Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুলিশের ওপর হামলার মামলা পঙ্গু ভিক্ষুকের নামে

প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার হরিণদি আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দা পান্নু মোল্যা। বছর বিশেক আগে গাছ থেকে পড়ে তার দুটি পা পঙ্গু হয়ে যায়। এর পর থেকে ভ্যানে চড়ে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু গতকাল বিকেলে তার সেই ভিক্ষা করার ভ্যানে চড়ে মাগুরা জজকোর্টে এসেছে জামিন নিতে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি শ্রীপুর থানার পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে সরকারি কাজে বাধা দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শ্রীপুর থানার এসআই শফিকুল ইসলাম খান বাদী হয়ে গত শনিবার ১৭ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যে মামলায় উলেখ করা হয়েছে, আগের দিন শুক্রবার রাতে তিনি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে টহলের অংশ হিসেবে শ্রীকোল গ্রামে গেলে আসামিরা তাদের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ এ সময় শটগানের পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করলে শারীরিক প্রতিবন্ধী পান্নু মোল্যাসহ ১৫ জন আসামি দৌড়ে পালিয়ে যায়। আদালত থেকে জামিন নিতে আসা পঙ্গু ভিক্ষুক পান্নু মোল্যা (৩৭) জজকোর্টে চত্বরে ভ্যানের উপর বসে অসহায়ের মতো বলেন, ‘আমি পঙ্গ মানুষ। সারাদিন রোদে রোদে ঘুরে ভিক্ষা করি। রাজনীতির কিছু বুঝি না। ঘরে স্ত্রী ও দুটি ছেলে দুটি মেয়ে। একদিন ভিক্ষা না করলে সংসার চলে না। অথচ মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে সারাদিন কোর্টের বারান্দায় বসে আছি।’
একই মামলায় আসামি করা হয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধী পান্নু মোল্যার বড় ভাই জিল্লু মোল্যাকেও। জিল্লুু বলেন, ‘বাবা মোকছেদ মোল্যা একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধচলাকালেয় শ্রীপুর বাহিনীর প্রধান আকবর হোসেনের নেতৃত্বে যুদ্ধে অংশ নেন। যে ঘটনার পর থেকেই শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেনের পরিবারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক।
তারই ছেলে কুতুবুল্লাহ হোসেন কুটি নির্বাচন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করছেন আনারস মার্কা নিয়ে। আমরা বরাবরই তাদের পরিবারকে ভোট দিয়ে থাকি। যে কারণে আমাদের হয়রানি করতেই পুলিশ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
এ বিষয়ে শ্রীকোল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও এবারের নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী যুবলীগ নেতা কুতুবুলাহ হোসেন কুটি বলেন, শ্রীপুরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির কথা বলতে গেলে আমাদের পরিবারকেই বোঝায়। আমি এ ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। এবারে নির্বাচনে তৃণমূল ভোটারদের মূল্যায়ন না করে আরেকজনকে কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। যে কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি।
এটা তো আমার অপরাধ নয়। নির্বাচন করা আমার অধিকার। অথচ মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর থেকেই আমার সমর্থকদের ওপর নানাভাবে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। রাতের বেলা বাড়িতে কাউকে ঘুমাতে দেয়া হচ্ছে না। আবার ঘুমিয়ে থাকা ভিক্ষুককে পর্যন্ত আসামি করে নাজেহাল করা হচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে অবিলম্বে এসব চক্রান্ত বন্ধ করা উচিত।



 

Show all comments
  • Maruf Hossen ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১১:২৫ এএম says : 0
    এটাই হল বাংলার ডিজিটাল মামলা।
    Total Reply(0) Reply
  • Ashaduzzaman Uzzal ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১১:২৬ এএম says : 0
    ফাইজলামির ও একটা সীমা থাকা দরকার
    Total Reply(0) Reply
  • গন্তব্যহীন পথিক ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১১:২৭ এএম says : 0
    হায়রে.......
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুলিশের ওপর হামলার মামলা পঙ্গু ভিক্ষুকের নামে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ