পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ট্রাম্প প্রশাসন এবার বৈধ অভিবাসীদের মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ সীমিত করার দিকে এগোচ্ছে। আগামী সপ্তাহগুলোতে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব আসছে। এর ফলে বৈধ অভিবাসীদের জন্য মার্কিন নাগরিক হওয়া বা গ্রীন কার্ড পাওয়া কঠিন হবে যদি তারা ওবামা কেয়ারসহ জনকল্যাণ কর্মসূচিগুলো কখনো ব্যবহার করে থাকে। এ পরিকল্পনা সম্পর্কে জ্ঞাত ৪টি সূত্র এনবিসি নিউজকে এ কথা জানান।
এ ব্যবস্থা প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে যারা বৈধ অভিবাসীর মর্যাদা প্রাপ্ত হচ্ছে তাদের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হোয়াইট হাউসের সিনিয়র উপদেষ্টা স্টিফেন মিলারের পরিকল্পনার অংশ। এটা কার্যকর করতে কংগ্রেসের অনুমোদনের কোনো প্রয়োজন হবে না। আইনে পরিণত হতে যাওয়া এ প্রস্তাবটির বিশদ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে সাম্প্রতিক যে খসড়ার ভিত্তিতে এটি প্রণীত হচ্ছে তা ও এনবিসি নিউজকে যেমনটা বলা হয়েছে তাতে জানা যায় যে যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ ভাবে বসবাসরত অভিবাসীরা অথবা যে সব সদস্যরা যারা এ পর্যন্ত ওবামা কেয়ার , শিশু স্বাস্থ্য বীমা , ফুড স্ট্যাম্পস ও অন্যান্য সুবিধা ব্যবহার করেছে তারা যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ মর্যাদা লাভে বাধাগ্রস্ত হতে পারে। অভিবাসন আইনজীবী, অ্যাডভোকেট ও সরবারী স্বাস্থ্য গবেষকগণ বলেন, কয়েক দশকের মধ্যে বৈধ অভিবাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনে এটা হবে বৃহত্তর চ্যালেঞ্জ এবং ধারণা করা হচ্ছে যে এতে ২ কোটি অভিবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা বলেন, এ পদক্ষেপ বিশেষ ভাবে কর্মরত অভিবাসীদের কঠিন ধাক্কা দেবে যারা পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য পর্যাপ্ত আয় করে না।
অনেকেই হাইতি থেকে আসা নাগরিকত্ব প্রত্যাশী গ্রীনকার্ড ধারী লুই চার্লসের মত। নার্সিং সহকারী হিসেবে সপ্তাহে ৮০ ঘন্টা কাজ করা সত্তে¡ও তাকে তার প্রাপ্ত বয়স্কা পঙ্গু মেয়েকে সহায়তার জন্য সরকারী কর্মসূচি ব্যবহার করতে হয়েছে।
সামাজিক নিরাপত্তা বীমার মত কিছু সরকারী সুবিধা ব্যবহার অতীতে অভিবাসীদের বৈধ মর্যাদা লাভ বাধাগ্রস্ত করেছে , কিন্তু সাম্প্রতিক খসড়া পরিকল্পনাসহ কর্মসূচিগুলোর অর্থ এই হতে পারে যে দারিদ্র সীমার ২৫০ শতাংশের মত আয়কারীরা প্রত্যাখ্যাত হতে পারে।
এ পরিকল্পনার একটি কপি হোয়াইট হাউসের ব্যবস্থাপনা অফিস ও বাজেট অফিসে পাঠানো হয়েছে যা ফেডারেল রেজিস্টারে একটি আইন প্রকাশের চূড়ান্ত পদক্ষেপ বলে সূত্র জানান। হোয়াইট হাউস এ ধরনের পরিকল্পনা বিবেচনা করছে বলে ফেব্রুয়ারিতে রয়টারস খবর প্রকাশ করেছিল। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেন, প্রশাসন বিদ্যমান আইন কার্যকর করতে অঙ্গীকারবদ্ধ, যার সুস্পষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে আমেরিকার করদাতাদের এটা নিশ্চিত করে সুরক্ষা দেয়া যে যুক্তরাষ্ট্রে যে সব অভিবাসী প্রবেশ করতে চায় বা রয়েছে তারা সবাই স্বনির্ভর। কোনো প্রস্তাবিত পরিবর্তন নিশ্চিত করবে যে সরকার করদাতাদের অর্থ ভালোভাবে পরিচালনা করার দায়িত্ব নিয়েছে এবং অভিবাসী কল্যাণের অনুরোধ আইন মোতাবেক বাস্তবায়ন করা হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের বিশিষ্ট ব্যক্তি মিলার কংগ্রেসে তার কতিপয় সাবেক সহকর্মীর সাথে মিলে প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ মর্যাদা লাভকারী অভিবাসীদের সংখ্যা কমিয়ে আনার পক্ষে। এ আইন কার্যকর হওয়ার আগেই ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসীদের গ্রীন কার্ড পাওয়া ও গ্রীন কার্ডধারীদের নাগরিকত্ব পাওয়া কঠিন করে তুলেছে।
মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ আর্থিক বছরে , যেটি ছিল ওবামা প্রশাসনের পূর্ণ আর্থিক বছর, ১২ লাখ অভিবাসী আইন সঙ্গত স্থায়ী নাগরিক বা গ্রীন কার্ডধারী হয় এবং ৭ লাখ ৫৩ হাজার ৬০ জন স্বাভাবিক মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করে।
২০১৮ অর্থ বছরের প্রথম কোয়ার্টারের তথ্য থেকে ইঙ্গিত মেলে যে প্রশাসন অক্টোবরের মধ্যে গ্রীনকার্ড প্রাপ্ত অভিবাসীদের ২০ শতাংশ ও স্বাভাবিক নাগরিকত্ব প্রাপ্তদের ১০ শতাংশকে বাদ দেয়ার পথে অগ্রসর হচ্ছে।
ম্যাসাচুসেটস, ভার্জিনিয়া, টেনেসি ও ক্যালিফোর্নিয়ায় কর্মরত ৪জন অভিবাসন আইনজীবী এনবিসি নিউজকে বলেন, তারা গ্রীন কার্ড ও স্বাভাবিক নাগরিকত্ব প্রার্থী তাদের মক্কেলদের আবেদন প্রত্যাখানের সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে দেখছেন।
ইউএসসিআইএসের এক মুখপাত্র মাইকেল বারস বলেন, ইউএসসিআইএস প্রতিটি আবেদন সুষ্ঠুভাবে, দক্ষতার সাথে ও কার্যকর ভাবে প্রতিটি ঘটনা ভিত্তিক ভাবে মূল্যায়ন করে।
বারস বলেন, উন্মুক্ত সীমান্তের প্রবক্তা, অভিবাসন আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীরা যাই বলুন না কেন, যে পদ্ধতিতে স্বাভাবিক নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা হয়, ইউএসসিআইএস তার কোনো পরিবর্তন করেনি। আইন সাধারণত চায় যে মার্কিন নাগরিক হওয়ার জন্য স্থায়ী অধিবাসীদের অবশ্যই যথাযোগ্য ভাবে আবেদন করতে হবে। আমরা মিথ্যা ও সঠিক নয় এমন আবেদন প্রত্যাখ্যান করি যাতে জননিরাপত্তা, আইনের সমন্বয় ও তারে বিশ্বস্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে অবৈধ অভিবাসন, মানব পাচার, অপরাধী চক্র ভিত্তিক কর্মকান্ড ও মাদক বিস্তারের প্রতি আনুক‚ল্য প্রদর্শন করা না হয়।
তারা যা বলেছে তার সবই করেছি
বোস্টনের কাছে একটি সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালে নার্সিং সহকারী হিসেবে কর্মরত হাইতির গ্রীন কার্ডধারী চার্লস বলেন, তিনি শুনে স্তম্ভিত হয়েছেন যে মার্কিন নাগরিকত্বের জন্য তারা আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ১৯৮৯ সালে তিনি যখন হাইতি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন তখন পাচারকারীরা তাকে একটি ভুয়া পাসপোর্ট দিয়েছিল। কিন্তু তিনি সীমান্ত কর্মকর্তাদের কাছে তা স্বীকার করেন ও রেয়াত পান। ইউসিএসসিআই তার অপরাধ মাফ করে, তিনি ২০১১ সালে গ্রীন কার্ড পান। এখন ৫৫ বছর বয়সে চার্লস একটি বাড়ির মালিক ও করদাতা , তাই নাগরিকতা পাওয়ার পথ তার মসৃণ বলেই তিনি জানতেন। তিনি বলেন, আমি মনে করতাম এদেশে সবই সমান ও সুষ্ঠু। কিন্তু ২০১৭ সালের আগস্টে তিনি যখন নাগরিকত্বের জন্য গেলেন তখন ইউসিএসসিআই কর্মকর্তারা তাকে বলেন যে তারা তার ভুয়া পাসপোর্টের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করছে যার অর্থ তিনি তার গ্রীন কার্ডও হারাতে পারেন। তারপর সেপ্টেম্বরে তার নাগরিকত্ব লাভের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়।
তিনি বলেন, আমি ভেঙ্গে পড়েছি। তারা কেন এটা করল আমি বুঝতে পারছি না। তারা যা বলেছে আমি তার সবই করেছি।
তিনি আপিল করেছেন ও চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন। তার আইনজীবী বলেছেন যে তার গ্রীনকার্ডও থাকবে কিনা সন্দেহ।
গত নভেম্বরে ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা করে যে ২০১০ সালের ভ‚মিকম্পের পর যুক্তরাষ্ট্রে আসা হাইতিয়ানদের অস্থায়ী সুরক্ষা মর্যাদা বাতিল করা হবে। চার্লসের স্ত্রী এ সুরক্ষা প্রাপ্ত ও চার্লসকে ছাড়াই নাগরিক হতে গেলে তিনি স্ত্রীর সাক্ষী হতে পারবেন না।
তবে চার্লসের বড় দুশিচন্তা মেয়েকে নিয়ে। বিশের ঘরে বয়স তার ও সে একজন মার্কিন নাগরিক। সে শারীরিক ভাবে এতটাই অক্ষম যে তার পক্ষে একা বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।
চার্লস অভিবাসী সংখ্যা হ্রাসের মিলারের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানেন না। চার্লস সরকারী সাহায্য নিয়েছেন। এটা তার জন্য ব্যবহার করার কারণে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই তার নাগরিকত্ব পেতে ক্ষতি হয়, তা মেয়ে এমন কিছু আর নাও করতে পারে।
যদিও এর প্রভাব সুদূর প্রসারী হতে পারে, যারা সরকারী সাহায্য নেয়নি এমন অভিবাসীদের নাগরিকত্ব সীমিত করার বিষয়টিতে কংগ্রেসের অনুমোদন লাগবে না। ক্লিনটন প্রশাসন যেমন করেছি ১৯৯৯ সালে সেভাবে ট্রাম্প প্রশাসনও ‘ পাবলিক চার্জ’ কথাটির পুনর্মূল্যায়ন করবে।
সীমিত অভিবাসনের পক্ষপাতী নাম্বারস ইউএসএ-র নির্বাহী সহ সভাপতি রোজমেরি জেংকস বলেন, নতুন আইন এবং গ্রীন কার্ড ও নাগরিকত্ব আবেদনের ক্রমবর্ধমান বাছাই আইন বলবত ও জালিয়াতি রোধে ডিএইচএস-র নতুন গুরুত্বের অংশ।
এ অবস্থায় অভিবাসন আইনজীবীরা তাদের মক্কেলদের গ্রীন কার্ড মর্যাদা থেকে নাগরিকত্ব লাভের দিকে অগ্রসর হওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করছেন।
রোজ হার্নান্দেজ টেনেসি অভিবাসন ও উদ্বাস্তু অধিকার জোটের ন্যাচারালাইজেশন ক্লিনিকের সুপারভাইজিয় এটর্নি। তিনি বলেন, এ দমন অভিযানের প্রেক্ষিতে ক্লিনিকের মডেলের সম্পূর্ণ পরিবর্তন ঘটেছে। তিনি নাগরিকত্ব আবেদনের আগে গ্রীন কার্ড হোল্ডারদের ব্যাকগ্রাউন্ড পরীক্ষার জন্য সরকারের সংস্থাগুলোর কাছে ৬ দফা তথ্য অনুরোধ পাঠান। সরকার কিছু পেলে তিনি আর অগ্রসর হন না। কারণ তার ভয় যে তাহলে গ্রীনকার্ডও বাতিল ও তাদের ফেরত পাঠানো হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।