পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে আসা বহু মহিলাকে আটক করার পর বেআইনিভাবে জেলে রাখা হচ্ছে। যদিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্পষ্ট নির্দেশ আছে তাদের সরকারি হোমে রাখতে হবে।
বসিরহাট জেলে আটক এমনই তিনজন বাংলাদেশি মহিলার ব্যাপারে তারা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন।
রাজ্য পুলিশের কর্মকর্তারাও অবশ্য স্বীকার করছেন, কে সত্যিকারের পাচার-হওয়া, সেটা নিরূপণ করা মুশকিল। আর এর দায় অনেকটাই সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফের।
যশোরের ঝিকরগাছা থানা এলাকার তিন মহিলা, শাহিনূর, সারিনা খাতুন ও আমিনা বেগম ভারতে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করার উদ্দেশে সীমান্ত পেরোনোর পর বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়ায়। প্রথম রাতটা স্বরূপনগর থানার লকআপে কাটানোর পর এখন তাদের ঠিকানা বসিরহাটের জেল। যদিও মানবাধিকার কর্মীরা মনে করছেন, এদের বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা দেওয়াটাই সম্পূর্ণ অন্যায় হয়েছে।
মাসুমের কিরীটি রায় বলছিলেন, ‘এই মহিলারা কাজের সন্ধানে ভারতে এসেছেন। দুর্নীতিগ্রস্ত বিএসএফ ও বিজিবি নিজেদের পোষা লাইনম্যানদের সাহায্যে পয়সা নিয়ে নিয়মিতই লোকজনদের সীমান্ত পারাপার করিয়ে থাকে। হতে পারে এই তিনজনের কাছ থেকে তারা পয়সা পায়নি বলেই বিএসএফের হাতে ধরা পড়েছে’।
কিন্তু এই মহিলারা পাচারের ভিকটিম কি না, সেটা নির্ণয় করার যে পদ্ধতি আছে তা প্রায় কখনওই মানা হয় না। আর তাই তাদের প্রাপ্য সুবিধাগুলোও কখনওই তাদের জোটে না।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অ্যান্টি-ট্র্যাফিকিং ইউনিটের প্রধান শর্বরী ভট্টাচার্যর মতে, বিএসএফ’ই এর জন্য প্রধানত দায়ী।
তিনি সরাসরি বলছেন, ‘বিএসএফ আইনকানুন কিচ্ছু জানে না, তাদের বোঝাতে যাওয়াও বৃথা। তাদের টাকা দিলে সীমান্ত পেরোতে কোনও সমস্যা হয় না। টাকা না পেলেই হয় মুশকিল। তখনই ওরা গরিবগুর্বা মানুষগুলোকে ধরে বিশ বা ত্রিশজনের একটা দল বানিয়ে কাছের থানায় জমা দিয়ে যায় কোনও রিপোর্ট ছাড়াই!’
‘এবার বলুন থানার অফিসার কী করতে পারেন? হাজারটা কাজ সামলে তার কি উপায় থাকে এদের নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করার, আলাদা করে কথা বলার? তার কি অবকাঠামো আছে এদের আদালতে নিয়ে হোমে পাঠানোর নির্দেশ বের করার? আর সরকারি হোম থেকেও তো পুলিশকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়।’
‘ফলে প্রায় বাধ্য হয়েই পুলিশ তখন এদের বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা দিয়ে দেয়, আর এদের জেলে পচতে হয়।’- বলছিলেন শর্বরী ভট্টাচার্য।
অথচ সার্ক সম্মেলনে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুসারে পাচার হওয়া নারী-শিশুদের এভাবে হেনস্থা হওয়ার কথাই নয়। কিরীটি রায় বলছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের স্পষ্ট নির্দেশ থাকলেও পশ্চিমবঙ্গেই কিন্তু উদাসীনতা সবচেয়ে বেশি। তার কথায়, ‘এ রাজ্যে সরকারি পদাধিকারীরা - আদালত হোক বা পুলিশ, তারা এই নির্দেশের কথা হয় জানতে চাইছেন না, বা জানলেও মানতে চাইছেন না। ফলে সব কিছু আগের মতোই চলছে এখানে।’
তার কথা প্রায় অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়ে স্বরূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলছিলেন, এমন কোনও নির্দেশ তারা খুঁজেই পাননি। ‘আমি নেটে গিয়ে মিনিস্ট্রির সাইট ঘেঁটে দেখেছি - যেখানে ফরেনার্সদের নিয়ে বলা আছে সেখানেও খুঁজেছি - মানবাধিকারের লোকজন যেটা বলছেন ওখানে ওরকম কিন্তু কিছু পাইনি’, বলছিলেন ওই কর্মকর্তা।
শুধু তাই নয়, এই বাংলাদেশী মহিলাদের ভিকটিম হিসেবেও মানতে আপত্তি আছে পুলিশ কর্তৃপক্ষের।
‘আঠারোর ওপর যাদের বয়স, যারা জেনেবুঝে একটা দেশের সীমান্ত পেরোচ্ছে, তাদের কীভাবে ভিক্টিম বলব বলুন তো? বাচ্চা ছেলে তো নয় - এরা প্রাপ্তবয়স্ক, জেনেবুঝে একটা অন্যায় করছে। কীসের ভিক্টিম?’ বলছিলেন স্বরূপনগর থানার কর্মকর্তা।
ফলে পশ্চিমবঙ্গের জেলে কেন আজও এমন শত শত বাংলাদেশী নারী ও শিশু অকারণে জেলে কাটাচ্ছেন - তা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।