পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সহসাই কারামুক্তি পাচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারর্পাসন বেগম খালেদা জিয়া। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন আদালতে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মোট ৬টি মামলা গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। একটি ছাড়া প্রায় সবকটি মামলায় খালেদা জিয়া জামিনে রয়েছেন তিনি। আজ অপর একটি মামলায় জামিন আবেদনের শুনানি জন্য অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল কুমিল্লার নাশকতার এক মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৬ মাসের জামিন পেয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। সব ঠিক ঠাক থাকলে খালেদা জিয়া ঈদের আগেই কারামুক্তি পাবেন এমটাই প্রত্যাশা করছেন তার আইনজীবীরা।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ইনকিলাবকে বলেন, দুটি মামলা জামিন পেলেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কারামুক্তি পাবেন। তিনি আরো বলেন, কুমিল্লার একটি আর নড়াইলের একটি মামলা জামিন নিতে হবে। তবে নড়াইলের মামলাটি জামিন যোগ্য অপরাধ। তাই আমি মনে করি সব ঠিক ঠাক থাকলে সহসাই তথা আগেই ঈদের খালেদা জিয়াকে কারামুক্তির পেতে পারেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খালেদা আইনজীবী বিএনপি আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ইনকিলাবকে বলে, বেগম খালেদা জিয়ার আরো আগেই কারামুক্তির কথা ছিল। কারণ গত ১২ মার্চ হাইকোর্ট খালেদা জিয়াকে জামিন দিলেও সরকার খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘ করেন। যাতে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন এমন ষড়যন্ত্র করেছেন। আমরা প্রত্যাশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে খালেদা জিয়া কারামুক্তি পাবেন। কারণ ২টি ছাড়া সবকটি মামলায় তিনি জামিনে রয়েছেন তিনি।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ঢাকায় মানহানি অভিযোগে ২টি, নড়াইলে ১টি, কুমিল্লায় নাশকতার, হত্যাসহ মোট ৩টি মামলাসহ অন্তত ৬টি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এসব মামলায় খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামী করা হয়। এছাড়াও ভূয়া জন্ম দিন ও রাষ্ট্রদোহসহ এসব মামলা খালেদা জিয়া সংশ্লিষ্ট আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করলে বিচারক নামঞ্জুর করেন। পরবর্তীতে জামিন না পেতে উচ্চ আদালত আসেন। শুনানি শেষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন। এছাড়াও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তিনি জামিনে রয়েছে। আর অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা ৮ আগস্ট পর্যন্ত জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছেন হাইকোর্ট। এ মামলায় খালেদা জিয়ার আপিল নিষ্পত্তিতে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
এক মামলায় খালেদার ৬ মাসের জামিন: কুমিল্লার হত্যার ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় খালেদা জিয়াকে ৬ মাসের জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। গতকাল সোমবার খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আবেদনের পক্ষে হাইকোর্টে শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নুল আবেদীন, এ জে মোহাম্মদ আলী ও মাহবুব উদ্দিন খোকন ও এ কে এম এহসানুর রহমান।রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
গত ১ জুলাই কুমিল্লার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখালেও জামিনের বিষয়ে কোনো আদেশ না দিয়ে আবেদনটি ৮ অগাস্ট শুনানির জন্য রেখে দেন। এরপর গত ১১ জুলাই হাইকোর্টে ফৌজদারি আপিলের পাশাপাশি হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। হাইকোর্ট কুমিল্লার আদালতের জামিন আবেদনটি ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন। গত ২৫ জুলাই কুমিল্লার আদালত খালেদার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলে ২৯ জুলাই ফের হাইকোর্টে তার জামিন আবেদন করা হয়।
পরে জয়নুল আবেদীন বলেন, আজ যে মামলায় জামিন হয়েছে সেটি হচ্ছে স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্টের। অর্থাৎ কুমিল্লার নাশকতার মামলায় আমরা হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদন শুনানিতে এবাউট টু রিজেকশন একটি আদেশ দিলেন। বেইল দিলে না। কুমিল্লার আদালতে আবেদন করার জন্য। সেই আদেশ অনুযায়ী আমরা কুমিল্লার কোর্টে আবেদন করেছিলাম। ওই কোর্টে আমাদের আবেদন খারিজ করা হয়। এরপর আমরা ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করি, সঙ্গে সঙ্গে জামিনও চাওয়া হয়। দুই দিন শুনানি হয়েছে। শুনানি শেষে ৬ মাসের জামিন দেন।
জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ: কুমিল্লার এক মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এসএম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে খালেদা জিয়ার আইনজীবীর আবেদনে এই আদেশ দেন। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, মোহাম্মদ ফারুক হোসেন,আইয়ুব আলী আশ্রাফী, মাসুদ রানা, সালমা সুলতানা সোমা প্রমুখ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এর আগে গত ২ জুলাই হাইকোর্টের দেয়া ৬ মাসের জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। একই সাথে জামিন নিয়ে জারি করা রুল চার সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার সদস্যে বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী হাইকোর্টে রুল শুনানির জন্য ১০ জুলাই দিন ঠিক করা হয়। এর পর পর্যায়ক্রমে মামলার শুনানি শেষে খালেদা জিয়ার পক্ষে আবেদনে মামলাটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করা হয়।
গত ২৮ মে কুমিল্লর নাশকতার দুই মামলায় ৬ মাসের জামিন দেন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর গত ২৯ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিনাদেশ স্থগিত করেন এবং ৩১ মে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির আদেশ দেন। ৩১ মে শুনানির পর আপিল বিভাগ খালেদা জিয়াকে হাইকোটেৃর দেয়া জামিন স্থগিত রাখেন এবং রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতে আদেশ দেন। ২৪ জুন এ বিষয়ে শুনানি শেষে ২ জুলাই আদেশের দিন ধার্য করা হয়।
প্রসঙ্গ, দুদকের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেন বিচারিক আদালত। সেই থেকে তিনি পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন। #####
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।