Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কমলাপুরে উপচে পড়া ভিড়

এসির টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার প্রথম দিনে কমলাপুরে ছিল উপচে পড়া ভিড়। লাইনের সামনের দিকে থাকার জন্য অনেকে আগের দিন বিকালে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। তারপরেও অনেকেই এসির টিকিট পাননি। কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, ১৫/২০ জনের পরেই কাউন্টার থেকে বলা হয়েছে এসির টিকিট শেষ। আবার কেউ কেউ টিকিট বিক্রিতে ধীরগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ঈদুল আযহা উপলক্ষে গতকাল থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। কমলাপুরে ২৬টি কাউন্টারে একযোগে এ টিকিট বিক্রি শুরু হয় সকাল ৮টা থেকে। এর মধ্যে নারীদের জন্য রয়েছে দুটি কাউন্টার। গতকাল বিক্রি হয়েছে ১৭ আগস্টের টিকিট। আজ দ্বিতীয় দিনে বিক্রি হবে ১৮ আগস্টের টিকিট। এজন্য অনেকেই গতকাল বিকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছেন।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, হাজার হাজার টিকিট প্রত্যাশী টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে। লাইনের শেষ প্রান্ত গিয়ে ঠেকেছে প্রবেশপথের শেষ প্রান্তে। যারা কাঙ্খিত টিকিট পাচ্ছেন তাদের চোখে মুখে দেখা মিলছে খুশির ঝিলিক। যারা পাচ্ছেন না তারা মন খারাপ করে বেরিয়ে আসছেন।
রাজশাহীর ধুমকেতু এক্সপ্রেসের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন মোবারক হোসেন। বেসরকারি চাকরিজীবী মোবারক বলেন, আমি সারারাত ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম এসি টিকিটের জন্য। ২০ জনের পেছনে ছিলাম। কিন্তু এসির টিকিট পেলাম না। তিনি বলেন, আমার বৃদ্ধ মা ও দুই বাচ্চা। এসি ছাড়া যাওয়া কষ্টর হবে। সে কথা ভেবে সারারাত কষ্ট করলাম। কিন্তু পেলাম না। তিনি প্রশ্ন রেখে একটা ট্রেনে কয়টা এসির টিকিট থাকে? আমার সামনের ২০ জনও যদি এসির টিকিট কিনে থাকে তবুও তো আমি পাই। তাহলে সেগুলো কোথায় গেল? টিকিটের জন্য মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন সামছু আলম। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এই চাকরিজীবী এসি টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ করে বলেন, চট্টগ্রামগামী সোনার বাংলার এসি টিকিটের জন্য গতরাতে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু সকাল আটটায় যখন কাউন্টার থেকে টিকিট দেয়া শুরু হল, তখন ২০/২৫ জনের পরই কাউন্টার থেকে জানালো হলো- এসি টিকিট শেষ। তাহলে কষ্ট করে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে কী লাভ হল?
একই অভিযোগ করলেন, দিনাজপুরগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেসের টিকিট প্রত্যাশী রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, লোইনের প্রথম কয়েকজনের পরই এসি টিকিট শেষ বলে জানানো হল। আমরা যারা এসি টিকিটের জন্য ৮/৯ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলাম তারাও এসি টিকিট পেলাম না। এত তাড়াতাড়ি কীভাবে টিকিট শেষ হয়ে গেল তা বুঝতে পারছি না। এ প্রশ্নের উত্তর জানতে ঢাকা বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। রেলভবনের একজন কর্মকর্তা আক্ষেপ করে বলেন, কয়েকদিন ধরেই তিনি আর ফোন রিসিভ করছেন না। এ প্রসঙ্গে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, যত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েছে তাদের সবাইকে তো আর আমরা টিকিট দিতে পারবো না। আমাদের সম্পদ সীমিত। ঈদের সময় সবাই এসি টিকিট চায়। এ সময় চাহিদা থাকে বেশি কিন্তু এসি টিকিটের সংখ্যাও তো কম। তিনি বলেন, ২৬টি কাউন্টার থেকে একসঙ্গে টিকিট দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া অনলাইন, মোবাইলে আছে ২৫ শতাংশ কোটা। ৫ শতাংশ ভিআইপি ছাড়াও রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৫ শতাংশ। এসব বাদে ৬৫ শতাংশ দেয়া হচ্ছে কাউন্টার থেকে। তাহলে যারা চাইবে সবাইকে তো আর আমরা এসি টিকিট দিতে পারবো না।
এদিকে, এবারও কমলাপুরে কালোবাজারিচক্র তৎপর রয়েছে। তবে এখনই তারা টিকিট বিক্রি করছে না। র‌্যাবের ভয়ে তারা ঘুরাঘুরি করলেও পরে টিকিট দিবে বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে বলে জানান একজন যাত্রী। তিনি বলেন, ৩/৪দিন পর কালোবাজারে অনেক টিকিটই মিলবে। তাতে টাকা একটু বেশি লাগবে। গত ঈদুল ফিতরেও তাই দেখা গেছে। কাউন্টারে সংরক্ষিত আসনের টিকিট প্রত্যাশীদের দাঁড় করিয়ে রেখে বুকিং সহকারীরা প্রকাশ্যে কালোবাজারিদের হাতে টিকিট তুলে দিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ