১৪২ জন ব্যক্তি। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে ৫০ কোটি টাকার ওপরে আমানত রাখা ব্যক্তি ছিলেন ৭৬৯ জন। গত বছর শেষে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯১১ জনে। অন্যদিকে, গত এক বছরে ৪০ কোটি টাকার বেশি কিন্তু ৫০ কোটি টাকার কম পরিমাণ অর্থ জমা রাখার তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছেন ৪৬ জন ব্যক্তি। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর শেষে ৪০ কোটি টাকার বেশি কিন্তু ৫০ কোটি টাকার নিচে আমানত রাখা ব্যক্তি ছিলেন ৩১৪ জন। বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৬০ জন।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এক বছরের ব্যবধানে ১ কোটি টাকারও বেশি আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে ৪ হাজার ৩১৮ জন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর শেষে ১ কোটি টাকার বেশি কিন্তু ৫ কোটি টাকার কম আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ৫১ হাজার ৭৮১ জন। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬ হাজার ৯৯ জনে।
এছাড়া গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ কোটি টাকার বেশি কিন্তু ১০ কোটি টাকার এ্যাকাউন্ট ৭ হাজার ৬৬৬টি, ১০ কোটি টাকার বেশি কিন্তু ১৫ কোটি টাকার কম এ্যাকাউন্ট ২ হাজার ৪২০টি, ১৫ কোটি টাকার বেশি কিন্তু ২০ কোটি টাকার কম এ্যাকাউন্ট ৭৬৪টি, ২০ কোটি টাকার বেশি কিন্তু ২৫ কোটি টাকার কম এ্যাকাউন্ট ৪৪৯টি, ২৫ কোটি টাকার বেশি কিন্তু ৩০ কোটি টাকার কম এ্যাকাউন্ট ২২৮টি ও ৩০ কোটি টাকার বেশি কিন্তু ৩৫ কোটি টাকার কম এ্যাকাউন্ট ১৯২টি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।