Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুন্দরবনে ৩ সপ্তায় তিন দফা অগ্নিকান্ড

প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শরণখোলা ও মংলা সংবাদদাতা : পূর্ব সুন্দরবনে একের পর এক ঘটেইে চলেছে অগ্নিকান্ডের ঘটনা। মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে গতকাল সোমবার সকালে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের সেই পঁচা কোরালিয়ার বিলে আবার আগুন লেগে প্রায় এক একর বনভূমির গাছপালা পুড়ে গেছে। বনবিভাগ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও শত শত এলাকাবাসী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন। অগ্নিকা-ের ঘটনায় এদিন বিকেলে উত্তর রাজাপুর গ্রামের মনির হোসেন (৩০) নামের একজনকে আটক করেছে শরণখোলা থানা পুলিশ।
গত ১৩ এপ্রিলের অগ্নিকা-ের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিরা প্রতিশোধ নিতে এ অগ্নিকা- ঘটিয়েছে বলে বনবিভাগ ও গ্রামবাসী অভিযোগ করেছে। এনিয়ে গত ২১ দিনে ওই একই এলাকায় তিন দফা অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটলো। এর আগে গত ২৭ মার্চ বনের একই এবছরের প্রথম অগ্নিকা- সংঘটিত হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বনের বিভিন্ন পয়েন্টে থেকে থেকে আগুন জ্বলছে। অগ্নিকা-ের এলাকায় জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত বলা গাছ ও লতাগুল্ম রয়েছে। সকাল ৯টা থেকে বনকর্মী, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির খানের নেতৃত্বে প্রায় দুই শতাধিক গ্রামবাসী বালতি, কলস নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দুরে ভোলা নদীতে পাইপ বসানো হয়েছে। মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলার ফায়ার সার্ভিসের ২০ সদস্যের একটি দল আগুন নিয়ন্ত্রেনে আনার চেষ্টা করছেন। ঘটনাস্থলে পূর্ব বনবিভাগের ডিএফও মো. সাইদুল ইসলাম, ফায়ার সার্ভিসের জেলা কর্মকর্তা মো. মানিকুজ্জামান ও চাঁদপাই রেঞ্জের এসিএফ মো. বেলায়েত হোসেন উপস্থিত রয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেন, শরণখোলা উপজেলার উত্তর রাজাপুর এলাকার শাহজাহান শিকারীর নেতৃত্বে একটি মৎস্য শিকারি চক্র প্রতিবছর বনে আগুন লাগিয়ে থাকে। শুষ্ক মৌসুমে তারা আগুন লাগিয়ে বন পরিষ্কার করে মাছের বিল তৈরী করে। বর্ষা এলেই শুরু হয় ওই চক্রের মাছ ধরার উৎসব। কারেন্ট জাল পেতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার করা হয়।
এসিএফ বেলায়েত হোসেন জানান, সকাল ৮টার দিকে তারা অগ্নিকা-ের খবর পান। তাৎক্ষণিকভাবে তারা স্থানীয়দেরকে নিয়ে বনে প্রবেশ করেন। পরবর্তীতে দুই উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুনের ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রনে আনে। গত ১৩ এপ্রিলের অগ্নিকা-ের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিরা প্রতিশোধ নিতে এ অগ্নিকা- ঘটিয়েছে। ওই ঘটনায় শাহজাহান হাওলাদার ওরফে শাহজাহান শিকারীকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নামে বিভাগীয় বন মামলা দায়ের করা হয়।
বারবার আগুন লাগায় বনের ধানসাগর স্টেশন এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ অবিহিত করে ওই এলাকায় টহলের জন্য পাঁচটি ‘ফায়ার ওয়াচার’ টিম গঠন করেছে বন বিভাগ। তারা এ ধরনের নাশকতা রোধে লোকালয় সংলগ্ন বন এলাকায় সার্বক্ষণিক টহল দেবে।
এদিকে আগুন লাগার ঘটনায় চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) বেলায়েত হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অপর দুই সদস্য হলেন, সুন্দরবনের চাঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) গাজী মতিয়ার রহমান ও ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) সুলতান মাহামুদ টিটু। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে আগুন দেওয়া ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সুন্দরবনে ৩ সপ্তায় তিন দফা অগ্নিকান্ড
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ